কঠোর লকডাউনের খবরে নিম্ন আয়ের মানুষ ঢাকা ছাড়ছেন। তারা বলছেন, জীবন-জীবিকার তাগিদে ঢাকায় এলেও অনিশ্চয়তা নিয়ে আবার ফিরে যাচ্ছেন পরিবারের কাছে। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় ট্রাকে গাদাগাদি করে ছুটছেন গন্তব্যে। এদিকে বাস টার্মিনালে মিলছে ভাড়ায় প্রাইভেটকার।
যারা ঢাকা ছাড়ছে তারা বলেন, ট্রাক দিয়ে যাব তবে ভাড়া অনেক চায়। সামনের লকডাউনে নাকি গাড়িও চলতে দেবে না। তাই গ্রামে চলে যাচ্ছি।
হাঁকডাক জটলা দেখলে মনে হবে ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরার তাড়া। শত শত মানুষের ভিড়। এদের কেউ দিনমজুর, কেউ রিকশাচালক, আবার কেউ নির্মাণশ্রমিক। প্রায় সবার গন্তব্য উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়। দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ তাই শেষ ভরসা পণ্যবাহী ট্রাক।
ট্রাক চালকরাও সুযোগ বুঝে চড়া দাম হাঁকছেন। তাই রাত বাড়ে কিন্তু নিম্ন আয়ের এসব মানুষের অপেক্ষার পালা শেষ হয় না। তারা বলেন, মাত্র এক মাস আগে ঢাকায় ফিরেছিলাম। এখন আবার লকডাউন দিয়েছে। তাই আবার ফিরে যাচ্ছি।
একই চিত্র গাবতলী বাস টার্মিনালে। স্বাভাবিক সময়ে সরগরম থাকলেও সরাসরি বাস টার্মিনালের ভেতরে দাঁড়িয়ে আছে। তাই অপেক্ষারত যাত্রীদের যেতে হবে ভাড়ায় চালিত প্রাইভেটকারে।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড ও যাত্রাবাড়ী, উত্তরার আব্দুল্লাহপুর, গাবতলী এলাকায় ভাড়ায় প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাসগুলো বিভিন্ন জেলায় অতিরিক্ত ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করছে। সাইনবোর্ড থেকে চট্টগ্রাম ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, সিলেট, ভৈরব-কিশোরগঞ্জ যাত্রী পরিবহন করছে ঐ সব গাড়ি। যেখানে আন্তঃজেলা বাসগুলোর ভাড়া ছিল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, সেখানে এসব গাড়ি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় জনপ্রতি ভাড়া আদায় করছে।
করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে কঠোর লকডাউন। এখন পর্যন্ত সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী কারখানা খোলা থাকলেও এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকবে স্বাভাবিক চলাচল।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিটাগাং রোড এলাকায় দেখা যায়, মানুষ নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য বাস ও লেগুনাগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে ধাক্কাধাক্কি করে উঠছেন। গত ৫ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এক সপ্তাহের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল সরকার। কিন্তু সেটি মানছে না সাধারণ মানুষ।