সালমান শাহ ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। মাত্র তিন বছরের ক্যারিয়ারে ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। ঢাকাই সিনেমার অন্যতম সফল জুটি সালমান শাহ ও শাবনূর। সালমান শাহ’র অধিকাংশ সিনেমার নায়িকা শাবনূর। ২৭টির মধ্যে ১৪টিতেই একসঙ্গে দেখা গেছে তাদের।

বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) সালমান শাহর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার সঙ্গে ফ্রেমবন্দি তিনটি ছবি পোস্ট করেছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী শাবনূর। সালমান শাহর ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সামাজিকমাধ্যমে এ অভিনেত্রী লেখেন, ‘কোথায় হারিয়ে গেলে সালমান? তোমার স্মৃতিগুলো আজও আমায় কাঁদায়।’

সালমানের আত্মার শান্তি কামনা করে শাবনূর আরও লেখেন, ‘অমর নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুবার্ষিকী আজ (৬ সেপ্টেম্বর)। দীর্ঘ ২৭ বছর পর এখনো তাকে ভুলতে পারেনি চলচ্চিত্রাঙ্গনের মানুষ ও তার অনুরাগীরা। যেখানে আছো, ভালো থেকো স্বপ্নের নায়ক। তোমার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।’

মাত্র ২৫ বছর বয়সে মারা গেছেন সালমান—অমর এই নায়কের চলে যাওয়াটা কি স্বাভাবিক মৃত্যু, আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড তা আজও রহস্য।
তবে ক্ষণজন্মা এই নায়কের পরিবার মনে করে, এটি স্বাভাবিক কোনো মৃত্যু ছিল না। ‘হত্যা’ করা হয়েছে তাকে। এমন অভিযোগ এনে সালমানের মা নীলা চৌধুরী আইনের আশ্রয়ও নিয়েছেন। যা নিয়ে হয়েছে নানা তদন্ত। তবে মেলেনি অভিযোগের সত্যতা। প্রতিটি তদন্তেই সালমান শাহ’র আত্মহত্যার তথ্য উঠে এসেছে।
সংগীতশিল্পী-সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন ভারতের এক আদালত। দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে এই তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, গত ৯ আগস্ট মুর্শিদাবাদের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল মমতাজের। এর এক দিন আগে ৮ অগস্ট বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মমতাজের মামলার চার্জ গঠন করা হবে। সেই দিন মমতাজ উপস্থিত না হলে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে। এরপর মমতাজ তড়িঘড়ি করে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে একটি আবেদনপত্র আদালতে দাখিল করে জানান, ওই তারিখে তিনি কানাডায় একটি অনুষ্ঠানে থাকবেন। ফলে তাঁর পক্ষে আদালতে হাজিরা দেওয়া সম্ভব হবে না। মুর্শিদাবাদের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ওই আবেদন খারিজ করে দিয়ে মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেন।
সংবাদমাধ্যম বলছে, ভারতের মুর্শিদাবাদে ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশনের জন্য আয়োজক সংস্থার কর্মকর্তা শক্তিশঙ্কর বাগচীর সঙ্গে মমতাজ বেগমের লিখিত চুক্তি হয়। সেই চুক্তি মোতাবেক শক্তিশঙ্করের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি নিয়মিত অংশ নিতেন। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ১৪ লাখ টাকায় মুর্শিদাবাদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। তিনি অগ্রিম টাকাও গ্রহণ করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত উপস্থিত হতে পারেননি মমতাজ। এর পরেই শক্তিশঙ্কর চুক্তিভঙ্গ ও প্রতারণার অভিযোগ তুলে মুর্শিদাবাদের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এর ভিত্তিতে আদালত পরবর্তী সময়ে সমন জারি করেন। অভিযোগ রয়েছে, মমতাজ আদালতের নির্দেশ এড়িয়ে যান। এই মামলায় মমতাজের বিরুদ্ধে এর আগে তিনবার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল।
এরপর সংগীতশিল্পী মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেন।
আনন্দবাজার বলছে, কলকাতার উচ্চ আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেন। এবার বহরমপুর আদালতের নির্দেশ মোতাবেক আগামী ৮ সেপ্টেম্বর মমতাজকে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে। তবে মমতাজের আইনজীবী দেবাংশু সেনগুপ্ত জানান, তাঁর মক্কেল আদালতের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবেন।
২৭ বছর আগে ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার দিনটিতে বাংলা সিনেমার একটি ক্ষণস্থায়ী উজ্জ্বল অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে। সালমান শাহের পারিবারিক নাম শহীদ চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন। ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মা নীলা চৌধুরী।
মাত্র ২৫ বছর বয়সে মারা গেছেন সালমান—অমর এই নায়কের চলে যাওয়াটা কি স্বাভাবিক মৃত্যু, আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড তা আজও রহস্য।
তবে ক্ষণজন্মা এই নায়কের পরিবার মনে করে, এটি স্বাভাবিক কোনো মৃত্যু ছিল না। ‘হত্যা’ করা হয়েছে তাকে। এমন অভিযোগ এনে সালমানের মা নীলা চৌধুরী আইনের আশ্রয়ও নিয়েছেন। যা নিয়ে হয়েছে নানা তদন্ত। তবে মেলেনি অভিযোগের সত্যতা। প্রতিটি তদন্তেই সালমান শাহ’র আত্মহত্যার তথ্য উঠে এসেছে।

সংবাদমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে সালমান শাহ’র মা নীলা চৌধুরী জানান, সালমান শাহ সেসময় থাকতেন ঢাকার নিউ ইস্কাটন রোডের ইস্কাটন প্লাজার একটি ফ্ল্যাটে। সেদিন সকাল সাতটায় বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী ছেলে ইমনের সঙ্গে দেখা করতে ইস্কাটনের বাসায় গিয়ে তার দেখা না পেয়ে ফিরে আসেন।
নীলা চৌধুরীর বর্ণনা ছিল এ রকম, ‘ দারোয়ান বলেছে স্যার এখন তো ওপরে যেতে পারবেন না। কিছু প্রবলেম আছে। আগে ম্যাডামকে (সালমান শাহর স্ত্রীকে) জিজ্ঞেস করতে হবে। একপর্যায়ে উনি (সালমান শাহর বাবা) জোর করে ওপরে গেছেন। কলবেল দেওয়ার পর দরজা খুলল সামিরা (সালমান শাহর স্ত্রী)। উনি (সালমান শাহর বাবা) সামিরাকে বললেন, “ইমনের (সালমান শাহর ডাকনাম) সঙ্গে কাজ আছে, ইনকাম ট্যাক্সের সই করাতে হবে। ওকে ডাক।” তখন সামিরা বলল, “ও তো ঘুমে।” তখন উনি বললেন, “ঠিক আছে আমি বেডরুমে গিয়ে সই করিয়ে আনি।” কিন্তু যেতে দেয়নি। আমার হাজব্যান্ড ঘণ্টা দেড়েক বসে ছিল ওখানে।
বেলা ১১টার দিকে একটি ফোন আসে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরীর বাসায়। ওই টেলিফোনে বলা হলো, সালমান শাহকে দেখতে হলে তখনই যেতে হবে। টেলিফোন পেয়ে নীলা চৌধুরী দ্রুত ছেলে সালমান শাহর বাসার দিকে রওনা হয়েছিলেন। তবে সালমানের ইস্কাটনের বাসায় গিয়ে ছেলে সালমান শাহকে বিছানার ওপর দেখতে পান নীলা চৌধুরী। এ বিষয়ে তার বক্তব্য ছিল, ‘খাটের মধ্যে যেদিকে মাথা দেওয়ার কথা, সেদিকে পা। আর যেদিকে পা দেওয়ার কথা সেদিকে মাথা। পাশেই সামিরার (সালমান শাহর স্ত্রী) এক আত্মীয়ের একটি পারলার ছিল। সেই পারলারের কিছু মেয়ে ইমনের হাতে-পায়ে শর্ষের তেল দিচ্ছে। আমি তো ভাবছি ফিট হয়ে গেছে। আমি দেখলাম, আমার ছেলের হাত-পায়ের নখগুলো নীল। তখন আমি আমার হাজব্যান্ডকে বলেছি, আমার ছেলে তো মরে যাচ্ছে।’
ইস্কাটনের বাসা থেকে সালমান শাহকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানকার চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে বলা হয়, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন। তবে বিষয়টি এখনো বিচারাধীন। সালমানের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে না পারায় তার ভক্তদের মধ্যে তৈরি হয় নানা প্রশ্নের।