সাইড-লোডিং না থাকার কারণে গোটা আইফোন ও আইপ্যাডের অ্যাপ জগতে অ্যাপলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে, যেটি অ্যাপলের আয়ে প্রভাব রাখে। এই কারণটি ইইউ পছন্দ করছে না।ইইউ বলছে, এতে অ্যাপল অ্যাপ বাজারে একচেটিয়া প্রভাব ভোগ করছে।
গুগল, আমাজন, অ্যাপল ও ফেসবুকের মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর একচেটিয়া সুযোগ কমিয়ে আনতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের করা বেশকিছু কঠোর নীতিমালার প্রস্তাব আইফোনের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তাকে ঝুঁকিতে ফেলবে বলে মনে করেছেন অ্যাপলের শীর্ষ নির্বাহী টিম কুক।
কুকের বরাত দিয়ে রয়টার্সের খবরে বলা হয়, এর কিছু অংশ ভালো, তবে সম্পূর্ণটা নয়। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এ খসড়া বিধি আইফোনে অ্যাপ স্টোর এড়িয়ে আসা অ্যাপও ইনস্টল করতে দেবে। এতে আইফোনের অ্যাপ স্টোরে গোপনীয়তা বজায় রাখার যে উদ্যোগ নিয়েছি, তার অনেকটাই নিরাপত্তা বিঘ্নিত করবে।
ইইউ আইনপ্রণেতা আন্দ্রেয়াস শোয়াব ইউরোপীয় পার্লামেন্টে খসড়া বিধিমালা যাচাইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি বলছেন, আইনটি তৈরি প্রক্রিয়া তিনি আরও এগিয়ে নিতে চান এবং প্রযুক্তি জায়ান্টদের প্রভূত ক্ষমতার রাশ টেনে ধরতে চান।
অ্যান্ড্রয়েড ফোন ও আইফোনে অ্যাপ ইনস্টল করার বেলায় সবচেয়ে বড় যে উৎসগত পার্থক্য সেটি হলো অ্যান্ড্রয়েড ফোনে যেকোনো জায়গা থেকে অ্যাপ নামিয়ে ইনস্টল করা যায়, আইফোনে এ স্বাধীনতা নেই। আইফোনে কেবল একটি উৎস থেকেই অ্যাপ ইনস্টল করা যায়, সেটি অ্যাপলের অ্যাপ স্টোর।
অ্যান্ড্রয়েডের জন্য গুগল প্লে স্টোর আছে। কিন্তু আপনি চাইলেই গুগল প্লে স্টোর ছাড়াও অন্য কোনা ওয়েবসাইট থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করে ইনস্টল করতে পারবেন। এ জন্য সেটিংসে গিয়ে ‘আননৌন সোর্সেস’ থেকে অ্যাপ ইনস্টল করার অপশনটি ‘অন’ করে নিলেই হয়। এই অন্য উৎস থেকে অ্যাপ ইনস্টলই সাইড-লোডিং। সাইড-লোডিং নিয়েই ইইউ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছেন কুক।
অ্যাপলের দিক থেকে সাইড-লোডিং না চাওয়ার দুটি প্রধান কারণ আছে। প্রথমত টিম কুক যে নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বললেন সেটি মিথ্যা নয়। শুরু থেকেই অ্যাপল কড়া নজর রাখে অ্যাপ স্টোরে কোন কোন অ্যাপ যোগ হচ্ছে, সেগুলো অ্যাপলের নীতিমালা মানছে কিনা সেই বিষয়গুলো।
অ্যাপল পরিষ্কার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে, কোনো অ্যাপ যদি তার বর্ণনায় উল্লেখ করা বিষয়গুলো বাদে গোপনে অন্য কিছু করে, তবে সেই অ্যাপকে অ্যাপে স্টোর থেকে ফেলে দেওয়া হবে। গুগল যেহেতু ‘গুগল প্লে’ ছাড়াও অন্য উৎস থেকে অ্যাপ ইনস্টল করতে দেয়, ফলে গুগলের পক্ষে এ নজরদারি সম্ভব হয় না।
দ্বিতীয় যে কারণটি রয়েছে, সেটি হচ্ছে সাইড-লোডিং না থাকার কারণে গোটা আইফোন ও আইপ্যাডের অ্যাপ জগতে অ্যাপলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে, যেটি অ্যাপলের আয়ে প্রভাব রাখে।
এই দ্বিতীয় কারণটি ইইউ পছন্দ করছে না। ইইউ বলছে, এতে অ্যাপল অ্যাপ বাজারে একচেটিয়া প্রভাব ভোগ করছে।
সংগ্রহীত