আজি শ্রেষ্ঠ লোকের প্রাণনাশে
দুষ্ট লোকের প্রাণ হাসে
মনের সুখে গান গায় অবশিষ্ট লোকে উল্লাসে।
প্রাণ যায় প্রাণপ্রিয়ার তরে
প্রাণ টেকে না আপন ঘরে
স্বপ্নে বিভোর কখন আবার
অমাবস্যায় চাঁদ হাসে।
পালের গরু পাল ছেড়ে ঐ দূরদেশে
নামাজ পড়ে মুচকি হাসে দরবেশে।
দেখবো এবার কোন সে মাঝির নাও ভাসে।
কাল ছিল যে সিংহাসনে
আজ বসতি বৃন্দাবনে
কাল ছিল যার হাজার হাজার
আজ সে দু’এক পাই গোনে,
কাল ছিল যে প্রিয়ায় বুকে
মুখ গুঁজেছে মহা সুখে
আজ খাটিয়ায় চললো শুয়ে
মহা শ্মশান,গোরস্থানে।
এবার মহামারীর খেলা
কখন যে কার বিদায়বেলা
কেউ জানে না কবে আবার ফুটবে ফুল,
কারো আবার ফুটবে না ফুল
নড়বে না কেউ মোটে একচুল
নড়েচড়ে আবার কারো ভাঙবে ভুল।
ঘোল খেয়ে ঐ বোল বোলে দ্যাখ্ সরকারে
মিথ্যাবাদী মুখ ঢেকেছে দরকারে।
বুঝবে শেষে রয়না মুকুট
মিথ্যার উপর ভর ক’রে।
আজি মহাবিশ্বের ঘরে ঘরে কারবালা
খুব সহজে মিটবে না রে গা’র জ্বালা।
নাফরমানের ফরমানে এই জীবন যায়
কাল বুঝে ঐ কাকের মাংস কাকে খায়।
জয় জীবনের আসবে ফিরে
ফিরলে মানুষ ধীরে ধীরে
নয়তো এবার যাবার পালা
মাটির নীচের আস্তানায়।
মহাযাত্রায় শামিল হবে এই আশায়
মহামানব কেঁদে কেঁদে বুক ভাসায়।
একলা জীবন জয় হবে না,মন মাঝি!
তোমার বিচার হবে নিজ কাজের কাজী!
বিশ্বসেরা স্বার্থপরে নামাজ পড়ে
খোদায় হাসায়।
মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান: বাংলা সাহিত্যের এক বিষ্ময় প্রতিভার নাম কাজী নজরুল ইসলাম |সঙ্গীত কবিতা, নাটক ও উপনাস্যের মতো সাহিত্যের প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে তাঁর ছিলো অবাধ বিচরণ | নিজেই লিখতেন গান, দিতেন সেইসব গানের সুর এবং সেইসাথে গাইতেন গানও | এছাড়াও পাশাপাশি সাংবাদিক হিসাবে ধরেছিলেন কলম এবং করেছিলেন নানা আন্দোলন রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের জন্য |
ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার, সাম্প্রদায়িকতা ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থানের কারণের তাঁকে “বিদ্রোহী কবি” হিসাবে আখ্যা দেওয়া হয় |
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুলের জন্ম হয় ২৪শে মে ১৮৯৯ সালে, বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার অন্তর্গত চুরুলিয়া গ্রামে | তাঁর বাবার নাম কাজী ফকির আহমদ এবং মায়ের নাম জাহেদা খাতুন | কবি ছিলেন তাদের ষষ্ঠতম সন্তান |
তাঁর বাবা ছিলেন আসানসোলের এক স্থানীয় মসজিদের ইমাম এবং মা ছিলেন একজন সাধারণ গৃহবধু | নজরুলের তিন ভাইয়ের মধ্যে কনিষ্ঠতম ছিলেন কাজী আলী হোসেন এবং দুই বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন কাজী সাহেবজান | ছোটবেলায় তাঁর ডাকনাম ছিলো “দুখু মিয়া” যা পরবর্তীকালে সাহিত্য জগতে তাঁর ছদ্মনাম হয়ে ওঠে |
