ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিনের কারাবন্দি অবস্থায় হাসপাতালে থেকে জুম মিটিংয়ের অভিযোগে ৮ কারারক্ষীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কারা কর্তৃপক্ষ তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটি আগামী সাত কাযদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবে।
গতরাতে আইজি প্রিজন্স ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন জানান, ‘তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিভাবে কি ঘটেছে সেটা তদন্ত কমিটি তদন্ত করে দেখবে। ৮ কারারক্ষীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
গত দুই মাস ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রিজন সেলে ডায়াবেটিসজনিত অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে চিকিৎসাধীন আছেন ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমিন।
রফিকুল আমিন কারাবিধি ভেঙ্গে জুম মিটিং করেন এমন তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এর পর পরই বিষয়টি আলোচনায় আসে। আইজি প্রিজন্স এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘কবে কিভাবে তিনি এমন কাজ করলেন সেটি আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। তদন্ত কমিটি তদন্ত করে নিশ্চিত করবে।’ কারা সূত্র জানায়, তদন্তে প্রমাণিত হলে রফিকুল আমিনের বিরুদ্ধে কারাবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জুম মিটিংয়ের রেকর্ড করা ভিডিওতে রফিকুল আমিনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। মিটিংয়ের ভিডিওতে তাকে ‘মিস্টার এ’ নামে দেখা গেছে, প্রোফাইল ছবিতে লেখা ছিল ইংরেজি হরফ ‘আর’। এতে ডেসটিনির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাও যুক্ত ছিলেন। জুম মিটিংয়ের সাম্প্রতিক কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, নতুন এমএলএম ব্যবসার জন্য শিগগির এক হাজার ৩০০ মার্কেটিং এজেন্ট নিয়োগের কথা বলছেন তিনি। এছাড়া নতুন ব্যবসায় ধীরগতির বিষয়ে মিটিংয়ে রফিকুল আমিন বলেন, ‘কেরানীগঞ্জে (কারাগারে) যাওয়ার কারণে সেই কাজটা পিছিয়ে গেছে।’ এক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জেলে থেকে কোরআন-হাদিসের অনেক জ্ঞান নিয়েছি।’
রফিকুল আমিন কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা অবস্থায় এপ্রিলে অসুস্থ হয়ে পড়েন । পরে তাকে বিএসএমএমইউর প্রিজন সেলে স্থানান্তর করা হয়। অসুস্থতার অজুহাত কাজে লাগিয়ে তিনি কারা তত্ত্বাবধানে থেকেও ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। হাসপাতালে তার নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেন দু’জন কারারক্ষী।
২০১২ সালের ৩১ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমিন ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই বছরের অক্টোবরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে চারবার ১১৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও ৯৬ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে।