মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান: প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করলে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দণ্ডবিধি আইন-১৮৬০-এর ৪৯৪-এর বিধানমতে মামলা করতে পারেন। এ সময় স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের কাবিননামা আদালতে দেখাতে হবে। স্বামীর অপরাধ প্রমাণিত হলে শাস্তি হবে।
এখন আপনাকে প্রমাণ করতে হবে যে, আপনার স্বামী অপরাধ করেছেন।বাংলাদেশের কোনো আইনে ই লেখা নাই যে,প্রথম স্ত্রী অযোগ্যা হলেও দ্বিতীয় বিয়ে করবার সময় তার অনুমতি নিতে হবে,কিংবা অত্যাচারী স্বৈরশাসক হলেও দ্বিতীয় বিবাহ করা যাবে না ।
আইনে বলা আছে যদি কেউ দ্বিতীয় বিয়ে করতে চায় তাহলে এলাকার চেয়ারম্যানের কাছে অনুমতি চাইতে হবে। যদি চেয়ারম্যান সাহেব অনুমতি না দেন বা স্বামী দরখাস্ত না করে বা স্ত্রীর লিখিত অনুমতি না নিয়ে বিবাহ করে ই ফেলেন তাহলে এমন কোনো কথা আইনে লেখা নাই যে স্বামীর আদালতে শাস্তি হবেই হবে ।
প্রথম স্ত্রী মামলা করলে তাকে প্রমাণ করতে হবে যে তিনি নিজেই স্ত্রী হিসেবে স্বচ্চরিত্রবান,শারিরীকভাবে যোগ্য এবং স্বামীর শারিরীক মানসিক সকল বিষয়ে সফল, উদাসীন নন। তিনি স্বামীর অর্থ সম্পদের বিষয়ে সৎ এবং হালাল। সন্তানের বিষয়ে সফল। আর স্বামী অসচ্চরিত্রবান।
স্বামী যদি আদালতে বলেন, তার স্ত্রী বন্ধা, শারীরিকভাবে, দুর্বল উদাসীন , দাম্পত্য জীবন সম্পর্কিত শারীরিক অযোগ্য,ঝগড়াঝাটি করেন, অলস, দাম্পত্য অধিকার পুনর্বহালের জন্য আদালত থেকে প্রদত্ত কোনো আদেশ বা ডিক্রি বর্জন করে থাকেন , মানসিকভাবে অসুস্থ,অর্থ সম্পদে অসৎ, সারাদিন রাত মোবাইল টিপাটিপি করেন, দুর্ব্যবহার, পরকিয়া ইত্যাদি তে লিপ্ত তাহলে স্বামীর শাস্তি হবে এমন চিন্তা করা ভুল।
আইন টি নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যথেষ্ট ভুল ধারণা আছে।
তবে দ্বিতীয় বিয়ে করলে সব স্ত্রীরাই কাবিনের টাকা চাইতে পারেন। আবার কাবিনের টাকা পরিশোধ করার পর সব স্ত্রীদের তালাক ও দেয়া যাবে।স্ত্রী রা ও স্বামী কে বারবার তালাক দিয়ে বারবার সাদী মোবারক করতে পারবেন। তবে স্ত্রীরা গোপনে বা প্রকাশ্যে একবারে তালাক না দিয়ে একাধিক স্বামী রাখতে পারবেন না।
শাস্তি হতে পারে যদি স্বামী নিজেকে ধোয়া তুলসীপাতা প্রমান করতে না পারেন অথবা স্ত্রী নিজেকে পুজার ফুল প্রমাণ করতে পারে তাহলে। শাস্তি হবেই হবে তা বলতে পারেন মাননীয় আদালত।
দেখি পবিত্র ইসলাম কি বলে —
দ্বিতীয় বিয়ের জন্য প্রথম স্ত্রীর অনুমতি জরুরী নয়। অনুমতি ছাড়া বিয়ে করলেও তা শুদ্ধ হয়ে যাবে।
তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে, ইসলাম একাধিক বিয়ের অনুমতি তখনি প্রদান করেছে, যখন উভয় স্ত্রীর হক সমানভাবে, কোন প্রকার বৈষম্য ছাড়া আদায় করতে পারবে, তখন।
সাম্যতা বজায় রাখতে না পারলে, কিংবা হক আদায় করতে না পারলে দ্বিতীয় বিবাহ করা জায়েজ নয়।
فَانكِحُوا مَا طَابَ لَكُم مِّنَ النِّسَاءِ مَثْنَىٰ وَثُلَاثَ وَرُبَاعَ ۖ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تَعْدِلُوا فَوَاحِدَةً [٤:٣]
সেসব মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভাল লাগে তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারটি পর্যন্ত। আর যদি এরূপ আশঙ্কা কর যে, তাদের মধ্যে ন্যায় সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে পারবে না, তবে, একটিই [সূরা নিসা-৩]