জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দের ৯ই ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক বিশেষ সমাবর্তন উৎসবে কবিকে সন্মান সূচক ডি. লিট্ উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ জানুয়ারী বঙ্গভবনে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক উক্ত ডিগ্রী প্রধান করা হয়।
উল্লেখ্য যে, কবির অসুস্থতার করনে বেশ কয়েকবার তারিখ পরিবর্তন করতে হয়েছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সে সময় উপাচার্য ছিলেন ‘আবদুল মতীন চৌধুরী‘। কবির সমাবর্তন উৎসবে উপাচার্য ‘আবদুল মতীন চৌধুরী‘ যে গুরুত্ববহ মানপত্রটি পাঠ করেছেন তা সকলের সমীপে নিবেদন করছি।
মানপত্র :
দেশকালের জরা-শোক অবক্ষয়-অন্ধকারকে নীলকন্ঠের মতন ধারণ করে প্রজ্জলন্ত আকাক্ষার, আনন্দের, সংগ্রামের আরেঅকিত চেতনাকে যাঁরা বিশ্বলোকে পৌঁছে দিতে সক্ষম, তাঁরাই মহৎ। তেমনি এক মহৎ প্রতিভা আপনি, কাজী নজরুল ইসলাম। বিট্রিশ সাম্রাজ্যবাদী শাসন ও শোষণ-নিয়ন্ত্রিত বাংলার অসম্পূর্ণ পুনর্জাগরনের আহত সুফল (Sic) বাঙালী মধ্যবিত্ত শ্রেণী যখন নষ্ট ও স্বনে মজ্জমান, তাদের চেতনা-স্রোত যখন অন্ধকারবৃত্তে আবর্তিত, বাংলা সাহিত্যে তখন আপনার আবির্ভাব প্রমিথিউসের মতো।
আপনার অত্যুজ্জল আবির্ভাব বাংলা সাহিত্যের প্রাণে ও শরীরে সঞ্চার করেছিল বিপুল তারুণ্যের ঐশ্বর্য, যোগের আবেগ, গতির উচ্ছ্বাস, স্বাস্থ্যবান কল্পনার উদ্দামতা। আপনি কবি এবং আপনার কবিপ্রতিভার প্রাণশক্তি বাঙালি জীবনের বৃহত্তর ঐতিহ্যিক ঐক্যে ছিল প্রতিষ্টিত। সে কারনেই আপনার সৃষ্টি নিপীড়িত গনমানুষের আকাঙক্ষার, সম্ভাবনার, প্রতিবাদের, বিদ্রোহের ব্যতীক্রমী উচ্চারণ। আপনার সাহিত্যকর্ম সত্য-সুন্দর আর মানবতার উচ্চকন্ঠ-শিল্পরূপ। আপনি ছিলেন আপোষহীন সত্যসন্ধ কবি। বিট্রিশের রাজরোষ, কারাগার আপনাকে বন্ধী করেছে, কিন্তু অশুতোভয় আপনি দ্বিগুন আনন্দে প্রজ্বলিত হয়েছেন সত্যের সপক্ষে।

আপনি সর্বহারার সাম্যবাদী কবি, কল্যান আর প্রেম সাধনার কবি। তাই আজ আপনি জনগন প্রিয় কবি এবং আপনিই সমকাল ও শিল্পরীতির মাঝে ঘটিয়েছেন বিস্ময়কর এশান্ত সমন্বয়। কেবলমাত্র জীবনের বহিরঙ্গ সংলাপে নয়, অন্তরঙ্গ অস্তিত্বে আপনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক। মানুষের ধর্মে, আত্নশক্তির আন্তর্জাতিকতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কবিতায় – প্রবন্ধে-সঙ্গীতে আপনি তরুণ সমাজকে মানবতার উদার আদর্শে প্রাণিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বাঙালি জাতির সামবপ্রদায়িক সঙ্কটে আপনার লেখনি ছিল সৃষ্টিশীল, ঐক্যবদ্ধ আত্নশক্তির উদ্বোধনে নিরলস। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে আপনিই একমাত্র কবি-প্রতিভা, যিনি ঐতিহ্য সন্ধানে এরবং নির্মাণে ছিলেন স্বছন্দ, নির্দ্বন্ধ। হিন্দু ও মুসলমান, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় ঐতিহ্যকেই আপনি আপনার স্বয়ীও শাণিত চেুনার শব্দরূপে ব্যবহার করেছেন।
আপনার জীবনসম্পৃত্ত ঐতিহ্যবোধ, দর্ম-কথার সীমাবদ্ধতা থেকে ঐতিহ্যকে মুক্তি দিয়েছে। আপনি বাঙালি ঐহিত্যের পুনঃনির্মাতা, নব-ভাষ্যকার। আপনি ছিলেন শব্দের ধ্বনিগত ব্যবহারের বিস্ময়কর কারুশিল্পী গ্রন্থবদ্ধ এবং অভিজাত শব্দ-শৃঙ্ক্ষলিত সীমানাকে আপনি প্রসারিত করেছেন মৌলিক শব্দ-সম্ভারের এলাকায়, কখনো বা বিদেশী ভাষার সীমানায়। আপনার কবিত্ব প্রতিভার প্রবল আবেগে বিচিত্র-উৎসের শব্দাবলি ব্যঞ্জনায় হয়েছে পুষ্পিত সঙ্গীতজগতে আপনার অবদান অুুলনীয়, বিচিত্রধর্মী এবং স্বতন্ত্র। আপনার দেশাত্ববোধক সঙ্গীত সর্বকালের বাঙালিকে করবে উশুীপিত, উদ্বোধিত। আপনি কেবল বিপুল সংখ্যক গানের রচয়িতাই নন, সুরের সৃজনীশক্তিতে আপনি সঙ্গীত-জগতের নতুন পথনির্দেশক।
