বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, নেতাকর্মীদের ‘গুম-খুনের’ প্রতিবাদ এবং ‘সরকার পতনের’ আন্দোলনে প্রেরণা যোগাতে জাতীয় কবি নজরুল ইসলামই ‘সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক’ বলে মন্তব্য করেছেন ।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখন দেশে ফ্যাসিবাদী বাস্তবতা। তিনি বলেন, ‘অন্যায়, অত্যাচার, নিপীড়ন বিরুদ্ধে মানুষকে জাগিয়ে তোলে নজরুল। আমরা যদি নজরুলকে এই সময়ে স্মরণ করি আরও বেশি অনুপ্রাণিত হব।’
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘নজরুলের রাজনীতি : বাংলাদেশের রাজনীতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকে নজরুল ইসলামকে ইগনোর (উপেক্ষা) করা হয়। বাংলা সাহিত্যের পাঠ্যক্রমের মধ্যে তার বই থাকে না, কবিতা থাকে না। আমি লক্ষ্য করেছি, ইলেক্ট্রনিক চ্যানেলগুলোতে নজরুল ইসলামের গান খুবই কম সম্প্রচার করা হয়। রেডিওতে কী হয় আমি বলতে পারব না।
“আপনি দেখবেন যে, পত্র-পত্রিকাগুলোতে নজরুল ইসলামের জন্মদিন অথবা মৃত্যবার্ষিকীকে যে ক্রোড়পত্র বের হত, সেটাও বোধ হয় আজকাল বেশি হয় বলে মনে হয় না, আমি দেখি না। এটা হচ্ছে চরম সংকীর্ণতা।”
ফখরুল আরও বলেন, যখন ভোলাতে নূরে আলমকে গুলি করে হত্যা করা হয়, যখন ইলিয়াস আলীকে গুম করা হয়, অথবা সব নেতা–কর্মীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়, যখন খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে বন্দী করে রাখা হয়, তারেক রহমানকে বিদেশে নির্বাসিত করে রাখা হয়, তখন কাজী নজরুলকে অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক মনে হয়। তাঁকে অনুসরণ করতে ইচ্ছে হয়।
অনুষ্ঠানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান কাজী নজরুলকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু তাঁকে নাগরিকত্ব দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান বুঝেছিলেন তাঁর গান, চিন্তা, দর্শন ও সুর দেশের মাটি থেকে উৎসারিত হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কবি আবদুল হাই শিকদার। তিনি বলেন, এই সরকার সম্পূর্ণরূপে গণবিরোধী। এই সরকারের আমলে আমাদের নজরুল চর্চার সব দরজা বন্ধ হয়ে গেছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসে নজরুল নাই। এমনভাবে সিলেবাস করা যে কেউ নজরুলকে টাচ না করেও প্রথম হতে পারে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন মাহবুব হাসান। কবিতা আবৃত্তি করেন কামাল বিনা ও শাহনাজ পারভীন। এ সময় আরও বক্তব্য দেন নাট্যকার বাবুল আহমেদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইফতেখার আলম মাসুদ প্রমুখ।
নজরুল গবেষক আবদুল হাই শিকদার, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের মহাসচিব হুমায়ুন কবির ব্যাপারী, বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মাহবুব হাসান, জসিম উদ্দিন, বাবুল আহমেদ, ইফতেখার আলম মাসউদ, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মজিবর রহমান সভায় বক্তব্য দেন।