গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আপত্তিকর ভিডিও তুলে সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে শাশুড়ি ও শ্যালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে জামাতা রুহুল আমিনকে (২৬) গ্রেফতার করেছে র্যাব।
গত সোমবার বিকালে পৃথক দুটি মামলায় তাকে থানায় সোপর্দ করলে পুলিশ গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেয়। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রুহুল আমিন উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের সমসপাড়া গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে। গত রবিবার রাতে অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলার কাটাখালি বালুয়া বাজারের মুক্তিযোদ্ধা ময়েজউদ্দিন সুপার মার্কেট থেকে তাকে আটক করে র্যাব। তার কাছ থেকে অশ্লীল ভিডিও ও স্থিরচিত্রসহ মোবাইল ফোনসেটটি জব্দ করা হয়।
গত সোমবার নির্যাতিতা মা-মেয়ে বাদী হয়ে রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, রুহুল আমিন উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নে তার শ্বশুরবাড়িতে প্রায়ই যাতায়াত করতেন। এক পর্যায়ে শাশুড়ির অজান্তে তার ব্যক্তিগত মুহূর্তের কিছু দৃশ্য গোপনে মোবাইল ফোনে ভিডিও করেন। পরে তা শাশুড়িকে দেখিয়ে সেগুলো ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে গত ১৩ মার্চ থেকে গত ৭ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন সময় তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন।
এছাড়া গত বছর গাইবান্ধা শহরে নিজ শ্যালিকার বাড়িতে গিয়ে তাকে ধর্ষণ চেষ্টার দৃশ্য ভিডিও করেন রুহুল। পরে শ্যালিকাকে কৌশলে উপজেলার সমসপাড়ায় তার ফুফাতো বোনের বাড়িতে ডেকে এনে ফেসবুকে সেই ভিডিও ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আরিফুল ইসলাম বলেন, আসামি রুহুল আমিনকে পৃথক দুই মামলায় আদালতে হাজিরের পর পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়। পরে বিচারকের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা- দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার উঠতির মধ্যে চলমান লকডাউন শিথিল করার সরকারি সিদ্ধান্তে উদ্বেগ জানিয়েছে করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। কমিটির আহ্বান লকডাউন শিথিল না করে আরও ১৪ দিন বাড়ানো হোক।
লকডাউন বাড়ানোর সুপারিশ জানিয়ে বুধবার (১৪ জুলাই) রাতে গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠিয়েছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে শুরু করেছে। এ অবস্থায় লকডাউন শিথিল করার সরকারি সিদ্ধান্ত গভীর উদ্বেগের।
জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ৪১তম অনলাইন সভায় কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে বিস্তারিত আলোচনা শেষে সুপারিশ প্রস্তাব করা হয়।
এতে বলা হয়, সারাদেশে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ ও মৃত্যুহার সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। এ অবস্থায় লকডাউন শিথিল করার সরকারি সিদ্ধান্তে কমিটি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি চলমান কঠোর লকডাউন আরও ১৪ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করছে।
এছাড়া লকডাউনের অংশ হিসেবে কমিটি কোরবানির হাট বন্ধ রাখার প্রস্তাব করে, প্রয়োজনে ডিজিটাল হাট পরিচালনার ব্যবস্থাও করা যেতে পারে। তবে সরকার লকডাউন শিথিল করে সীমিত পরিসরে কোরবানির হাট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিলে, সেক্ষেত্রে কমিটি প্রদত্ত বিধিনিষেধসমূহ প্রয়োগের বিষয়ে সুপারিশ করা হয়।
উল্লেখ্য, আগামী ২১ জুলাই বুধবার দেশে মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে
পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে গণপরিবহন চলাচল, দোকান-শপিংমল খুলে দেয়াসহ কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দিয়ে চলমান বিধিনিষেধ শিথিল করেছে সরকার।