আজ আপনি বাংলাদেশের বিচিত্রমুখী সঙ্গীতের অনতিক্রমনীয় নিরিক্ষাধর্মী সার্থক সুরকার। আমাদের দুভার্গ্য, দীর্ঘ বত্রিশ বছর আপনি স্তদ্ধ। আপনার সাহসী অভিযাত্রী-মানসের সৃষ্টি ঐহিত্য থেকে আমরা বঞ্চিত। আপনার দু-দশকের সৃষ্টিসম্ভারের বৈচিত্র্য, বৈশিষ্ট এবং অভিনবত্বের উল্টরাধিকারের সৌভাগ্যে চিরকৃতজ্ঞ বাঙালি জাতি নিয়ত প্রার্থনা করে যে, আপনি আবার সুস্থ হয়ে উঠুন। আজ আপনাকে সন্মান জানাবার সুযোগ পেয়ে আমরা নিজেদের ধন্য মনে করছি। সমাপ্ত।
গোপালগঞ্জ জেলা সদরে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান হাজী লালমিয়া সিটি কলেজের কৃষিশিক্ষা বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. প্রণয় বালা।
জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৩ এর শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক (কলেজ পর্যায়) নির্বাচনে গোপালগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। ৫ম বারের মত নির্বাচিত হলেন তিনি।
ড. প্রণয় ২০১৭, ২০১৮, ২০২২ সালের জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে ও জেলার শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক (কলেজ পর্যায়) নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়াও ২০০৫ সালে কৃতি শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
ড. প্রণয় বালার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১০ টি ও দেশী বিদেশী জার্নালে তার ৩৬ টি গবেষণা পেপার প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি সকলের দোয়া প্রার্থী।
মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এবার এসএসসিতে গড় পাশের পাসের হার ৮৭ দশমিক ৪৪। মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৮২ দশমিক ২২।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চামেলী হলে ফলের অনুলিপি এবং পরিসংখ্যান প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করা হয়।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। চলে ১ অক্টোবর পর্যন্ত। এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ জন। এর মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭১১ জন পরীক্ষার্থী ছিল।
এছাড়া মাদরাসা বোর্ডের ২ লাখ ৬৮ হাজার ৪৯৫ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬৬২ জন পরীক্ষার্থী ছিল।
এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার ফল ২৮ নভেম্বর প্রকাশ হবে।
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি তপন কুমার সরকার আজ সোমবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। সাধারণত পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হয়।
এ বছর নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ২০ লাখের বেশি। ৩ হাজার ৭৯০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে শুধু সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর অধীনে এসএসসি পরীক্ষার্থী প্রায় ১৬ লাখ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে ২০১৯ সালের ডিনস অ্যাওয়ার্ডস (গোল্ড মেডেল, ক্রেস্ট এবং সার্টিফিকেট) পেলেন কৃতি শিক্ষার্থী ফারশিদ রেজা (সাবাব)।
আজ ২৬ অক্টোবর ২০২২ বুধবার সকাল ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি, প্রো- ভাউস চ্যান্সেলর (শিক্ষা), প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) এবং ট্রেজারার বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

