মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান: স্বামী তালাক না দিলে সেই নারীকে বিবাহ করা হারামঃ-
বুঝলে ভালো আর না বুঝে তর্ক করলেই ব্লক।কথা হচ্ছে মেয়েদের তালাক দেয়ার কোনো একক ক্ষমতা পবিত্র ইসলামে নাই।
তালাক দিতে হ’লে স্বামীর অনুমতি নিয়েই দিতে হবে। যেহেতু নারীদের আল্লাহ পাক নবুয়তি দেন নাই, তালাক দেয়ার মত বড় সিদ্ধান্ত নেয়ার যোগ্যাও মনে করেন নাই।
আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআন মাজীদে সুরা তালাকে বলেন —
یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ اِذَا طَلَّقۡتُمُ النِّسَآءَ فَطَلِّقُوۡهُنَّ لِعِدَّتِهِنَّ وَ اَحۡصُوا الۡعِدَّۃَ ۚ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ رَبَّکُمۡ ۚ لَا تُخۡرِجُوۡهُنَّ مِنۡۢ بُیُوۡتِهِنَّ وَ لَا یَخۡرُجۡنَ اِلَّاۤ اَنۡ یَّاۡتِیۡنَ بِفَاحِشَۃٍ مُّبَیِّنَۃٍ ؕ وَ تِلۡکَ حُدُوۡدُ اللّٰهِ ؕ وَ مَنۡ یَّتَعَدَّ حُدُوۡدَ اللّٰهِ فَقَدۡ ظَلَمَ نَفۡسَهٗ ؕ لَا تَدۡرِیۡ لَعَلَّ اللّٰهَ یُحۡدِثُ بَعۡدَ ذٰلِکَ اَمۡرًا ﴿۱﴾یایها النبی اذا طلقتم النساء فطلقوهن لعدتهن و احصوا العدۃ ۚ و اتقوا الله ربکم ۚ لا تخرجوهن منۢ بیوتهن و لا یخرجن الا ان یاتین بفاحشۃ مبینۃ و تلک حدود الله و من یتعد حدود الله فقد ظلم نفسهٗ لا تدری لعل الله یحدث بعد ذلک امرا ﴿۱﴾
হে নবী, (বল), তোমরা যখন স্ত্রীদেরকে তালাক দেবে, তখন তাদের ইদ্দত অনুসারে তাদের তালাক দাও এবং ‘ইদ্দত হিসাব করে রাখবে এবং তোমাদের রব আল্লাহকে ভয় করবে। তোমরা তাদেরকে তোমাদের বাড়ী-ঘর থেকে বের করে দিয়ো না এবং তারাও বের হবে না। যদি না তারা কোন স্পষ্ট অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়। আর এগুলো আল্লাহর সীমারেখা। আর যে আল্লাহর (নির্ধারিত) সীমারেখাসমূহ অতিক্রম করে সে অবশ্যই তার নিজের ওপর যুলম করে। তুমি জান না, হয়তো এর পর আল্লাহ, (ফিরে আসার) কোন পথ তৈরী করে দিবেন।
এখানে ও স্ত্রী কর্তৃক স্বামী তালাকের কোনো কথা বলেন নাই।
তালাক শরীয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তালাক সম্পর্কে বলেছেন তালাক অপেক্ষা ঘৃনার জিনিস আল্লাহ তায়ালা আর সৃষ্টি করেন নি হযরত আলী হতে বর্ণিত নিম্নোক্ত বাণী হতে তালাকের ভয়াবহতা উপলদ্ধি করা যায়।তোমরা বিয়ে কর কিন্তু তালাক দিয়োনা কেননা, তালাক দিলে তার দরুন আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠে।
(১) আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বর্ণনা করেন যে, তিনি তার স্ত্রীকে হায়েয অবস্থায় তালাক দিয়েছিলেন। ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এ কথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর গোচরীভূত করলে তিনি খুব নারায হয়ে বললেনঃ তার উচিত হয়েয অবস্থায় তালাক প্রত্যাহার করে নেয়া এবং স্ত্রীকে বিবাহে রেখে দেয়া। (তালাকটি রাজয়ী তালাক ছিল, যাতে প্রত্যাহারের সুযোগ থাকে) এই হায়েয থেকে পবিত্র হওয়ার পর আবার যখন স্ত্রীর হায়েয হবে এবং তা থেকে পবিত্র হবে, তখন যদি তালাক দিতেই চায়, তবে সহবাসের পূর্বে পবিত্র অবস্থায় তালাক দিবে। এই ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে তালাক প্রদানের আদেশই আল্লাহ তা’আলা (আলোচ্য) আয়াতে দিয়েছেন৷ [বুখারী: ৫২৫১, মুসলিম: ১৪৭১।