তাঁর পারিবারিক অবস্থা প্রথম থেকেই তেমন একটা ভালো ছিলোনা | চরম দারিদ্রের মধ্যেই তাঁর বাল্য, কৈশর ও যৌবন বয়স কাটে |
কিন্তু সীমাহীন এই পারিবারিক দুঃখ-দূর্দশার মধ্যেও তিনি আজীবন বাংলা কাব্য ও সাহিত্যচর্চা করে গিয়েছিলেন | কোনো বাঁধাই তাঁকে কোনোদিনও দাবিয়ে রাখতে পারেনি |
তিনি তাঁর পড়াশোনা শুরু করেন গ্রামেরই মসজিদ পরিচালিত একটা ধর্মীয় স্কুল থেকে | সেখানে তিনি কোরআন, ইসলাম ধর্ম, দর্শন এবং ইসলামী ধর্মতত্ত্বের বিষয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন |
পরে, ১৯০৮ সালে তার বাবা কাজী ফকির আহমদের মৃত্যু হয় | সেইসময় তার বয়স ছিলো মাত্র নয় বছর । বাবার মৃত্যুর পর পারিবারিক অভাব অনটনের কারণে তাঁর শিক্ষা বাধাগ্রস্থ হয় এবং মাত্র দশ বছর বয়সে তাকে নেমে যেতে হয় জীবিকা অর্জনের কাজে |
সেইসময় তিনি মক্তব থেকেই নিম্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং উক্ত মক্তবেই শিক্ষকতা শুরু করেন আর এরপর একইসাথে তিনি কাজ করেন হাজী পালোয়ানের কবরের সেবক এবং মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবে |
এইসব শিক্ষার মধ্য দিয়ে তিনি অল্পবয়সেই ইসলাম ধর্মের মৌলিক আচার-অনুষ্ঠান সম্পর্কে ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হন, যা পরবর্তীকালে বাংলা সাহিত্য তথা সঙ্গীতে ইসলামি ঐতিহ্যের রূপায়ণ করতে সহায়ক হয়ে ওঠে |
কিন্তু কবি সেই কাজ বেশিদিন করতে পারেননি | অল্প কিছুদিন এইসব করেই তিনি সেই সমস্ত কাজ করা ছেড়ে দেন এবং নিজেকে শিল্পীরূপে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বাংলার রাঢ় অঞ্চলের এক ভ্রাম্যমান নাট্যদলে যোগদান করেন |
সেই দলের সাথে তিনি বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান করতে যেতেন আর তাদের থেকে অভিনয়, গান ও নাচ প্রভৃতি শিখতেন | এছাড়াও কখনো কখনো নাটকের জন্য গান ও কবিতাও তিনি লিখে দিতেন তাদের সাহায্যের কথা ভেবেই ।
এখানে একটা কথা বলে রাখি যে, কাজী নজরুল ইসলাম কিন্তু শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মগ্রন্থই অধ্যায়ন করেননি; সেইসাথে তিনি হিন্দু পুরান সহ বহুবিধ শাস্ত্রও অধ্যায়ন করেছিলেন | তিনি দুই ধর্মকেই সমানভাবে শ্রদ্ধা করতেন | তাঁর কাছে কোনো ধর্মই ছোট কিংবা বড় ছিলোনা |তবে তিনি মনে প্রাণে মুসলিম ছিলেন।
তাঁর উদারতার জন্যই হয়তো আমরা তাঁর কবিতা, নাটক ও গানের মধ্যে দুই ধর্মেরই সমন্বয় খুঁজে পাই |
যাই হোক আবার আগের কথায় ফিরে আসি !