উক্ত অনুষ্ঠানে ফারশিদ রেজার (সাবাব)এর পক্ষে ২০১৯ সালের ডিন’স অ্যাওয়ার্ডস (গোল্ড মেডেল, ক্রেস্ট এবং সার্টিফিকেট) গ্রহণ করেন তাঁর পিতা রেজা মতিন (সাংবাদিক ও সংগীত শিল্পী) এবং মা রুমানা জামান (সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা)।
ছেলের এ অর্জনে মহান আল্লাহ পাকের দরবারে শুকরিয়া আদায় করেন তাঁর পিতা রেজা মতিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। একইসাথে ফারশিদ রেজা (সাবাব) এর জন্য সবার দোয়া কামনা করেন রেজা মতিন।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ার বিভাগে অনার্স-মাস্টার্স ফাস্ট ক্লাস পাওয়া ফারশিদ রেজা (সাবাব) বর্তমানে আমেরিকার (USA) পেনসেলভ্যানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ফেলোশিপ সহ Full scholarship নিয়ে নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এ ( PHD) পিএইচডি করছে।
ডা. অসিত মজুমদার: আমাদের ছাত্রছাত্রীরা যথেষ্ট মেধাবী। তাদের সঠিক নম্বর দেওয়া হোক। তাতে মেধা বিকাশের পথ আরো সহজতর হবে। ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে। এই ভাব সম্প্রসারণ আমরা কম বেশী সকলেই পড়েছি। প্রতিটি শিশুরই আছে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সম্ভবনা। কিন্তু বাস্তবে সেটা কি হয়? না হলে হয় না কেন? এ দায় কার!
প্রতিটি শিশুই নিয়মমাফিক স্কুলে যায়, বই পড়ে কিন্তু সবাই কি পাস করে? পাস না করলে সে দায়ভারটা আসলেই কার? শিশু স্কুলে গেল ঠিকমত, পরীক্ষার হলে ধৈর্য নিয়ে সময় ধরে বসে রইল। খাতায় লিখল। সেই লেখা পড়াও সম্ভব হল। ন্যূনতম এতটুকু হলে একজন শিশু শতকরা কত নম্বর পাবার কাজ করল? কেউ কেউ বলতে পারেন ওর কোন মেধা নাই। সে কিভাবে পাস করবে? দেখি মেধা নিয়ে গুণীজনেরা কি বলছেন। মেধা হচ্ছে একটা বিশেষ্য পদ যার অর্থ বুদ্ধি, ধীশক্তি, বোধশক্তি বা স্মৃতিশক্তি। মেধা কিভাবে অর্জন করা যায়? খুব কঠিন প্রশ্ন কিন্তু সহজ উত্তর।
মারনুস ভারোই বলেছেন “প্রত্যেক মানুষই কোনো কোনো মেধা নিয়ে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে। পার্থক্য হলো এই যে কেউ কেউ তার এই মেধার যত্ন করে আর বাকিরা তা করতে পারে না।” এদিকে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও রকেট বিজ্ঞানী এ.পি. জে.আব্দুল কালাম এর একটি উক্তিতে দেখা যায় তিনি বলেছেন, “ছাত্রদের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যে বৈশিষ্ট্যটা থাকা দরকার তা হলো প্রশ্ন করার ক্ষমতা, তাদের প্রশ্ন করতে দিন।“ তার মানে হল মেধাকে যত্ন করতে হয় আর ছাত্রদের প্রশ্ন করার সক্ষমতা থাকতে হয়। আসুন আমরা শৈশব হতেই মেধার যত্ন নিতে শিখি। মেধা আসলে কিছু নয়। মেধা হল সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত বুদ্ধি ও বিবেচনাবোধকে নিয়মিত চর্চা করা এবং পাশাপাশি প্রচুর পরিশ্রম করে সেটাকে প্রতিনিয়ত শাণিত করা। সুতরাং দেখা যায় কাউকে মেধাবী বানানোর দায়িত্বটা আসলে শিক্ষক, গোটা সমাজ, অভিভাবকসহ আমাদের সকলের।
আমরা ধরে নিতে পারি যে নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থেকে পরীক্ষার হলে ধৈর্য ধরে নির্ধারিত সময় বসেছিল সে শতকরা ২০ নম্বর পাবার কাজটি ইতিমধ্যেই করে ফেলেছে। যার লেখা শব্দগুলো আমাদের সম্মানিত শিক্ষকগণ পড়তে পেরেছেন তাকে আরো ৫% নম্বর দেয়া যায়। সুতরাং একজন ছাত্র বা ছাত্রী পরীক্ষার হলে পঠিতব্য লেখা লিখতে পারলে তাকে ২৫% নম্বর দেয়া যেতে পারে। এই ভাবে ভিত্তি করে বাকী নম্বরগুলো প্রদান করা যেতে পারে। ছাত্রদের নম্বর স্কোরিং এর ক্ষেত্রে নতুন করে ভাবতে হবে। বিশ্ব প্রতিযোগিতায় আমাদের ছাত্রছাত্রীরা পিছিয়ে থাকবে কেন?
