কবি ও প্রখ্যাত উপন্যাসিক মো: আবু ইউসুফ সুমন এর মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছে। লোকচক্ষুর অন্তরালে এ তরুন কবি ধুকে ধুকে মরছেন। নোয়াখালীর সুধারাম থানার একটি হত্যা মামলায় তাকে এ দন্ডাদেশ দেয়া হয়।
তার মৃত্যুদন্ড ও কনডেম সেলে যাওয়ার বিষয়টি ব্যাপক ভাবে প্রচার হয়নি। তার নিকটতম আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবরা বিষয়টি জানতে পারেনি। না জানার মাঝেই চলে গেলো এই কবির ৫ বছর। কনডেম সেলের ভয়াবহ ৫ বৎসরের বিবরণ দিতে গিয়ে তার মা ৮৫ বৎসরের বৃদ্ধা হোসনে আরা বেগম কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
এই প্রগতিশীল লেখকের উপন্যাসের সংখ্যা অনেক। তবে এ প্রতিবেদকের কাছে তাৎক্ষনিক ভাবে উপস্থাপিত হয়েছে (১) মনের আয়না (২) আত্মার খোরাক (৩) ইসলামী মুল্যবোধ ও সামাজিক অবক্ষয় ও (৪) প্রাণ বাসরী প্রভৃতি। তার পারিবারিক সূত্র জানায়, বিগত ০২-০২-২০০৭ইং তারিখে নোয়াখালীর সুধারাম থানার জনৈক বাবুল মিয়া কয়েক ব্যক্তি বিরুদ্ধে এ হত্যা মামলা নং ০৩ ধারা: ৩৬৪/৩৯৬/৩০৭/৩২৬ বাংলাদেশ দন্ডবিধি দায়ের করেন।
মামলার আরজিতে কবি মো: আবু ইউসুফ সুমনের নাম ছিলো না এবং বাদী তার কথা তখন কোথাও উল্লেখও করেননি। তার মা বলেন, কবিতা লেখা ও প্রবন্ধ রচনা ছিল তার মূল পেশা। প্রগতিশীল লেখক ও কবি বলে এলাকায় তার ব্যাপক পরিচিতি ছিল। স্থানীয় প্রভাব এবং প্রগতিশীল লেখা ও বিজ্ঞান মনস্ক লেখনীতে ঈর্ষাণীত হয়ে ষড়যন্ত্রকারী দল কতিপয় দূর্ণীতি পরায়ন পুলিশের যোগসাজসে সন্ধেহ বাজন হিসেবে তাকে এ মামলায় শোন এরেষ্ট দেখানো হয়। তার মা জানান, আমার ছেলে সম্পূর্ণ নির্দোষ ছিলো। সে কোনদিনও এ ধরনের অপরাধে জড়িত ছিলো না।
অত্র মামলায় তার ৫দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। তার রিমান্ড চলাকালীন মামলার আইও ওসি নুরুল আলম তালুকদার, বাদী বাবুল মিয়া এবং ভিকটিম সামসুল কবির রুবেলের উপস্থিতিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে সেচ্ছায় তার কোন স্বীকার উক্তি মূলক জবান বন্দী ছিল না। কবি আবু ইউসুফ সুমন জেল হাজতে থাকা অবস্থায় দুটি টিআইপি মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। কবির বৃদ্ধা মা বলেন কোন মহড়ায় আমার ছেলেকে মামলার বাদী ও ভিকটিম সামসুল কবির রুবেল সনাক্ত করে নাই। দেশে জরুরী অবস্থা চলাকালীন আলোচিত এ মামলা হওয়ার দরুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মনিটরিং সেলের তত্ত¡াবধানে মামলার আইও ওসি নুরুল আলম তালুকদার দীর্ঘ ১৮ মাস তদন্তের নির্মিত্তে কবি আবু ইউসুফ সুমনকে নট সেন্ট আপ ইন কেইস দেখিয়ে বিজ্ঞ আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
গত ২৩/০৩/২০১৬ইং তারিখে বিজ্ঞ অতিরিক্ত দায়রা জজ ২য় আদালত নোয়াখালী থেকে আমার ছেলে মৃত্যু দন্ডে দন্ডিত হয়ে অদ্যাবধি কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে থেকে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। তার ৮৫ বৎসরের বৃদ্ধা মা বলেন সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আমার আকুল আবেদন আমার সন্তানকে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক মুক্তি দিন। এদিকে কবি আবু ইউসুফ সুমন কনডেম সেলে প্রায় ৫ বৎসর বন্দি থাকায় তার সমস্ত সহায়-সম্পত্তি লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। তিনি অবিবাহিত নিঃসন্তান।
মহামান্য হাইকোর্টে এ ব্যাপারে হিয়ারিং চলছে।