বর্তমান জমানায় সমাজের ইহুদিবাদ প্রতিষ্ঠা লাভ করায় ঘরে ঘরে তালাক মহামারী আকার ধারণ করেছে।বিশেষ করে মুর্খের বাংলাদেশে।একদিকে খোলা যৌনাচার, মিথ্যাচার, হিন্দুস্থানী বেহায়াপনা, মোবাইল এবং ইহুদিদের ইসলাম বিরোধী আন্তর্জাতিক অভিযান। কথিত নারীবাদীদের হীনমন্যতা ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশের অধিকাংশ পরিবারে অন্তত একটি করে তালাক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে যেহেতু বিবাহ হয় ইসলামের বিধান অনুযায়ী তালাকও হতে হবে পবিত্র ইসলামের বিধান অনুযায়ী। তা না হ’লে কোনোভাবেই সেই নারীকে বিবাহ করা জায়েজ হবে না।
এই হাদিসে ও স্ত্রী কর্তৃক স্বামী তালাকের কথা বলেন নাই।
জীবনে চূড়ান্ত বিপর্যয় থেকে স্বামী স্ত্রী উভয়কে রক্ষার জন্য ইসলামে তালাকের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে যখন চরমভাবে বিরোধ দেখা দেয়,পরস্পর মিলে মিশে স্বামী স্ত্রী হিসেবে শান্তিপূর্ণ ও মাধুর্যমণ্ডিত জীবন যাপন যখন একেবারেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়,পারস্পারিক সম্পর্ক যখন হয়েপড়ে তিক্ত,বিষাক্ত,একজনের মন যখন অপরজন থেকে এমন ভাবে বিমূখ হয়ে যায় যে,তাদের শুভ মিলনের আর কোন সম্ভাবনা থাকেনা; ঠিক তখনই এই চূড়ান্ত পন্থা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ইসলামে। তালাক হচ্ছে নিরুপায়ের উপায়। স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে বেঁধে রাখার শেষ চেষ্টাও যখন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় তখনও তালাক ঘোষণার কোন পদ্ধতি বলা হয়নি। মুসলিম পারিবারিক আইনে বলা হয়েছে- “কোন পুরুষ তাহার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাহিলে তাহাকে মুসলিম আইনে অনুমোদিত যে কোন পদ্ধতিতে ঘোষণার পরই তিনি তাহার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন এ মর্মে চেয়ারম্যানকে লিখিত ভাবে নোটিশ প্রদান করবেন এবং স্ত্রীকেও উহার নকল দিবেন” অর্থাৎ তালাক প্রদান বা ঘোষণার ক্ষেত্রে ইসলামী শরীয়তের প্রবর্তিত পদ্ধতিই হচ্ছে মুসলিম পারিবারিক আইনের পদ্ধতি। তাই শরীয়ত প্রবর্তিত তালাক সংক্রান্ত বিধানাবলি ভালভাবে জানা ও বুঝা খুবই জরুরী। বিশেষ করে নিকাহ রেজিস্ট্রারদের এ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরী।
৬৫:২ فَاِذَا بَلَغۡنَ اَجَلَهُنَّ فَاَمۡسِکُوۡهُنَّ بِمَعۡرُوۡفٍ اَوۡ فَارِقُوۡهُنَّ بِمَعۡرُوۡفٍ وَّ اَشۡهِدُوۡا ذَوَیۡ عَدۡلٍ مِّنۡکُمۡ وَ اَقِیۡمُوا الشَّهَادَۃَ لِلّٰهِ ؕ ذٰلِکُمۡ یُوۡعَظُ بِهٖ مَنۡ کَانَ یُؤۡمِنُ بِاللّٰهِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ ۬ؕ وَ مَنۡ یَّتَّقِ اللّٰهَ یَجۡعَلۡ لَّهٗ مَخۡرَجًا ۙ﴿۲﴾فاذا بلغن اجلهن فامسکوهن بمعروف او فارقوهن بمعروف و اشهدوا ذوی عدل منکم و اقیموا الشهادۃ لله ذلکم یوعظ بهٖ من کان یؤمن بالله و الیوم الاخر ۬ و من یتق الله یجعل لهٗ مخرجا ۙ﴿۲﴾
অতঃপর যখন তাদের (‘ইদ্দাতের) সময়কাল এসে যায়, তখন তাদেরকে ভালভাবে (স্ত্রী হিসেবে) রেখে দাও, অথবা ভালভাবে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দাও। আর তোমাদের মধ্যেকার দু’জন ন্যায়পরায়ণ লোককে সাক্ষী রাখ। তোমরা আল্লাহর জন্য সঠিকভাবে সাক্ষ্য দাও। এর দ্বারা তোমাদেরকে উপদেশ দেয়া হচ্ছে যারা আল্লাহ ও আখিরাত দিবসের প্রতি ঈমান রাখে। যে কেউ আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য (সমস্যা থেকে উদ্ধার পাওয়ার) কোন না কোন পথ বের করে দিবেন।
কয়জন কাজি পবিত্র কোরআন এর এই আয়াত জানেন!
