বিদায় নিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সদরের ইউএনও নাহিদা বারিক। মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বিদায় সংবর্ধনায় অনেকেই তার সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর দক্ষতার সঙ্গে তা পালনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন তিনি। সে কারণে বিদায় বেলায় সাধারণ মানুষ অনুষ্ঠান মঞ্চে এসে তাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। আর ইউএনওর কান্নায় অনুষ্ঠানে হৃদয় বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
ইউএনও নাহিদা বারিকের বিদায় উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিসহ সব পেশার মানুষ কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। করোনার এক বছর নাহিদা বারিক যেভাবে মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন তা অতীতে কোনো কর্মকর্তা করেনি। আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিন রাত পরিশ্রম করে সবার ভালোবাসার পাত্রে পরিণত হয়েছেনে তিনি। যার কারণে বিদায় বেলায় সবার সঙ্গে নিজেও কেঁদেছেন।
ইউএনও নাহিদা বারিক তার বক্তব্যে বলেন, যেখানে যতটুকু, চেষ্টা করেছি কাজ করার জন্য। আপনাদের সকলের টিম ওয়ার্ক, ভালোবাসা ও সহযোগিতা পেয়েছি বলেই কাজ করতে পেরেছি।
তিনি জানান, রাজধানীতে তার বাড়ি থাকা সত্ত্বেও দুই বছর ১৭ দিন তার দায়িত্ব পালনের এই সময়ে একটি রাতের জন্যও তিনি স্টেশন ছাড়েননি। এর আগে ডিসি অফিসের ম্যাজিস্ট্রেট, সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বিদায় নিলেও এত খারাপ লাগেনি ইউএনও হিসেবে বিদায় বেলায় যতটুকু খারাপ লাগছে। আপনাদের ভালোবাসা ও সহযোগিতার কথা কখনও ভুলব না। সারাজীবন আপনাদের মনে থাকবে। এই সময়ে হয়ত আরও অনেক কাজ করতে পারতাম, যেগুলো করতে পারিনি।
কাজ করতে গিয়ে ভুল-ত্রুটি হলে সেগুলোর জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন তিনি। বলেন, আপনাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ভালো যতটুকু কাজ করতে পেরেছি সেগুলোর কৃতিত্ব আপনাদের। আর ভুল ও ব্যর্থতার সকল দায় ভার আমার।
বিদায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেন, সারাদেশে নাহিদা বারিকের মতো ইউএনও থাকলে দেশের চেহারা পাল্টে যেত। তিনি দায়িত্ব পালনকালে সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে মানুষের জন্য কাজ করছেন। তিনি যেখানে থাকবেন সফলভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
তিনি ইউএনও নাহিদা বারিকের সফলতার তথ্য তুলে ধরে নারায়ণগঞ্জের ডিসি হিসেবে পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
২০১৯ সালের ২৭ মার্চ নারায়ণগঞ্জ সদর ইউএনও হিসেবে যোগদান করেন নাহিদা বারিক। এর আগেও তিনি এই জেলার বন্দর উপজেলা ও সদরের ফতুল্লা রাজস্ব অঞ্চলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।