সকালে উঠিয়া কেহ কহে মনে মনে
সারাদিন কি হবে কি জানি কে জানে!
সকালে উঠিয়া কেহ রহে অনাহারী
কারো কাছে খানা মোটে নহে দরকারী।
কারো ভোর হয়,রবি মধ্য আকাশে
কেহ এবাদতে,ভাসে ‘ভোরের বাতাসে’।
দিবসে নিদ্রামগ্ন সারারাত জাগা
এবাদতে নহে সে বড়ই অভাগা।
নামাজ কামাই ক’রে মাহফিল করে
আমলনামায় পাপী পাপই শুধু ভরে।
পাপের পাহাড়ে চ’ড়ে পাপীর বয়ান,
শুনো না,কর্ণে তুলো দাও জনগণ।
জটিল নামাজ যার সে হেদাতী নয়,
কুটিল না পায় কভু পরকালে ভয়।
নাপাক না যাক ভুলেও জায়নামাজে,
না পাক নাপাক সুযোগ খোদার কাজে।
ইবলিশ বহুরূপী নিজ রূপ নাই,
মোনাফেক ইবলিশ জাত ভাই ভাই।
আত্মা সস্তা, যার আত্মশুদ্ধি নাই
আত্মশুদ্ধিবিহীন এবাদত অযথাই।
যথার্থ ব’লে যাও যা বলুক লোকে
কিছু তো প্রচার হবে লোকের মুখে।
অধিক বাক্যপ্রয়োগকারী বুদ্ধিদীপ্ত নয়
বাঁচাল প্রকৃতপক্ষে মিথ্যাবাদী ই হয়।
অধিক শক্তি প্রয়োগকারী শক্তিশালী নয়
সিংহ শক্তিশালী তারে মানুষ কে বা কয়?
চালাকের কন্ঠে দড়ি লোকের টানাটানি
অমানুষ ধনকুবের নয় তো সে সম্মানী ।
অহংকারের ভাব কথনে মন্দ মানুষ তারা
বাকরুদ্ধ মুখে হাসি সে জন সর্বহারা।
বাকপটু লোক বাক্যবানে বিপদ ডেকে আনে
বাচালের জয়জয়কার হয়েছে কোনখানে?
কামার বাড়ি পড়লে কোরআন মুখ গুঁজে লোক হাসে,
কটুবাক্য প্রয়োগকারী ঘৃণার স্রোতে ভাসে।
মুখ থাকলেই বলতে হবে!মুখ তো সবার আছে ;
মিথ্যাবাদীর মধুর বাক্য মধুর কাহার কাছে ?
ভগ্নাংশের অঙ্ক কষে লয় না কাঁচের জোড়া
পচনধরার পূর্বে কাটো গোদের বিষফোড়া।
কোরাস কন্ঠে বাক্যযুদ্ধে জয়জয়কার কার?
সমাধান চাইলে ধারো গুণীজনের ধার ।
বসন্ত দিন আসলে তবে ফোটে পলাশ ডালে
বাসন্তীরা বলে আবার চুম্ দিয়ে যাও গালে।
বাদলা দিনে বাদ সাধে সব স্বার্থপরের দল
জৈষ্ঠ্যে ছিলো তুষ্ট সকল শোষক পঙ্গপাল।
তোমায় যারা জ্ঞান করে না বিশ্বাস নয় মোটে
মোটের উপর লোকে লোকে বদনাম তার ঠোঁটে।
বিশ্বসভায় গুণী’র কদর থাকবে চিরকাল
মুর্খ লোকের ধারধারিলে করবে নাজেহাল।
বৈদেশিক উপহার হিসেবে আমি পেয়েছিলাম
একটি পরাজিত ঝলমলে বন্দর,
তবে কোন ইচ্ছেই তার সাথে আর যুদ্ধটা হয়নি,
হরেকরকম ফাঁদপাতানো ডুমুরের বনে।
তবে চতুর ও গাণিতিক নিয়ম ধরে বন্দরের সিঁড়িটা
ধীর পায়ে হেঁটে গেছে অসংখ্য লুকানো ফুলের রেনুতে,
আর শতাব্দীর চৌকাঠে রেখেছিলো বাহারী সরল সূত্র।
অপেক্ষা করেছিলো ঢেউ থেমে গেলে একদিন
সব নৌকা যত্রতত্র তার অধীনেই চলে আসবে।
রাত হলে শিয়ালের মতো পাছার নিচে লেজ গুটিয়ে
খুঁজেছে সুখ একশ একটা রকমারী নীল পদ্মে,
ক্ষেত্রফলের ব্যাসার্ধ ঘিরে হিসেব কষে
কক্ষপথের বিলাসী তারায় ঘুরেছে অনেক;
কিন্তু কোথাও মেলেনি তার এই উপগ্রহের মতো সুখ!
প্রতিবারই বিস্মিত অবাক বিস্ময়ে দেখেছি
কিভাবে ভাল থাকে এই অট্টহাসিভরা জীবন,
বহু দিনের বহু ঘন্টার পথ পরিক্রমায় এ ও দেখেছি;
বেলাশেষে বহুমতের সন্দিস্থলে বিভক্ত হয়েছে সবটাই।
একসময় দেখে নিলাম জমকালো ভাবে সরল চোখে
বটগাছের স্বভাবে নেই আর ছায়া দেবার আকাঙ্ক্ষা,
ঝাউবনে নেই আর সেই মাতম ঝড়ো হাওয়া;
বেলাশেষে যে যার কুটিরে হিসেব মেলাতে না পারলে
সদাহাস্যেই পরাজয়কে মাথা নিচু করেই মেনে নেয়।
তবে আমি আমাতে থেমে না থেকে ক্রমাগত
ঊনসত্তুরের গণ আন্দোলনের মতো সারাক্ষণ,
দৌড়ের উপর ব্যস্ত রেখেছি নিজেকে, যেনো;
ভুলের প্যাচে নিঃশ্ব অনাহারে মরতে না হয় ।
নিজের চোখে কখনো তাই খুঁজে দেখিনি
সুখবিলাসের ঝলমলে কোন রূপালী সন্ধ্যা।
ইচ্ছাশক্তি প্রবল থাকা সত্বেও নিক্ষিপ্ত হলাম
সব অশুভংকরের জংধরা দাঁড়িপাল্লায়,
যেদিকে তাকাই সেদিকেই দেখি অচেনা বন্দর!
ও ভয়ংকর চালাকির বিষাক্ত কালো ফাঁদ।
কোন মন্ত্রেই মন আর সাড়া দেয় না নতুন পথের ডাকে
অবিশ্বাস আর অপেক্ষা এমন ঘৃণা এনে দিয়েছে,
যার কারণে একতোড়া গোলাপের মাঝে ও দেখি
খামচে ধরা মরিচিকার মতো একটি রক্তমাখা হাত!
যে সারাক্ষণ ধেয়ে আসছে বাকি নিঃশ্বাস্টুকু কেড়ে নিতে।
জানি কেউ কাঁদবে না মোর বিদায় বেলা,
না চাহি চোখের জলের আহাজারি
না চাহি ফুলের মালা কাড়ি কাড়ি
না চাহি এই দুনিয়ার বিশাল বাড়ি
যখন আর থাকবেনা এই মোহের খেলা।
জানি সবকিছুর চেয়ে ঠুনকো ভালোবাসা,
মানুষের টাকার মোহ,বৃথাই বাঁচার আশা।
জানি মোর গোরস্থানে যাঁরা ই যাবে
কেউ খুব খুশি হবে,কেউ আবার কষ্ট পাবে।
আমি চাই আমার জন্য কষ্ট না পাক,
বেদনা আমার, আমার অন্তরে থাক্।
আমি চাই কেউ না জানুক বিদায় খবর
যেতে চাই সংগোপনে,যেতে চাই চুপিসারে
না আসুক দেখতে আমার দুয়ার ধারে
অজানা ই থাকুক সবার আমার কবর!