একজন ছাত্র বা ছাত্রী যখন দেখল সে অনেক পড়েছে কিন্ত আশানুরূপ অনেক কম নম্বর পেয়েছে তখন সে মানসিকভাবে আঘাত পেতে পারে। পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে। নিজের উপর আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলতে পারে। এমনকি ডিপ্রেশনেও যেতে পারে। ছাত্র বা ছাত্রীর ভবিষ্যৎ নষ্ট করার এ দায় কার? আমরা কেউই কারো উপর এ দায় দিতে চাই না। আমরা চাই ছাত্র বা ছাত্রীটি তার মেধার, শ্রমের যথাযথ মূল্যায়ন পাক। এতে সে আরো পরিশ্রমী হয়ে উঠবে। তার আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে বহুগুণ। মেধা হবে আরো শাণিত। গড়ে উঠতে পারে একটা মেধাবী সমাজ।
মনে আছে পঞ্চম শ্রেণীতে বৃত্তি লাভ করা আমি যখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ি তখন প্রথম সাময়িক পরীক্ষার খাতায় এত কম নম্বর পেলাম যে লজ্জায় খাতা বাবা মাকে দেখাইনি। কিন্তু বিষয়টি আমার বিদ্যোৎসাহী বাবার নজর এড়াতে পারেনি। বাবা ঠিকই টের পেয়ে গেছেন এবং আমার লুকানো খাতাগুলো নিজে হস্তগত করলেন। আমি ভেবেছি বাবা আমাকে বকা দিবেন কিন্তু তা না করে খাতাগুলো নিয়ে সোজা স্কুলের শিক্ষকের কাছে গেলেন। জানতে চাইলেন খাতায় এত কম নম্বর কেন দেয়া হল? পরবর্তীতে আর সেসব সমস্যা আর ছিল না। দিন দিন আমি ভালো ছাত্র হিসেবে আরো বেশী পরিচিতি পেতে শুরু করলাম। পরবর্তীতে আমি শিক্ষাস্তরের সকল পর্যায়ে বৃত্তি লাভ করার সৌভাগ্য অর্জন করি।
আমি সম্মানিত শিক্ষকগণকে বলবো আপনারা ছাত্রছাত্রীদেরকে উদারভাবে নম্বর দিন। ছাত্রদের প্রশংসা করুন। তবে সেটা অবশ্যই চেক এণ্ড ব্যালেন্স মেনে চলতে হবে। আর ছাত্র ছাত্রীদের জন্য বলবো তোমরা যথেষ্ট মেধাবী। তোমরা তোমাদের মেধার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পিছপা হইও না। তোমরাই সেরা, তোমরা মেধাবী, তোমরা দক্ষ, তোমরাই আগামীর। সেটা তোমাদের কাজ দিয়ে প্রমাণ করতে হবে।
নোবেলজয়ী বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বভারতীতে বলেছেন, “বিদ্যা যে দেবে এবং বিদ্যা যে নেবে তাদের উভয়ের মাঝখানে যে সেতু সেই সেতুটি হচ্ছে ভক্তিস্নেহের সম্বন্ধ। সেই আত্মীয়তার সম্বন্ধ না থেকে যদি কেবল শুষ্ক কর্তব্য বা ব্যবসায়ের সম্বন্ধই থাকে তা হলে যারা পায় তারা হতভাগ্য, যারা দেয় তারাও হতভাগ্য।
কবিগুরু শিক্ষা নিয়ে আবার এও বলেছেন, “শিক্ষার সকলের চেয়ে বড়ো অঙ্গটা—বুঝাইয়া দেওয়া নহে, মনের মধ্যে ঘা দেওয়া।” তার মানে শিক্ষার লক্ষ্য হচ্ছে শুধু বই পড়ানো নয়। শিক্ষার কাজটা হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের মনে শিক্ষার আগুন জ্বালিয়ে দেয়া, রক্তে ঢেউ তোলা, ব্রেইনে তরঙ্গ প্রবাহ সৃষ্টি করা যাতে নিজ হতেই শিক্ষার তাগিদ অনুভব করতে পারে। হৃদয়ঙ্গম করতে পারে শিক্ষার উদ্দেশ্য।জ্ঞান অর্জনের পথটা কারো সাহায্য ছাড়াই নিজে নিজে খুঁজে নিতে পারে।
সৃজনশীল মানে নতুন নতুন সৃষ্টি করা বিশেষ করে আপনি যখন নতুন কিছু ভাববেন, নতুন কিছু দেখবেন, নতুন কিছু খাবেন, নতুন কিছু উপলব্ধি করবেন তখনই আপনার মেধা বৃদ্ধি পাবে। জ্ঞানার্জন মেধাবৃদ্ধির সর্বশ্রেষ্ঠ উপায়। যখন কেউ জ্ঞানার্জন করবে তখন সে নতুন শিখবে, নতুন জানবে, নতুন বুঝবে অর্থাৎ সবকিছুই নতুন। এতে করে আপনি আপনার মেধার উৎকর্ষ করবেন, আপনার বুদ্ধিবৃত্তি বাড়াবেন নতুন কিছু খেতে পারবেন। নতুন কিছু করতে পরবেন। এরকম নতুন সবকিছু করবেন। তাহলে আপনার মেধাবৃত্তি বাড়বে। তবে মনে রাখতে হবে “অসম্পূর্ণ শিক্ষায় আমাদের দৃষ্টি নষ্ট করে দেয়”।

