আলোচিত ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ইভ্যালিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণ আইন ও জাতীয় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা সঠিকভাবে মেনে ব্যবসা পরিচালনা করার নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দিয়েছে। এছাড়া, নীতিমালা অনুযায়ী কোম্পানিটিকে বলা হয়েছে ক্যাশ অন ডেলিভারি পদ্ধতি অনুসরণ করতে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত ৪ মার্চ স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেলের কাছে পাঠিয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইভ্যালির বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এবং দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর বিভিন্ন ধারা লঙ্ঘন করার তথ্য উঠে আসার পর এ চিঠি পাঠালো,পুলিশ সদর দপ্তরের একটি তদন্ত প্রতিবেদনে।বিদ্যমান দু’টি আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো লঙ্ঘনের দায়ে তিন বছর পর্যন্ত করাদণ্ডাদেশের বিধান রয়েছে।
তিনি যোগ করেন ‘জাতীয় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী ই-কমার্স সহজীকরণ এবং ভোক্তা ও ব্যবসায়ী উভয়পক্ষের অসন্তোষ নিরসনের স্বার্থে ক্যাশ অন ডেলিভারি পদ্ধতি অব্যাহত রাখতে ইভ্যালিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে’।
অগ্রিম মূল্য নেওয়ার পর সময়মত পণ্য ডেলিভারি না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ইভ্যালির বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে পুলিশ সদরদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদনে ইভ্যালির বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৪৫ ও ৫৩ ধারা লঙ্ঘনের করার কথা বলা হয়েছে।
এ দু’টি ধারা অনুযায়ী কোন ব্যক্তি প্রদত্ত মূল্যের বিনিময়ে যথাযথভাবে প্রতিশ্রুত পণ্য সরবরাহ না করলে এক বছরের কারাদণ্ড এবং সেবা প্রদানকারীর অবহেলা ও দায়িত্বহীনতায় সেবাগ্রহীতার অর্থ বা স্বাস্থ্যহানি ঘটলে তিন বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড হতে পারে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়ে ইভ্যালির বিরুদ্ধে আর্থিক ব্যবস্থাপনার ত্রুটি খতিয়ে দেখতে চিঠি দিয়েছে।বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইভ্যালি প্রতিমাসে কি পরিমাণ পণ্যের অর্ডার সংগ্রহ করছে এবং কি পরিমাণ পণ্য ডেলিভারি দিচ্ছে, তা মনিটরিং করতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়েছে।
‘বাংলাদেশে ই-কমার্সখাতের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে কোম্পানিগুলোকে ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করতে হবে। ক্রেতার আস্থা অর্জনে সময়মত সঠিক পণ্য ডেলিভারি দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য আমরা ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা, ২০২১’ প্রণয়ন করছি’, বলেন মো. হাফিজুর রহমান।
‘২১ মার্চ কনসালটেশন মিটিংয়ের পর আগামী মাসের মধ্যেই নির্দেশিকাটি জারি হবে। ইভ্যালিসহ ই-কমার্সখাতের সকল কোম্পানিকে ওই নির্দেশনা মেনে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে।’ অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করা পণ্য একই শহরের মধ্যে হলে সর্বোচ্চ পাঁচ দিনের মধ্যে এবং ভিন্ন শহর বা গ্রামে হলে ১০ দিনের মধ্যে ডেলিভারি করতে হবে। আর ক্যাশ অন ডেলিভারি ও আংশিক ক্যাশ অন ডেলিভারির ক্ষেত্রে একই শহরে সর্বোচ্চ সাত দিন এবং ভিন্ন শহর বা গ্রামে হলে সর্বোচ্চ ১৫ দিনের মধ্যে তা সরবরাহ করতে হবে।এই সময়ের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি না পেলে ক্রেতা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে, এক্ষেত্রে কোম্পানিকে পণ্যমূল্যের দ্বিগুণ অর্থ জরিমানা দিতে হবে।