রান্নাঘরে মশলা হিসেবে অনেক সময়ে মেথির দানা অর্থাৎ গোটা মেথি ব্যবহার করা হয়। তবে শুধু মশলা নয়, এটি একটি অত্যন্ত কার্যকরী ও পুষ্টিকর খাদ্য উপাদান। খেতে একটু তেতো বলে অন্যদের মতো এর বহুল ব্যবহার নেই। তবে শরীরের জন্য, বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য দারুণ কাজ দেয় এটি। ডায়েট বিশেষজ্ঞদের কথায়, যদি অঙ্কুরিত মেথি খাওয়া যায়, তা হলে একাধিক সমস্যার সমাধান হতে পারে। তা ছাড়া অঙ্কুরোদগমের জেরে মেথির সেই পরিমাণ তিক্ততাও থাকে না। সহজেই হজম হয়ে যায় এটি। এ বার বিশদে জেনে নেওয়া যাক অঙ্কুরিত মেথির উপকারিতা!
অঙ্কুরিত মেথির উপকারিতা- অঙ্কুরিত মেথি রক্তে গ্লুকোজ নিঃসরণের গতি কমিয়ে দেয়। এর জেরে রক্তে আচমকা সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি অত্যন্ত কার্যকরী।
ডায়েট বিশেষজ্ঞদের কথায়, অঙ্কুরোদগমের পর মেথি তুলনামূলক নরম হয়ে যায়। এর জেরে হজমেও কোনও সমস্যা হয় না। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে। তাই মেথি খেলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও মজবুত হয়। সর্বোপরি, অঙ্কুরোদগমের জেরে মেথির পুষ্টিগুণ বেড়ে যায়। দেহে একাধিক ভিটামিন ও প্রোটিনের অভাব পূরণ করতে সক্ষম হয় এটি।
কী ভাবে হবে মেথির অঙ্কুরোদগম- প্রথমে মেথি বীজ বা মেথিকে ৪ থেকে ৫ বার পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। যাতে কোনও রকম গন্ধ না থাকে। ভালো করে জলে ধুয়ে নিলে অঙ্কুরোদগমের পরেও কোনও খারাপ গন্ধ পাওয়া যায় না। এ বার জলে ভিজিয়ে দিতে হবে মেথিকে এবং রাতভর এ ভাবেই রেখে দিতে হবে।
পরের দিন সকালে পানি থেকে ছেঁকে নিয়ে আবার পানিতে ধুয়ে নিতে হবে মেথিকে। এর পর একটি পরিষ্কার ও মসৃণ কাপড়ের মধ্যে মেথিকে বেঁধে ঝুলিয়ে রেখে দিতে হবে। এ ভাবে থাকার পর পরের দিন সকালে কাপড় খুলে মেথিকে বের করে আনতে হবে। এর পর আবার জলে ধুয়ে নিতে হবে। পরে একই ভাবে কাপড়ের মধ্যে মেথিকে বেঁধে ঝুলিয়ে রেখে দিতে হবে।
পাঁচ দিন পর্যন্ত এই একই কাজ করতে হবে। এর পর দেখা যাবে ছোট্ট ছোট্ট মেথি থেকে বেরিয়ে এসেছে অঙ্কুর। সব ক্ষেত্রেই একটি কথা মাথায় রাখতে হবে- প্রতি দিন যেন ভালো করে ধোওয়া হয় মেথিকে।
অঙ্কুরোগদগম হয়ে গেলে একটি এয়ার টাইট কন্টেনারের মধ্যে অঙ্কুরিত মেথিকে রেখে দিতে হবে। এই অবস্থায় এক সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে মেথি। এ বার এই অঙ্কুরিত মেথি দিয়ে নানা রকমের সালাড, চাট মশলা বানানো যেতে পারে। অঙ্কুরিত মেথি মুড়ির সঙ্গেও খাওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে অল্প একটু গোলমরিচ ও নুন দেওয়া যেতে পারে।