আমি বহু শিশু, কিশোর-কিশোরী, যুব, ছাত্র-ছাত্রী, বহু শিক্ষক অভিভাবক অনেকের সঙ্গেই কথা বলেছি। আমি দেখেছি ব্যক্তিগতভাবে সবার মধ্যেই জ্ঞান অর্জনের প্রবল স্পৃহা বিদ্যমান। জ্ঞান অর্জনের প্রক্রিয়াটাকে যদি আমরা সার্বজনীন করতে পারি তবে আমাদের ছাত্রছাত্রীরা তাদের মেধার স্বাক্ষর রাখতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
ডা. অসিত মজুমদার
শিক্ষা গবেষক ও উপদেষ্টা
গ্লোবাল এডুকেশন এণ্ড এক্সপ্লোরার বাংলাদেশ
০১৭১২৮৯৪৮৩২
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সামিয়া রহমানের কাছে পাওনা ১১ লাখ ৪১ হাজার ২১৬ টাকা দাবি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসন।
আজ বুধবার (১০ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এমন দাবি করা হয়েছে। টাকা পরিশোধ না করলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
তবে এ চিঠিকে বানোয়াট আখ্যা দিয়ে হেনস্তা করতে এমন চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন সামিয়া রহমান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, সিন্ডিকেটের ২৬-০৪-২০২২ তারিখের সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, আপনার প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদসহ জমাকৃত টাকার পরিমাণ ১৬,৫৮,২১৬ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট আপনার দেনা ১১,৪১,৬০১ টাকা পরিশোধ করার জন্য আপনাকে অনুরোধ করা যাচ্ছে। আপনার নিকট বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওনা টাকা পরিশোধ না করলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে সামিয়া রহমান বলেন, আমার কাছে বিশ্ববিদ্যালয় কোনো টাকা পায় না বরং অর্জিত ছুটিতে থাকায় আমিই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে টাকা পাই। মামলায় হেরে আমাকে টাকা বুঝিয়ে না দিতে এবং প্রতিশোধ নিতে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। আর এই চিঠিতে ৩ আগস্টের স্বাক্ষর দেওয়া আছে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গতকাল আমাকে মেইল পাঠানো হয়েছে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে এটা একটা বানোয়াট চিঠি।
তিনি বলেন, আমাকে হেনস্তা করার জন্য, প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন তড়িঘড়ি করে এমন চিঠি বানিয়েছে। এর কোনো ভিত্তি নেই। ছুটির কাগজপত্র আমার কাছে আছে, ছুটিতে থাকলে কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয় টাকা পাবে। আমি আমার আইনজীবীর সাথে কথা বলছি। মামলা করব, আর এটাতেও বিশ্ববিদ্যালয় হারবে।
সামিয়া রহমান ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান। পরে তিনি সহকারী অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান। তবে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় তাকে এক ধাপ পদাবনতি দিয়ে সহকারী অধ্যাপক করা হয়। পরে ওই বছরের ৩১ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন সামিয়া রহমান।
এর আগে গত ৪ আগস্ট সামিয়া রহমানকে পদাবনতির সিন্ডিকেটের নেওয়া (প্রশাসনিক) সিদ্ধান্ত অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাকে সব ধরনের বিভাগীয় সুযোগ সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
হাইকোর্টের রায়ে জিতলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সামিয়া রহমান।
শিক্ষক সামিয়া রহমানের গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির দায়ে পদাবনিতর আদেশ অবৈধ বলে রায় ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি তাকে সব সুযোগ সুবিধাসহ পদ ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