স্বামীর তালাক বিহীন ডিভোর্সী মেয়ে বিবাহ করা হারাম । স্বামীর অনুমতি না থাকলে স্ত্রী কখনও তালাক দিতে পারবেন না। ইসলামে হালাল কাজের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাজ হল ডিভোর্স দেওয়া। ডিভোর্সের কারণে আল্লাহর আরশ কেঁপে ওঠে। এই ৩ টি কারন ছাড়া ইসলামে স্ত্রীরা স্বামী তালাক করার অধিকার রাখেনা এই ৩ টি কারন ছাড়া স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিলে ইসলামে ওই তালাক গ্রহনযোগ্য হয়না
১. স্বামী সহবাসে অক্ষম হলে অতপর চিকিৎসায় ব্যার্থ হলে।
এটার পরেও রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নারীদেরকে কিছুটা ধৈর্য ধারন করতে বলেছেন
২. স্বামী ইসলাম বিরোধী কোন কাজে লিপ্ত থাকলে।
৩. স্বামী জোর পুর্বক ইসলাম ত্যাগ করতে বললে। উপরোক্ত কারণ ছাড়া অকারণে তালাক কামনাকারী নারী জাহান্নামে যাবে (তিরমিজি ১১০৮) ইসলামে স্ত্রী তার স্বামীকে সরাসরি তালাক দেওয়ার অধিকার দেইনি তাহলে বর্তমানে মেয়েরা কোন ধর্ম অনুসরণ করে আদালত কর্তৃক স্বামীকে কারণে অকারণে ডিভোর্স দিচ্ছে। যা ইসলাম, কোরআন ও হাদিসের আলোকে বৈধ নয় । বিবাহ যেমন কোরআন ও হাদিস অনুসারে হয় তেমনি ডিভোর্স ও কোরআন ও হাদিস অনুসারে হতে হবে । যে সব পুরুষ স্বামীর তালাক বিহীন ডিভোর্সী মেয়ে বিবাহ করবে সেই বিবাহ ইসলামিক ভাবে বৈধ নয় , এই রকম ডিভোর্সী মেয়ে যারা বিবাহ করে বসবাস করবে সারা জীবন জেনা ব্যবিচার করবে এবং তাদের মিলনের ফলে যত সন্তান হবে সব হবে জারজ সন্তান এবং হাশরের ময়দানে জেনার কাতারে দাঁড়াতে হবে । আদালত কর্তৃক ডিভোর্স হচ্ছে গণতন্ত্রের আইন । মহান আল্লাহ বলেছেন – “তোমরা কাফেরদেরকে অনুস্বরন করোনা যদি করো তাহলে তোমরা তাদের অন্তর্ভূক্ত হবে “
মোহাম্মদ (স) বলেছেন যে সব মেয়ে স্বামীর কাছে তালাক চায় অথবা স্বামীকে তালাক দেয় সেই সব মেয়ে জান্নাতের সুগন্ধিও পাবেনা “ সহিহ মুসলিম । মা , বাবা, ভাই বোনের কু পরামর্শ , অহংকার , জিদ, অধিক দেন মোহরের লোভ , মেয়ের পরকিয়া প্রেম , স্বামীর সম্পত্তির লোভ , দুনিয়াবী নারীবাদী আইনের কারনে মেয়েরা স্বামীকে ডিভোর্স দিচ্ছে । এদের প্রতি মহান আল্লাহর নালত । এদের বিবাহ করা হারাম হারাম । যে মেয়ে একটি পরিবার ধ্বংস করে আসে সে মেয়ে আরেকটি পরিবারের জন্য কখনও ভাল হয়না । স্বামীর অবাধ্য স্ত্রী জাহান্নামী । ডিভোর্সী মেয়ে বিয়ে করা সুন্নত ঠিক। কিন্তু ধর্মের আইন মানেনা এমন মেয়েকে বিবাহ করা সুন্নত নয়।
এতকিছুর পরও যদি পুরুষের দোষের কারণে ই তালাক হয়ে থাকে তো সে নারীর সম্মান আল্লাহ পাক অবশ্যই রক্ষা করবেন, তাঁকে হেফাজত করবেন।
এসব কারণে চিন্তা ভাবনা করে পাত্রপাত্রী নির্বাচন করা প্রয়োজন। নামাজ পড়ে আল্লাহ পাক এর সাহায্য কামনা করলে আল্লাহ পাক কাউকেই বিপদে ফেলেন না।