সূরা মায়েদার ৯০ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنْصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ”
হে মুমিনগণ, এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরগুলো- এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ তো নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও।” (৫:৯০)
ইসলাম এমন একটি পরিবেশে আবির্ভূত হয়েছিল যে পরিবেশে মদ, জুয়া, প্রতিমা পূজা ও ভাগ্য নির্ধারক শর- এসবের ব্যাপক প্রচলন ঘটেছিল। কোরআন এসবকে আদিম জাহিলিয়াত বলে উল্লেখ করেছে। বর্তমান যুগেও বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে নানা আঙ্গিকে বা পদ্ধতিতে এসব কূ-প্রথা চালু রয়েছে। কিন্তু ঈমানের শর্ত হলো, শয়তানের এসব মাধ্যম বা প্রতীক থেকে দূরে থাকতে হবে। মদসহ যা কিছু মানুষকে মাতাল করে বা বিবেক-বুদ্ধিকে স্থবির করে ইসলাম তা নিষিদ্ধ করেছে। জুয়া মানুষকে শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রম ছাড়াই অর্থ উপার্জনের দিকে আকৃষ্ট করে, তাই ইসলাম এর নিন্দা জানায় এবং মদ- জুয়াকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে।কবিতা ও মদ ছিল আরবদের অতি প্রিয় বিষয়। তাই রাতারাতি মদ নিষিদ্ধ করা হলে তা অনেকেই মান্য করত না। তাই ইসলাম ধারাবাহিক চার পর্যায়ে তথা পর্যায়ক্রমে মদ নিষিদ্ধ করেছে। পবিত্র কোরআনের এ আয়াতে মদ পানকারীকে মূর্তি পূজারীর পাশাপাশি উল্লেখ করা হয়েছে।
এ আয়াতের শিক্ষণীয় কিছু দিক হলো:-
১. মদ পানের মত কাজগুলোকে ইসলাম নিষিদ্ধ করেছে এ জন্য যে, এসবের মধ্যে রয়েছে বস্তুগত ও মানসিক অপবিত্রতার উপাদান।
২. ঈমানের শর্ত হলো, শয়তানের প্রভাবিত সব ধরনের কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে। ঈমানের শর্ত হিসেবে কেবল এবাদতই যথেষ্ট নয়, খাদ্য গ্রহণে ও জৈবিক আচার-আচরণে সংযত হতে হবে।
৩. ইসলামের সবগুলো শিক্ষাই মানুষকে সৌভাগ্য ও মুক্তির পথ দেখায়। যদিও এসব শিক্ষার কোনো কোনোটি বাস্তবায়ন আমাদের জন্য বেশ কঠিন বা কষ্ট-সাধ্য, কিন্তু এসব শিক্ষাকে সন্তানকে মানুষ করার জন্য বাবা-মায়ের গৃহীত কঠোর ব্যবস্থার সাথে তুলনা করা যায়।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
“তুমি আল্লাহর জন্য অবশ্যই বেশী বেশী সিজদা করবে। কেননা তুমি যখনই আল্লাহর জন্য একটি সিজদা করবে, আল্লাহ তায়ালাএর বিনিময়ে তোমার মর্যাদা একধাপ বৃদ্ধি করে দেবেনএবং তোমার একটি গুনাহ মাফ করে দেবেন।
—[মুসলিম ৯৮৬] সুবহানআল্লাহ্