সামিয়া রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এমএস আজিম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রায় শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালত জারি করা রুল অ্যাবসুলেট করে আজকে রায় দিয়েছেন। রায়ে তাকে সব সুযোগ-সুবিধা ফিরিয়ে দিতে বলেছেন আদালত।’
এর আগে সামিয়া রহমানকে পদাবনতি দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। ওই রুল যথাযথ ঘোষণা করে বৃহস্পতিবার রায় দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
গত বছরের ৩১ আগস্ট পদাবনতি দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন সামিয়া রহমান।
গবেষণা নিবন্ধে চৌর্যবৃত্তির শাস্তি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সামিয়া রহমানের পদাবনতি দেওয়া হয়। সহযোগী অধ্যাপক থেকে একধাপ নামিয়ে সহকারী অধ্যাপক করে দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট।
গত ২৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেটের সভায় ওই সিদ্ধান্ত হয়।
সেখানে বলা হয়, সামিয়ার পদাবনতির পাশাপাশি মারজানকে শিক্ষা ছুটি শেষে চাকরিতে যোগদানের পর দুই বছর একই পদে থাকতে হবে।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সামিয়া রহমান এবং অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানের যৌথভাবে লেখা ‘আ নিউ ডাইমেনশন অব কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার: এ কেইস স্ট্যাডি অব দ্য কালচারাল ইমপেরিয়ালিজম’ শিরোনামের আট পৃষ্ঠার একটি গবেষণা প্রবন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ’ জার্নালে প্রকাশিত হয়।
সেটি ১৯৮২ সালের শিকাগো ইউনিভার্সিটির জার্নাল ‘ক্রিটিক্যাল ইনকোয়ারি’তে প্রকাশিত ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর ‘দ্য সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার’ নামের একটি নিবন্ধ থেকে প্রায় পাঁচ পৃষ্ঠার ‘হুবহু নকল’ বলে অভিযোগ ওঠে।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে এক লিখিত অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ওই অভিযোগ জানিয়েছিল ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস।
শুধু মিশেল ফুকোই নন, বুদ্ধিজীবী এডওয়ার্ড সাঈদের ‘কালচার অ্যান্ড ইমপেরিয়ালিজম’ বই থেকেও সামিয়া ‘নকল করেন’ বলে অভিযোগ ওঠে।
ইংরেজি দৈনিক পাকিস্তান অবজারভার এর সাবেক সাব এডিটর জনাব মুসা খান এর ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকও ছিলেন। তিনি বাংলা ও বাংলা সাহিত্য পড়াতেন। খান সাহেব ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে জড়িত ছিলেন। জনাব মুসা খান জাতীয় কবি নজরুল নিরাময় সমিতি'র সদস্য ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন নজরুল প্রেমিক ও অনুসারী...তিনি কবি নজরুলকে ঢাকায় দেখেছেন। তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় তার পরিবার সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আবারও দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আগামীকাল শনিবার থেকে আগামী দুই সপ্তাহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এই ঘোষণা দেন।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলমসহ স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনান্য কর্মকর্তারা।
করোনা পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ১০০ জনের বেশি লোকজন অংশ নিতে পারবে না।
মেলা ও পর্যটন কেন্দ্রে গেলে টিকাসনদ দেখাতে হবে বলেও জানান মন্ত্রী।