তিনি নাট্যদলে থাকাকালীন প্রচুর লোকসঙ্গীতের রচনা করেন | যারমধ্যে অন্যতম কিছু হলো- দাতা কর্ণ, কবি কালিদাস, আকবর বাদশাহ, রাজপুত্রের গান, মেঘনাদ বধ, বিদ্যাভূতুম প্রভৃতি | এছাড়াও তিনি হিন্দু দেবী কালীকে নিয়ে প্রচুর শ্যামা সঙ্গীতও রচনা করেন সেইসময় | যারজন্য অনেক ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষ তাঁকে কাফেরও পর্যন্ত বলেছিলো |
এই বিষয়ে তিনি একবার বলেন – “আমি শুধু হিন্দু মুসলিমকে এক জায়গায় ধরে নিয়ে হ্যান্ডশেক করানোর চেষ্টা করেছি, গালাগালিকে গলাগলিতে পরিণত করার চেষ্টা করেছি”
১৯১০ সালে নজরুল ইসলাম পুনরায় শিক্ষাজীবনে ফিরে যান | প্রথমে তিনি ভর্তি হন রানীগঞ্জ সিয়ারসোল রাজ স্কুলে এবং পরে মাথরুন উচ্চ ইংরেজি স্কুলে | আজ বর্তমানে অবশ্য মাথরুন উচ্চ ইংরেজি স্কুল “নবীনচন্দ্র ইনস্টিটিউশন” নাম পরিচিতি লাভ করেছে |
কিন্তু সেইসব স্কুলে পড়ার পরেও তিনি কোনোটাতেই বেশিদিনের জন্য পড়তে পারেননি | আর্থিক সমস্যাই তাঁর সেখানে পড়াশোনার শেখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় | তাই ক্লাস সিক্স পর্যন্ত পড়ার পর তাঁকে আবার কাজে ফিরে যেতে হয় |
এরপর ১৯১৭ সালের শেষদিক থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত প্রায় আড়াই বছর কাজী নজরুল ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে একজন সেনা হিসাবে কাজ করেন | প্রথমে তিনি কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে এবং পরবর্তীকালে প্রশিক্ষণের জন্য বর্তমান পাকিস্তানের অন্তর্গত নওশেরা প্রদেশে যান |
তারপর যখন তাঁর প্রশিক্ষণ শেষ হয়, তখন তিনি করাচি সেনানিবাসে সৈনিক জীবন কাটাতে শুরু করেন । শোনা যায় তখন নাকি তিনি রেজিমেন্টের পাঞ্জাবী মৌলবীদের থেকে ফারসি ভাষা শেখেন, সঙ্গীতানুরাগী সহসৈনিকদের সঙ্গে দেশি-বিদেশি বাদ্যযন্ত্র সহযোগে সঙ্গীতচর্চা করেন এবং একই সঙ্গে সমানভাবে সাহিত্যচর্চাও করেন ।
তিনি করাচির সেই সেনানিবাসে বসে রচনা করেন বাউণ্ডুলের আত্মকাহিনী, মুক্তি, ব্যথার দান, ঘুমের ঘোরে নামক ইত্যাদি সব গদ্য ও কবিতা | এত দূরের এক সেনানিবাসে কাজ করা সত্ত্বেও তিনি কলকাতার বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকার পাঠক ছিলেন এবং গ্রাহকও |
তাঁর পছন্দের কিছু সাহিত্য পত্রিকা ছিলো যথাক্রমে- প্রবাসী, ভারতী, মর্ম্মবাণী এবং বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা | অবশেষে ১৯২০ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর, তিনি সেনার জীবন ত্যাগ করে পুণরায় কলকাতায় ফিরে আসেন |
কলকাতায় ফিরে এসে কাজী নজরুল ইসলাম একইসাথে সাহিত্যিক ও সাংবাদিক জীবন শুরু করেন | কলকাতায় তাঁর প্রথম আশ্রয় ছিল ৩২নং কলেজ স্ট্রীটে বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির অফিসে | তিনি সেই সমিতির অন্যতম কর্মকর্তা মুজফ্ফর আহমদের সঙ্গে অনেক কাজ করেন |
এরপর যখন তাঁর সদ্যরচিত উপন্যাস ‘বাঁধন-হারা’ এবং ‘বোধন’, ‘শাত-ইল-আরব’ ও ‘বাদল প্রাতের শরাব’ নামক প্রভৃতি কবিতা; মোসলেম ভারত, বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা, উপাসনা ইত্যাদি সব নামকরা পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তখন তা বাংলা সাহিত্য ক্ষেত্রে এক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে |
জানা যায়, ১৯২১ সালের অক্টোবর মাসে বোলপুরের শান্তিনিকেতনে নজরুল ইসলাম একবার রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান | ব্যাস ! তখন থেকে ১৯৪১ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ প্রায় কুড়ি বছর, বাংলার এই দুই প্রধান কবির মধ্যে যোগাযোগ ও ঘনিষ্ঠতা অক্ষুণ্ণ থাকে | তাঁরা একে অপরকেই গভীরভাবে শ্রদ্ধা করতেন এবং তৎকালীন রাজনীতি ও সাহিত্য নিয়েও মাঝে মাঝে আলোচনা করতেন বলে শোনা যায় |
১৯২১ সালে একবার কবি নজরুল ইসলাম, মুসলিম সাহিত্য সমিতির গ্রন্থ প্রকাশক আলী আকবর খানের সাথে কুমিল্লার বিরজাসুন্দরী দেবীর বাড়িতে যান | আর সেখানেই তিনি প্রমীলা দেবীকে প্রথমবার দেখেন | যার সাথে পরে ভালোবাসা হয় এবং বিবাহ করেন।
কিন্তু এর আগে নজরুলের বিয়ে ঠিক হয়, আলী আকবর খানের শালী নার্গিস আসার খানমের সাথে | বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর আলী আকবর খান তাঁকে শর্ত দেন ঘরজামাই হিসাবে থাকার জন্য, যেই শর্ত তিনি মোটেই মানেননি |
অবশেষে বাসর সম্পন্ন হবার আগেই নার্গিসকে রেখে কুমিল্লা শহরে বিরজাসুন্দরী দেবীর বাড়িতে চলে যান কবি । সেইসময় তিনি একদম অসুস্থ হয়ে পরেছিলেন এবং প্রমিলা দেবীই তাঁকে পরে পরিচর্যা করে সুস্থ করে তোলেন |
যখন প্রমিলা দেবী এবং নজরুল ইসলামের সন্তান হয় তখন কবি নিজেই তাদের সন্তানদের নামকরণ বাংলা এবং আরবি উভয় ভাষার সমন্বয়ে করেন |

বিয়ের ঠিক কিছু বছর পর থেকেই বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়া শুরু হয় | কিন্তু সেইসময়ও তাঁর অসুস্থতা অনেকবারই ঠিক হয়ে যায় চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে|
কিন্তু ১৯৪২ সালে যখন কবি আরো একবার শারীরিক অসুস্থতার কবলে পরেন তখন তাঁকে আর আগের মতো সুস্থ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি কারণ তিনি বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন এবং তাঁর মানসিক ভারসাম্যও নষ্ট হয়ে যায় |
১৯৫২ সালে সেইজন্য কবিকে রাঁচির এক মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয় | সেখানে তিনি চার মাস ছিলেন, কিন্তু তাতেও তাঁর মানসিক অবস্থার সামান্যটুকুও উন্নতি হয়নি |
এইভাবেই অনেক চিকিৎসা করানোর পর সবশেষে ধরা পরে যে, কবির মস্তিষ্কে নিউরন ঘটিত সমস্যা হয়েছে আর সেই সমস্যাকে বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থার দ্বারা ঠিক করা একদম অসম্ভব | তিনি কোনোভাবেই আর সুস্থ হতে পারবেন না।
তবে কবিকে পারে আঘাত করে অসুস্থ করা হয়েছে বলেও মানুষ বিশ্বাস করে |
তারপর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর, ১৯৭২ সালের ২৪শে মে ভারত সরকারের অনুমতি নিয়ে কবি নজরুলকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয় | কবির বাকি জীবনটা এরপর বাংলাদেশেই কাটে এবং ১৯৭৬ সালে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয় |
অবশেষে, দীর্ঘ রোগভোগের পর সেই বছরই অর্থাৎ ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট তারিখে তিনি মৃত্যুবরণ করেন |
হে মহান আল্লাহ পাক, রাব্বুল আলামিন!
তোমার নূরের আলোয় উজ্জ্বল আসমান ও জমিন।
তোমার মহা ভূ-মণ্ডলে অতি ক্ষুদ্র মোরা,
স্ব-মহিমায় জাগ্রত ,তোমার আসন জগৎ জোড়া ।
রোদ্দুরে পুড়ি, বৃষ্টিতে ভিজি, জোছনায় সুখে হাসি,
কতকিছু তুমি দান করেছ, তোমাকেই ভালবাসি ।
তোমার শক্তির একটি বিন্দু মহা সিন্ধু সম ,
দিয়েছো কত প্রেম ভালবাসা,দিয়েছো যে প্রিয়তম।
কুদরত তব বোঝা বড় ভার, দিয়েছো চোখের মণি
কর্ণ দিয়েছো বলেই আমরা ভালো মন্দ শুনি ।
মস্তকে কালো ঘন চুল দিলে বুকে দিলে মোহ মায়া,
অন্তরে যেন জাগ্রত থাকে, তোমার নূরের কায়া ।
আমরা হাটি মাটির পরে কোথা থেকে জল পড়ে?
দেখিনা কিছুই, অবিরত কেন গাছপালা শুধু নড়ে!
