নিজের দলকে বড় জয়ের দিকে এগিয়ে দিতে পারলেও নিজের আসনে পারেননি তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রামে বহু নাটকীয়তার পর খবর এসেছে হেরে গেছেন মমতা। ফলে তৃণমূলের টানা তৃতীয়বারের মতো পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় যাওয়া নিশ্চিত হয়ে গেলেও প্রশ্ন উঠেছে দলের নেত্রী মমতা আবার মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন কি-না, তা- নিয়ে।
বিধানসভার মোট আসন ২৯৪টি। এর মধ্যে ২০৯টি আসন পেয়ে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। অপরদিকে ৮০টি আসন পেয়েছে বিজেপি।
আসন সংখ্যায় তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও কঠিন চ্যালেঞ্জে পড়েছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়।
ভারতের সংবিধানের আর্টিকেল ১৬৩ ও ১৬৪ অনুযায়ী, কাউকে মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্যের মন্ত্রিপরিষদের সদস্য হতে চাইলে বিধানসভার সদস্য হতে হবে। ওই ধারায় বলা হয়েছে, রাজ্যের বিধানসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতারাই মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করবেন। আরও বলা হয়েছে, টানা ছয় মাস মন্ত্রী কিংবা মুখ্যমন্ত্রী থাকতে গেলে তাকে রাজ্যের কোনো একটি আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। অন্যথায় ১৮০ দিন পর তার পদ বাতিল হয়ে যাবে। আর বিধানসভার সদস্য না হয়েও কেউ যদি মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেন, তবে তাকে সংশ্লিষ্ট রাজ্যপালের অনুমতি নিতে হবে।
কেউ হেরে যাওয়ার পরও তার দল যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় এবং দলের নির্বাচিত সদস্যরা যদি তাকে নেতা নির্বাচিত করেন, তাহলে তার মুখ্যমন্ত্রী হতে আইনগত কোনো বাধা নেই।
তবে ভোটে না জিতেও মুখ্যমন্ত্রী হলে তাকে ওই পদে বসার ১৮০ দিনের মধ্যে কোনো একটি আসন থেকে জিতে আসতে হবে। তা না পারলে ছেড়ে দিতে হবে পদ।
ভারতীয় পত্রিকাগুলো বলছে, পশ্চিমবঙ্গের দুবারের মুখ্যমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত এই আসনে হেরে গেলে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তাকে ঘিরে বিরোধীদের বৃহত্তর জোটের যে পরিকল্পনা দানা বাঁধছিল, তা মুখ থুবড়ে পড়বে বলে অনেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কেবল তাই নয়, মমতা যদি হেরেই যান, আর তার দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়, সেক্ষেত্রে তৃণমূল কাকে মুখ্যমন্ত্রী করবে তা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা।
মমতা মুখ্যমন্ত্রী হতে না পারলে তার ভাইপো অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে এ পদে দেখা যেতে পারে। আবার প্রার্থীর মৃত্যুতে বেশ কয়েকটি আসনে ভোট স্থগিত থাকায় এবং একটি আসনে তৃণমূলেরই মৃত প্রার্থী এগিয়ে থাকায় মমতাকে জিতিয়ে আনার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার ২৯৪ আসনের মধ্যে দুটির ভোটগ্রহণ প্রার্থীর মৃত্যুতে স্থগিত রয়েছে। ফলে এর একটি আসনে ছয় মাসের মধ্যে জিতে এলেই মমতার মুশকিল সহজ হতে পারে। সে হিসেবে স্বাভাবিকভাবে মমতাকেই তৃতীয় মেয়াদে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পেতে পারে পশ্চিম বাংলার জনগণ।