১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করে গত মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত ফের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ‘নিরাপদ ডটকম’ নামের একটি ই-কমার্স সাইটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে (সিইও) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম শাহরিয়ার খান (৪১)। আদালতের অনুমতি নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। গত রোববার রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ জানিয়েছে। এই বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম আজ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, ইশতিয়াক আহমেদ নামের একজন গ্রাহক প্রতারণার শিকার হয়ে সম্প্রতি নিরাপদ ডটকমের সিইওর বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আসামি শাহরিয়ার খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম বলেন, শাহরিয়ার খান গত বছরের আগস্টে নিরাপদ ডটকম নামের একটি ই- কমার্স সাইট খুলে বিভিন্ন চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাধারণ গ্রাহকদের আকৃষ্ট করেন। ৫০ শতাংশ মূল্যছাড়ে মুঠোফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফ্রিজ, ওভেনসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্য ৩০ দিনের মধ্যে হোম ডেলিভারি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। উপকমিশনার শরীফুল জানান, নিরাপদ ডটকমের গ্রাহকসংখ্যা প্রায় চার হাজার। এক মাসের মধ্যে তারা প্রায় ১২ হাজার অর্ডার পায়। এর থেকে সাত থেকে আট কোটি টাকা শাহরিয়ার খানের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়। যাঁরা পণ্য অর্ডার করেন, তাঁদের বেশির ভাগই ছাত্র ও অল্প বেতনের চাকরিজীবী। প্রাথমিক অবস্থায় নিরাপদ ডটকম কিছু পণ্য ডেলিভারি করে সেই গ্রাহকদের দিয়ে তাদের ফেসবুক পেজে ইতিবাচক রিভিউ পোস্ট করিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন করে। পরবর্তীকালে অধিক সংখ্যায় অর্ডার ও অগ্রিম অর্থ পেলে, তারা পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা শুরু করে। অনেক দিন পেরিয়ে গেলে গ্রাহকেরা যখন বুঝতে পারেন, তাঁরা প্রতারণার শিকার হয়েছেন, তখন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে প্রতিকার দাবি করে বক্তব্য দিতে থাকেন। যাঁরা চাপ প্রয়োগ করতে পেরেছেন, তাঁদের টাকা ফেরতের কথা বলে চেক দেওয়া হয়। তবে ওই সব চেক দিয়ে টাকা তোলা সম্ভব হয়নি। বারবার চেক ডিজঅনার হওয়ার অভিযোগ আসতে থাকলে শাহরিয়ার খান গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০১৮ সালের ১ জুলাই থেকে গত ৩০ জুন পর্যন্ত নিরাপদ ডটকম নামের ই-কমার্স ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে ১১২টি অভিযোগ আসে। এর মধ্যে ৬৩টি অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়। ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ বলছে, বাংলাদেশে দুই হাজারের বেশি ওয়েবসাইটভিত্তিক এবং প্রায় এক লাখের মতো ফেসবুকভিত্তিক ই-কমার্স সাইট চালু রয়েছে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের জারি করা বিধিনিষেধ অমান্য করে অকারণে ঘর থেকে বের হওয়ায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়া মামলা অনেক যানবাহনকে মামলা দিয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে খবরটি নিশ্চিত করা হয়েছে। যাঁরা বের হয়েছেন তারা কোনো যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারেননি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার মৃত্যুঞ্জয় দে সজল জানান, তেজগাঁও থানায় ৩০ জন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় ৮ জন, মোহাম্মদপুর থানায় ২৬ জন, আদাবর থানায় ১৮ জন, শেরেবাংলা নগর থানায় ৪৩ জন ও হাতিরঝিল থানায় ৪২ জনকে আটক করা হয়। অকারণে বাসা থেকে বের হওয়ায় তাঁদের আটক করা হয়েছে।
ঢাকা- করোনাভাইরাসজনিত রোগ (কোভিড-১৯) এর বিস্তার রোধে ১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই (বুধবার) মধ্যরাত পর্যন্ত মানুষের সার্বিক কার্যাবলী ও চলাচলে বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার।
এসময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু রাখতে পারবে শিল্প-কারখানা। খোলা থাকবে পোশাক কারখানাও। এসময় হেঁটে, রিকশায় বা সাইকেল চালিয়ে কারখানায় যেতে হবে শ্রমিকদের।
বুধবার (৩০ জুন) বিধিনিষেধ আরোপ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
গার্মেন্টস খোলা রাখার বিষয়ে পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-এর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, যেহেতু মুভমেন্ট পাস নেই, সেহেতু যেসব শ্রমিক কারখানার পাশে থাকবে কেবল তারাই কারখানা প্রবেশ করতে পারবে।
