হেফাজতে ইসলাম সরকারবিরোধী নয় ও সংগঠনের সঙ্গে সরকারের কোনো যুদ্ধ নেই বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির আমীর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।
হেফাজত আমির বলেন, ‘আমরা সরকারবিরোধী নই। সরকারের সঙ্গে আমরা যুদ্ধ করব না। তাদের কোনো অনুদান ও আমরা গ্রহণ করি না। তাছাড়া সরকার পতন আমাদের উদ্দেশ্য নয়। তারা প্রয়োজনে আরও দুইশ’ বছর ক্ষমতায় থাকুক। এতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। তবে সরকারকে ইসলামের সঙ্গে সমঝোতা করে চলতে হবে। না হয় কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে।’
সমসাময়িক বিভিন্ন ইস্যুতে রোববার (১১ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ পর্যায়ের এক জরুরি বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জুনায়েদ বাবুনগরী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘লকডাউন সরকারের যেখানে খুশি সেখানে দিক। কিন্তু লকডাউনের নামে মাদরাসা হেফজখানা নুরানিসহ অন্যান্য কওমি মাদরাসা বন্ধ করা যাবে না। করোনা এসব মাদরাসায় আসে না। কারণ এখানে ছাত্ররা কোরআন-হাদিস পাঠ করে। যারা করোনা থেকে বেশি বাঁচতে চেষ্টা করছে তারাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। যদিও এটা বলা ঠিক না, আল্লাহর রহমতে এখনো কোনো মাদরাসা ছাত্র কিংবা বড় আলেম করোনা আক্রান্ত হয়নি।’
এ সময় বাবুনগরী বলেন, ‘করোনার দোহাই দিয়ে সরকার মাদরাসা-মসজিদ বন্ধ করার জন্য চেষ্টা করছে। আমরা স্পষ্ট করে বলছি, মসজিদে মুসল্লি সংখ্যা নির্ধারণ করে দেয়া যাবে না, রমজানে ইতিকাফ ও তারাবি বন্ধ করা যাবে না। রমজান মাসে কওমি মাদরাসায় একটা কালেকশন (অনুদান সংগ্রহ) হয়। ওই কালেকশন দিয়ে মাদরাসা সারাবছর চলে। লকডাউন দিয়ে সরকার কালেকশন বন্ধেরও চেষ্টা করছে।’
হেফাজত আমির সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের মাদরাসায় পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। গ্রেফতার ও মামলা দায়ের বন্ধ করতে হবে। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেছি। সরকার আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে গুলি চালিয়েছে। এসব বন্ধ না করলে ভবিষ্যতে কঠিন পরিণতি হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ মাদরাসায় ঘুরে ঘুরে আয়ের উৎস কী, ছাত্র কতজন এবং কমিটিতে কে আছেন- এসব বিষয় নিয়ে তদন্ত করছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে।’
এসব দাবি মানা না হলে , ‘কঠোর আন্দোলন করা হবে বলে’ জানান হেফাজত আমির জুনায়েদ বাবুনগরী।
মামুনুল হকের প্রসঙ্গে বাবুনগরী বলেন, ‘আজকের সভায় কোনো ব্যক্তিকে নিয়ে আলোচনা হয়নি। মামুনুল হককে নিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে তা তার একান্ত ব্যক্তিগত। কাউকে অব্যাহতি দেয়ার কোনো কথা সভায় ওঠেনি।’
৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ এলাকায় একটি রিসোর্টে হেফাজত নেতা মামুনুল হককে এক নারীসহ ঘেরাও করে স্থানীয় লোকজন। তখন মামুনুল দাবি করেন, ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী।