ভারতে বসবাসরত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন বলেছেন, ‘আমি বিয়েতে ততটাই বিশ্বাস করি যতটা ডিভোর্সে করি। অশান্তির বিয়ের চেয়ে শান্তির ডিভোর্স শতগুণে ভাল।’ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সকাল পৌনে ৭টায় এ কথা লেখেন তসলিমা।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং তাঁর স্ত্রী সোফি নিজেদের ১৮ বছরের সংসারের ইতি টানার ঘোষণা দেওয়ার পরই বিশ্বজুড়ে বিয়ে ও সম্পর্ক নিয়ে অনেককে কথা বলতে দেখা গেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ফেসবুক পোস্টে ভারতে নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন বলেন, ‘যখন বিল গেটস আর মেলিন্ডা গেটসের ডিভোর্স হলো, মন খারাপ হয়েছিল। এক সঙ্গে ওঁরা মানব সমাজের ভাল’র জন্য কত ভাল কাজ করছিলেন। একই রকম জাস্টিন ট্রুডো আর সোফি ট্রুডোর বিচ্ছেদের খবর শুনে মন খারাপ হয়ে গেল। জাস্টিনের মতো এমন উদার, প্রাণোচ্ছ্বল, বুদ্ধিদীপ্ত এবং আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের সঙ্গে কোনও ভাল মানুষের বিরোধ হতে পারে বলে আমার কখনও মনে হয়নি। কী জানি, হয়তো ব্যক্তিত্ব দুজনেরই প্রখর হলে সংঘাতের আশঙ্কা থাকে। যাদের ব্যক্তিত্বের বালাই নেই, অথবা ব্যক্তিত্ব একজনের বেশি আরেকজনের কম, তারাই হয়তো একসঙ্গে সুখে শান্তিতে সারাজীবন কাটিয়ে দিতে পারে।’

স্ট্যাটাসের শেষের দিকে তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, ‘সুখী হওয়াটাই আসল। নিজের জীবন দিয়ে জানি আমি যখন একা, আমি সুখী।’
১৮ বছরের দাম্পত্য জীবনের পর গত বুধবার ট্রুডো ও সোফি বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন। এ নিয়ে তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, তিনি ভাবতেন, দুনিয়াতে তিনিই বুঝি খুঁতহীন, নির্ভেজাল সম্পর্ক চান। ছোটলোকির সঙ্গে, প্রভুত্ব ফলানোর সঙ্গে আপস একেবারেই করেন না তিনি। এখন দেখছেন, তাঁর চেয়ে বেশি নিখুঁত সম্পর্কে বিশ্বাস করেন সোফি।
তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, তিনি যদি সোফি হতেন, কোনো দিনই ট্রুডোর মতো এমন সুদর্শন, আদর্শবান, মানবিক ও এমন পাগল করা প্রেমিককে ত্যাগ করতেন না। সোফি আলাদা হয়েছেন ট্রুডো থেকে। এমন নিখুঁত সুপুরুষের কি সত্যিই কোনো খুঁত থাকতে পারে!
তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, ‘পৃথিবীর কত সুখী দম্পতির ছাড়াছাড়ি হয়ে গেল। কত আদর্শবান জুটির তালাক হয়ে গেল। আমরা বাইরে থেকে শুধু কল্পনা করে নিই উপন্যাসের নায়কের মতো, সিনেমার হিরোর মতো একেকজন পছন্দের পুরুষকে, যেন তাঁরা অনৈতিক কিছু করতে পারেন না।