তিনি বলেন, পায়ে হেঁটে, রিকশা বা সাইকেল চালিয়ে কারখানায় আসা যাবে। মালিকদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। যেসব মালিক কারখানার আশপাশে থাকবে কেবল তারাই কারখানায় প্রবেশ করতে পারবে। দূর থেকে কোনও শ্রমিক বা মালিক কোনও কারখানায় যাওয়া-আসা করবে না। তবে দূর থেকে কেউ আসতে হলে তাকে রিকশা অথবা সাইকেল চালিয়ে অথবা হেঁটে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চাই। একই সঙ্গে আমরা কারখানা চালু রাখতে চাই। যেহেতু রাস্তায় যানবাহন চলবে না, সেহেতু সীমিত আকারে হোক আর পুরোপুরি হোক কারখানার আশপাশের শ্রমিকদের দিয়ে কারখানা চালু রাখতে হবে।
বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে দক্ষিণ কমলাপুরে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন পোশাক শ্রমিকরা।
সোমবার (২৮ জুন) দুপুরে দক্ষিণ কমলাপুর বিন্নি গার্মেন্টসের সামনের রাস্তার দু’ধারে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা।মতিঝিল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইয়াসির আরাফাত রাইজিংবিডিকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয় সেজন্য এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মালিকপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, দক্ষিণ কমলাপুর আইসিডি সংলগ্ন রাস্তার দু’ধারে ৪ থেকে ৫শ’ গার্মেন্টস শ্রমিক অবস্থান নিয়েছেন। রাস্তায় বসে বেতন-ভাতার দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। ব্যানার নিয়ে তারা মিছিল করছেন।

কোয়ালিটি কন্ট্রোলার আয়াত উদ্দিন বলেন, ‘করোনা চলছে। গত তিনমাস হলো শুধু বেতনই নয়, ওভারটাইমের টাকা পর্যন্ত মালিকপক্ষ দিচ্ছে না। আর বেতন ভাতা না পেলে আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে কিভাবে বাঁচবো?’

অপারেটর রাহেলা বলেন, ‘মালিকপক্ষ আজ দিচ্ছি, কাল দিচ্ছে বলে টাল বাহানা করছেন। বেতন-ভাতাদি নিয়ে মালিকপক্ষ এর আগেও তালবাহানা করেছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে দেশে ‘সাধারণ লকডাউন’ চলছে। আর আগামী ১ জুলাই থেকে এক সপ্তাহের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ তথা সর্বাত্মক লকডাউন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকের পর সোমবার (২৮ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
সচিব বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়া হবে। ২৯ জুন এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘সর্বাত্মক লকডাউনে কেউ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে পারবে না। সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। জরুরি পরিষেবা ছাড়া সরকারি, বেসরকারি অফিস, শপিংমল দোকান পাট, মার্কেট বন্ধ থাকবে। শিল্প কারখানা ও গার্মেন্টস খোলা রাখার বিষয়ে কাল সিদ্ধান্ত হবে।’
সর্বাত্মক লকডাউনে সরকার কঠোর থাকবে জানিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘করোনায় বিধিনিষেধ প্রতিপালনে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও সেনা টহল থাকবে। মাস্কপরাসহ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা হবে।’ এবার পুলিশের মুভমেন্ট পাস থাকছে না বলেও জানান তিনি।
এর আগে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় জাতীয় পরামর্শক কমিটির সুপারিশে ২৮ জুন থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করে সরকার।
দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় চলতি বছর প্রথমে ৫ এপ্রিল থেকে ৭ দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। পরে তা আরও ২ দিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়। পরে তা আরও ৮ দফা বাড়িয়ে ১৫ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। এর পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়েও বিভিন্ন এলাকায় কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়া হয়।
রাজধানীর মগবাজার ওয়ারলেস গেট এলাকায় বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে পাঁচজনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন ১০ জন। আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তিনজনের মৃত্যুর কথা জানায়। হাসপাতালে নেওয়ার পর অন্য দুজন মারা যান।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই বিস্ফোরণে দুটি বাসের যাত্রীরা হতাহত হয়েছেন। অন্তত ৪৮ জনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয় ১২ জনকে।
শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক পাথর শংকর পাল জানান, সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই ব্যক্তি মারা গেছেন। ভর্তি হওয়া আরও ১০ জনের অবস্থা গুরুতর। তাঁদের শরীর পোড়া ছাড়াও জখমের চিহ্ন রয়েছে।
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি- পরীমনির দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার ও তুহিন সিদ্দিকী অমির মুক্তির দাবিতে টাঙ্গাইলের বাসাইলে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। শনিবার (২৬ জুন) সকাল ১১টায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গুল্লাহ এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন বাসাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম, হাবলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম, স্থানীয় ইউপি সদস্য আকবর আলী, এলাকাবাসী হায়েত আলী, হাজেরা বেগম প্রমুখ। মানববন্ধনে বিভিন্ন এলাকার এক সহশ্রাধিক নারী পুরুষ অংশ নেয়।
বক্তারা বলেন, পরীমনির নতুন চিত্র নায়িকা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তারপরও তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক। এই টাকার উৎস কোথায়? তিনি অবৈধ ব্যবসা করেন। বাসাইলের গুল্যাহ গ্রামের অমি একজন ভাল মানুষ। সে ও তার বাবা সমাজ সেবক। অনেক মসজিদ মাদ্রাসার উন্নয়ন করেছেন।
এছাড়াও করোনাকালীন সময়ে হাজার হাজার মানুষকে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। অমি মানব পাচারের সাথে জড়িত নয়। তাকে এই মামলা থেকে প্রত্যাহার করে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় টাঙ্গাইল থেকে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ৯ জুন মধ্যরাতে সাভারে অবস্থিত ঢাকা বোট ক্লাবে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টা করা হয় বলে পরীমনি অভিযোগ করেন। ঘটনার চার দিন পর রোববার রাত ৮টার দিকে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে এবং রাত ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘটনা প্রকাশ করেন নায়িকা পরীমনি। পরদিন ১৪ জুন সকালে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন তিনি।
ওই দিন বিকেলে উত্তরা থেকে নাসির ও অমিসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। এরপর ডিবির গুলশান জোনাল টিমের এসআই মানিক কুমার সিকদার বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন।
ওই মামলায় ১৫ জুন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসি নাসির ও অমির সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
করোনা সংক্রমণ রোধে সোমবার থেকে দেশে ‘কঠোর লকডাউন’ পালন করা হবে।
এ সময় সব ধরনের সরকারি–বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী ছাড়া সব ধরনের গাড়ি চলাচলও বন্ধ থাকবে। শুধু অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসাসংক্রান্ত কাজে যানবাহন চলাচল করতে পারবে।
শুক্রবার রাতে সরকারের এক তথ্যবিবরণীতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ২৮ জুন সোমবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সারা দেশে কঠোর লকডাউন পালন করা হবে। এ সময় জরুরি কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে পারবেন না।
তবে পরে তথ্য অধিদপ্তরে যোগাযোগ করলে দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, সোমবার থেকে সাত দিনের জন্য এ লকডাউন দেওয়া হচ্ছে।
গণমাধ্যম এ বিধিনিষেধের আওতামুক্ত থাকবে বলে তথ্যবিবরণীতে জানানো হয়েছে।
তথ্যবিবরণীতে বলা হয়, কঠোর লকডাউনের বিষয়ে আরও বিস্তারিত তুলে ধরে শনিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
প্রথমে সাত দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। পরে তা আরও দুই দিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়। পরে তা আরও বাড়িয়ে ১৫ জুলাই পর্যন্ত করা হয়েছে। কিন্তু দেশে এখন সংক্রমণ পরিস্থিতি এপ্রিলের মতো ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে।
এবার করোনার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয় গত ঈদুল ফিতরের পরপরই। ভারত সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে রোগী দ্রুত বাড়তে থাকে। পরে তা আশপাশের জেলায়ও ছড়িয়ে পড়েছে। এক মাসের ব্যবধানে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা, মৃত্যু ও শনাক্তের হার কয়েক গুণ বেড়েছে।