তোমরা ভালোবাসো এটাই আসল কথা
বাড়াতে চাই না মায়া আর অযথা।
এই দুনিয়ায় আছে যাদের
নবী-প্রেমের খোশ বরাত
তারাই খুঁজে পাবে রওজায়
রিয়াদ-আল-জান্নাত।
জান্নাতের এক টুকরা প্রভু
দিলেন তাঁহার নবীর শানে
আছে তাহা পাক মদীনায়
রাসূলের পাক রওজার ডানে
সেইখানে সব প্রেমিক এসে
(ও ভাই) কাটায় দিবস রাত।।
নূর নবীজীর সকল কাজের
কেন্দ্র ছিল এই সে জান্নাত
এখান থেকেই বদলে দিলেন
দূর করিলেন সব জুলুমাত
আমরা নবীর উম্মতেরা
এইখানে চাই পড়তে সালাত।।
তোমায় দেখতে এলুম অনেক দিনের পর
তুমি তো দেখলে না মোর
সাগর তীরের আজব গালার ঘর।
যেদিকে উজান চলে,
জীবন চলে মোর,
তুমি যে একলা চলো,আমার ঘুমের ঘোর।
তোমার ছিল নিয়ম করা
একের পর এক ঢেউ,
দুলতে পারে তোমার ঢেউয়ে
এমন ছিল কেউ?
প্রকৃতির নিয়ম করা
আসা যাওয়ার মাঝে,
নিমকহারাম যায় যে ভুলে
ভোলে আপন কাজে।
তুমি এক নিমকহারাম নিজের কাজে
ভুলিলে আমায় মনে রাখলে না যে।
তোমার ঐ চরম প্রেমের হ্যাচকা টানে
কত আর জ্বলবে অনল
কে আর জানে!
কতভাগ বাসলে ভালো ভালোবাসা বলে?
কতভাগ কষ্ট পেলে বেদিলের হিয়া গলে!
বুঝিবে সেদিন,যেদিন সর্বহারা হবে
আমি তো পোক্ত যত অসম্ভবে।
জগত চাহেনা মোরে নাহি মরি বলে
দোষ মোর লাশ হ’য়ে চোখে দেখি বলে।
এক চোখে জল মোর আর চোখ মরু
মরণের দ্বারে তাই জীবনের শুরু।
শেষ বলে কিছু নাই হররোজ ই জাগি
অট্টালিকায় শুয়ে রোজই ভিখ্ মাগী।
বন্ধু বহুত বড়ো নিষ্ঠুরতম
বন্ধু বড়ই বোকা জঘন্যতম।
বন্ধু তখন ই থাকে দরিদ্র হালে,
বেঈমান পায় না ভিখ্ কোনো এককালে।
হারিয়ে সবার মাঝে কোনো একদিন
দেখবো বন্ধু ক’জন খোঁজে প্রতিদিন।
একবার চলে গেলে ফিরিব না আর
বুঝতে পেরেছি হায় কেউ নয় কার।
কতজনে কনকনে শীতে দিনু তাপ
তাই যেন হলো মোর আজন্ম পাপ।
জার্রা স্বার্থ তরে হয় না উদার
অদ্ভূত,বন্ধু বটে! বড়ো বেদনার।
একদিন বেঈমান বুঝিবে যখন
বুক চাপড়াবে শোকে যখন তখন।
মানুষ এমনও হয় বক্তৃতা করে,
কেহ নাহি মোটে তারে বিশ্বাস করে।
অথচ,এবং,আর,অতঃপর সব ই,
পৃথিবীতে সবচেয়ে অসহায় কবি।
দুয়ে দুয়ে চার জানে সবে
সোয়া চার নহে কোনোকালে
হিসাব মেলেনা দুনিয়ায়
মানুষের রঙ বদলালে।
এখন সবই মানি
দুয়ে দুয়ে চার জানি
তিন হ’লে ক্ষতি নেই,
হয়তো শূন্য হবে দুয়ে দুয়ে
ধৈর্যের ফল আসবেই।
কারো ফল বৃক্ষে,কারো কর্মে
কারো ফল বোঝে মর্মে মর্মে,
কারো কর্মের ফল কেউ দেখে না
পাপিষ্ঠ পাপাচারী নিজ ধর্মে।
পূর্ণিমা রাতে কেউ জোছনায় ভাসে
সমাহিত হয় কারো লাশ,
পূর্ণিমা রাতে কেউ ভালোবাসে
কারো উম্মুক্ত কারাবাস।
পাথরের গায়ে লিখেছিলে নাম,
(সেই) পাথর মারিলে ছুড়ে ।
হৃদয়ে যদি লিখিতে সে নাম
ছুড়িতে কেমন করে?
