মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান:
মহা বিশ্বকবি’র ‘খুকী ও কাঠবেড়ালী’ —
একদিন মহা বিশ্বকবি কাজী নজরুল ইসলাম বারান্দায় বসে আছেন। হঠাৎ তাঁর চোখ পড়লো অঞ্জলির ওপর। নজরুল দেখলেন, একটা পেয়ারা গাছের নিচে দাঁড়িয়ে চোখ-ঠোঁট উল্টিয়ে, হাত-পা নেড়ে অঞ্জলি যেন কার সঙ্গে কথা বলছে। নজরুল ভাবলেন, নিশ্চয়ই কেউ পেয়ারা গাছে উঠেছে। তার কাছে কাকুতি-মিনতি করে অঞ্জলি পেয়ারা চাইছে। তিনি ভাবলেন, অঞ্জলির হয়ে পেয়ারা চাইবেন। না দিলে নিজেই পেয়ারা পেড়ে দেবেন।অঞ্জলির সামনে গিয়ে কবি নজরুল গাছের ওপর কাউকেই দেখতে পেলেন না। নজরুল তখন অঞ্জলিকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি কার সাথে কথা বলছিলে?’ অঞ্জলি বললো, ‘কাকাবাবু! ওই দেখো দুষ্টু কাঠবেড়ালী। রোজ রোজ দুষ্টুটা পেয়ারা খেয়ে পালিয়ে যায়। আমাকে একটাও দেয় না।’ এ ঘটনাকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে তিনি লিখলেন ‘খুকী ও কাঠবেড়ালী’ নামের সেই কবিতা।
“হে নামাজী আমার ঘরে নামাজ পড়ো আজ” গানটি লেখার প্রেক্ষাপট –
একদিন শিল্পী আব্বাসউদ্দিন অনেক খোঁজাখুঁজি করে মহা বিশ্বকবি কাজী নজরুল ইসলাম কে না পেয়ে সকালে তাঁর বাসায় গেলেন। বাসায় গিয়ে দেখেন শ্রদ্ধেয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম গভীর মনোযোগ দিয়ে কি যেন লিখছেন। কাজী নজরুল ইসলাম ইশারায় তাঁকে বসতে বললেন। অনেকক্ষণ বসে থাকার পর জোহরের নামাজের সময় হলে তিনি উসখুস করতে লাগলেন।কাজী নজরুল ইসলাম বললেন, ‘কি তাড়া আছে, যেতে হবে ?’ আব্বাসউদ্দিন বললেন, ‘ঠিক তাড়া নেই, তবে আমার জোহরের নামাজ পড়তে হবে। আর এসেছি একটা ইসলামি গজল নেবার জন্য।’ নামাজ পড়ার কথা শুনে পীর কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাড়াতাড়ি একটি পরিষ্কার চাদর তাঁর ঘরের আলমারি থেকে বের করে বিছিয়ে দিলেন।জোহরের নামাজ শেষ করার সাথে সাথে নজরুল ইসলাম তাঁর হাতে একটি কাগজ দিয়ে বললেন, ‘এই নাও তোমার গজল’। নামাজ পড়তে যে সময় লেগেছে ঠিক সেই সময়ের মধ্যে নজরুল ইসলাম একটি নতুন গজল লিখে ফেলেছেন। গজলটি ছিলো, ‘হে নামাজী আমার ঘরে নামাজ পড় আজ/ দিলাম তোমার চরণ তলে হৃদয় জায়নামাজ।’