শুভ্র ধুসর ধোয়ার কুণ্ডলী কোথা যেন মিশে যায়,
সবকিছু প্রভূ বিকশিত হয় তোমার মহিমায় ।
পেটুক খাইয়া মরে পেটের জ্বালায়
খাইতে না পাইলে মরে ক্ষুধার জ্বালায়।
বাঁদরের হাতে দিয়া মশাল মশাই !
স্বদেশ করিলো শেষে শ্মশান কসাই ।
শিক্ষিত শয়তানে দিলো কানপড়া
মুর্খ শাসক শুনে পুরোপুরি ধরা ।
নিজের ওজন বুঝে কাজ করো গুণী
পরিতাপ হইবে পারে বৈতরণী ।
ইন্দ্রজালের ফাঁদে পড়িয়া সে কাঁদে
কাঁদিবে ভুবন তার করুণ আর্তনাদে ।
আমারে যে চেয়েছিলো ভুলে বারবার
আমায় ছাড়িয়া ভুল করিলো আবার ।
আমায় পাইয়া ফের পায়ে পিষে হায় —
মরার প্রহর গোণে খাদ কিনারায় ।
একজনে এক ভুল কতবার করে !
অহংকারে’র পাপের দাপটে সে মরে ।
স্বভাব যায় না যদি শয়তানে পায়
স্বাধীন হইলে নারী জাহান্নামে যায়।
সাতসমুদ্র ঐ তেরো নদী পাড়ে
জতুগৃহে বসি সে কাঁদে অনাহারে।
মর্ত্যে গর্ত খুড়ে লাভ নাই কারো
চাইলে শান্তি দুনিয়াদারী ছাড়ো।
কতজনে আশা দিয়া করিলো নিরাশ
এখন আমার চেয়ে তারাই হতাশ ।
সুখ-দুঃখ তিতা মিঠা নিজের কাছে
শান্তনা নিয়ে নাহি পরান বাঁচে ।
ভালোবাসা পেলে যেতে পারি বহুদূরে
তারচেয়ে উত্তম একা ভবঘুরে।
ভবিষ্যৎ ব’লে আসলে কিছু নাই
পাগল ছাগলে গোনে টাকা অযথা ই।
যেকোনো ইস্যুতে আলোচনায় দেখা যায় রাখি সাওয়ান্তকে। তার নতুন নাম ফাতিমা। সে নামেই সকলকে ডাকতে আহ্বান করেছেন। কিছুদিন আগেই দ্বিতীয় বিয়ে ভেঙেছে তার।
এ নিয়ে বিতর্কের শেষ ছিল না। স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন, জানিয়েছিলেন হানিমুনে গিয়ে তার নগ্ন ভিডিও শুট করে মোটা অঙ্কে বিক্রি করেছেন আদিল। এবার হঠাৎ করেই নতুন সুরে কথা বললেন রাখি।
ঠোঁটকাটা স্বভাবের এ অভিনেত্রী আদিল দুরানি খানের সঙ্গে বিয়ের সময় ধর্ম পরিবর্তন করে মুসলিম হয়েছেন।
নাম পরিবর্তন করে রেখেছেন ফাতিমা। ইসলাম অনুযায়ী জীবন যাপনও করছেন।
সাংবাদিকরা কথা বলার জন্য ডাকেন এবং ভক্তরাও সেলফি তোলার চেষ্টা করেন। তখনই চটে যান। বলেন, ‘আমি পবিত্র, আমি মক্কা-মদিনা ঘুরে এসেছি। পুরুষরা আমাকে স্পর্শ করবেন না। আমার থেকে দূরে থাকুন।’
এদিকে রাখির এই ভিডিও রীতিমতো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। ভিডিওর শেষে সৌদি আরবের শেখদের স্ত্রীর সঙ্গে নিজেকে তুলনা করতে দেখা যায় তাকে। বিপরীতে এসব পোস্টে মন্তব্যের ঘরে নানা কটুকথা বলছেন নেটিজেনরা।
একজন মন্তব্য করেছেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ড্রামাবাজ নারী। আরেকজন লিখেছেন, এই নারীর নাটকের শেষ নেই। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মিথ্যাবাদী।
সম্প্রতি মক্কা-মদিনায় গিয়ে ওমরাহ করেছেন রাখি। এর পর থেকেই তাকে চেনা বড় দায়।
সৌদি আরব থেকে মুম্বাই এয়ারপোর্টে এসে বলেন, ‘আমাকে রাখি নয়, ফাতিমা বলে ডাকুন।’ আর শনিবারও (২ সেপ্টেম্বর) সেই একই রূপ দেখা গেল তার মধ্যে।
এদিন লাল বোরকা ও হিজাব পরে এক অনুষ্ঠানে আসেন রাখি। সেখানে পুরস্কারে ভূষিত করা হয় তাকে। কিন্তু ইভেন্ট থেকে ফেরার পথে হঠাৎই মেজাজ হারিয়ে ফেলেন এই বলি তারকা।
বলিউড অভিনেতা শাহরুখ খানের নতুন সিনেমা ‘জওয়ান’ মুক্তির আরও চার দিন বাকি। কিন্তু তার আগেই ভারতের অনেক রাজ্যে প্রেক্ষাগৃহগুলো হাউজফুল হয়ে গেছে! সবচেয়ে বেশি হাউজফুল দেখাচ্ছে পশ্চিমবাংলায়।