সবকটা বলা কথা আর
সবকটা করা কাজ,
শুধুই বিফলে যায় নি কেবলই
অশ্রু ঝরায় আজ ।
বিস্মৃতি হল দু’যুগের পথ
স্মৃতি হল না হায়,
কিছুতো হারায় জানা অজানায়
কিছুতো রহিয়া যায়।
সেদিনও সময় তড়িৎ চলিত
আজ কেন ধীরগতি?
সরলে, গড়লে, তেলে জলে যেন
“নিয়তি”র ও ভীমরতি ।
কিছু কিছু কথা আর কিছু কাজ
অগোচরে মনে রয়,
হাসির ছলে বলা কথা না কি
আসল কথা নয়।
যৌবন যার হয় না মধুর
বৃদ্ধে হয় কী আর?
যৌবন যার বেদনা বিধুর,
সকলই বিফলে তার ।
অজানার পথে অকারণে হেটে
হয় না পথের শেষ,
অবেলায় জেগে অসময়ে সব
হয়ে যায় নিঃশ্বেষ ।
কূল ভাঙে যার কালের গর্ভে
কাল তো আসেনা ফিরে,
বন্ধুর পথে বন্ধু জোটে না,
ছাউনি বিহীন নীড়ে।
স্বপ্নে দেখি মা’কে আমার তিন রাত্তির ধরে
সাদা-লালপেড়ে পড়ে আসছে আমার ঘরে।
এযাবতকাল যতবারই স্বপ্নে দেখি মা’কে
ততবারই একটা না এক সু-সংবাদ থাকে।
এযাবতকাল যতবারই মরতে মরতে বাঁচি
স্বপ্নে আমার মা এসে কয়’তোমার পাশে আছি’।
এমন আবার হয় নাকি!কেউ মরার পরে এসে
ইঙ্গিতে সতর্ক করে গুরুগম্ভীর হেসে !
মধুর আমার মায়ের হাসি পান খেয়ে ঠোঁট লাল
এই মনে হয় মা’য়ের যেমন সুস্থ জীবনকাল।
আমার মায়ের জীবদ্দশায় আমার বিপদ হ’লে
খোদার কাছে দু’হাত তুলে ভাসতো চোখের জলে।
মা নাই আর কান্নার কেউ এই জগতে নাই
তবুও তো মাঝেমধ্যে স্বপ্নে দেখা পাই ।
আমার বাসার পাশের বাসায় অচেনা লোক থাকে,
দুই তরুণী কোরাস কন্ঠে মা’ মা’ ব’লে ডাকে।
ওদের ডাকে আমার মা’কে মনে পরে ব’লে
যতবারই ডাকে আমি ভাসি চোখের জলে।
এই জগতে মা নাই যার বেঁচে থাকাই বৃথা
মায়ের মতোন বুঝবে কে আর মনের দুঃখ ব্যথা !
মা-বাপ ছাড়া নিষ্ঠুর সব স্বার্থপরের দল
নিতে নিতে সর্বশেষে ও নিবে শেষ সম্বল।