এ রাজ্যে ১৭০টি প্রেক্ষাগৃহের প্রতিটি শোয়ের টিকিট এরই মধ্যে অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে। এ পরিসংখ্যান ১ সেপ্টেম্বরের। মুক্তির পাঁচ দিন আগে এভাবেই বক্সঅফিস ঝড় তুলেছে জওয়ান।
আগামী ৭ সেপ্টেম্বর মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি। এতে শাহরুখ খান ছাড়াও নয়নতারা, বিজয় সেতুপতি, প্রিয়মণি, সানি মালহোত্রা অভিনয় করেছেন। এদিকে শাহরুখের জওয়ান নিয়ে উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে ইন্ডাস্ট্রির অন্য শিল্পীদের মধ্যেও।
তবে শুধু উত্তেজনা বললে ভুল হবে। সঙ্গে কিছুটা ভয়ও লক্ষ করা যাচ্ছে দক্ষিণের অন্য নির্মাতাদের মধ্যে। তাই তো ‘জাওয়ান’র দাপট দেখে তারা পিছিয়ে দিয়েছে সিনেমা মুক্তির তারিখও। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী, ২৮ সেপ্টেম্বর প্রভাস অভিনীত ‘সালার’ সিনেমাটি মুক্তির কথা ছিল। কিন্তু এখন আর তা হচ্ছে না।
ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, শাহরুখের সঙ্গে বক্সঅফিস লড়াইয়ের ভয়েই নাকি সরে দাঁড়িয়েছে প্রভাসের পরিচালক। যদিও এ বিষয়টিকে অস্বীকার করছে ‘সালার’ টিম।
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা সরকার গঠনের পর থেকে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। আমাদের উন্নয়নের ধারা একেবারে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছেছে। সংসদ-সদস্যরা তাদের দায়িত্ব পালন করছেন বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।
রোববার জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। নাটোর-৪ আসনের প্রয়াত সংসদ-সদস্য আব্দুল কুদ্দুস ও নেত্রকোনা-৪ আসনের প্রয়াত সংসদ-সদস্য রেবেকা মমিনের মৃত্যুতে আজ শোক প্রস্তাব তোলা হয় সংসদে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে, আমাদের সংসদের অধিবেশন শুরুই করতে হয় শোক প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে। ভেবেছিলাম এবার বোধ হয় তার থেকে ব্যতিক্রম হবে। কিন্তু তা হয়নি। এই সংসদের ২৮ জন সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন। যেখানে ২৬ জনই আওয়ামী লীগের। আর দুজন জাতীয় পার্টির। এর মধ্যে কয়েকজন নারী সদস্যও রয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা সরকার গঠনের পর থেকে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। আমাদের উন্নয়নের ধারাটা একেবারে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছেছে। এটা সম্ভব হয়েছে অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে সংসদ-সদস্যরা তাদের দায়িত্ব পালন করছেন বলে। আজকে যাদের হারিয়েছি এবং সেখানে নতুন যারা নির্বাচিত হয়ে এসেছেন, তাদের কাছে আবেদন থাকবে যে আদর্শ ও লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে সেই স্বাধীনতার সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবেন।
সরকারের উন্নয়নের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত করতে পেরেছি। বাংলাদেশকে আরও উন্নত করতে হবে। আমি চাই, নিবেদিত প্রাণ হয়ে নিজ নিজ এলাকার মানুষের সেবা করে যাবেন। মানুষের সেবা করাটাই সব থেকে বড় পাওয়া, এর চেয়ে বড় কিছু নেই।