আইএমএফের শর্ত মানতে সরকার গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারের দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার দুপুরে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, আজকে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আইএমএফের শর্ত মেনে নিয়ে একদিকে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে, গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে এবং সেই বাড়ানোর পর দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এখন আবার কৃষকদের যে সার সেই সারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি করা হচ্ছে এবং সেখানে বলা হয়েছে যে, কৃষকদের কষ্ট হবে; কিন্তু উন্নয়নের স্বার্থে তাকে এটা মেনে নিতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কোন উন্নয়ন, কার উন্নয়ন? এই উন্নয়ন হচ্ছে এই শাসকগোষ্ঠী তাদের নিজেদের উন্নয়ন। আজকে এই যে বৈষম্যটা সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশে, একদিকে সেই বিশাল বিশাল অংকের মালিক– তারা বাড়ি-গাড়ি তাদের সমস্ত বিলাস-বৈভব নিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লোপাট করে তারা বিদেশে পাচার করছে এবং বাড়িঘর কিনছে, থাকছে।
‘‘অন্যদিকে আমাদের সাধারণ মানুষেরা তারা দুই বেলা দুই মুঠো খাওয়ার জন্য তাদের সংগ্রাম করতে হচ্ছে, লড়াই করতে হচ্ছে। তাও সে পুরোপুরি পাচ্ছে না। কারণ জিনিসপত্রের দাম তাদের আয়ত্তের বাইরে চলে গেছে।”
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহত, গুম ও নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঈদ উপহার বিতরণ উপলক্ষ্যে এ অনুষ্ঠান হয়।
শিগগিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের যৌথ ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার (২ এপ্রিল) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, চলমান আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কীভাবে সম্পর্ক উন্নয়ন আরও দৃঢ় করা যায় এবং আন্দোলন সংগ্রামকে সামনে এগিয়ে নেওয়া যায়, সে বিষয়গুলো নিয়ে কথা হয়েছে। আশা করি, যুগপৎ কর্মসূচির আন্দোলন আরও বেগবান হবে। অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলের সংখ্যা আরও বাড়াতে পারবো এবং আন্দোলনকে আরও বেগবান করে এই সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, এই সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে দমন করার জন্য গত ১৪ বছর ধরে তারা একই কায়দায় সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ করছে, হত্যা করছে, নির্যাতন করেছে, গ্রেপ্তার করছে, মিথ্যে মামলা দিচ্ছে। বিশেষ করে ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট ব্যবহার করে তারা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সংবাদ মাধ্যমের যে স্বাধীনতা এটা তারা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করছে।
গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বিএনপির কোনো ছন্দপতন নেই উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অনেক কর্মসূচি আছে যার যার দল থেকে করতে পারেন। আবার গণতন্ত্র মঞ্চের ব্যানারেও করতে পারেন। মূল দাবি অর্থাৎ এই সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে দাবি, একইসঙ্গে রাষ্ট্রের যে সংস্কারের কথাগুলো রয়েছে, সে দাবিগুলোতে আমরা একমাত্র রয়েছি।
আলোচিত ইউটিউবার হিরো আলমকে নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের বাহাসের মধ্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানালেন, হিরো আলমকে নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। তার মন্তব্য ছিল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে নিয়ে।
সোমবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
বগুড়া-৪ (নন্দীগ্রাম-কাহালু) আসনের উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। তিনি মহাজোটের প্রার্থী একেএম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে হেরে যান। হিরো আলমের চমকে দেওয়া এই ফলাফল সারাদেশে আলোচনার জন্ম দেয়।
পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার কামরাঙ্গীরচরে এক সমাবেশে বগুড়ার নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
সেখানে তিনি বলেন, ফখরুল সাহেব বলেছেন, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে হিরো আলমকে হারানো হয়েছে। হায়রে মায়া! হিরো আলমের জন্য এত দরদ উঠলো ফখরুলের? ফখরুল ভেবেছিলেন হিরো আলম জিতে যাবে। হিরো আলম এখন জিরো হয়ে গেছে। তারা (বিএনপি) তো নির্বাচন চান নাই। হিরো আলমকে বিএনপি দাঁড় করিয়েছে। জাতীয় সংসদকে ছোট করার জন্য হিরো আলমকে প্রার্থী করেছে বিএনপি। অবশেষে ফখরুলের স্বপ্নভঙ্গ।
এই বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। হিরো আলমও ওবায়দুল কাদেরকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন।
এরপর সোমবার সকালে এই বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের জানান, তিনি হিরো আলম নয়, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে কথা বলেছিলেন।
আজ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিন আহমদের জানাজায় অংশ নেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের এ নেতার জানাজায় অংশ নেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, কিভাবে কর্মী থেকে নেতা হওয়া যায়, মোসলেম উদ্দিনের কাছে তা শেখার রয়েছে।
আরেক আওয়ামী লীগ নেতা বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, চট্টগ্রামের রাজনীতিতে মোসলেম উদ্দিন একজন আইকন বা অথরিটি ছিলেন।
বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচনে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যাওয়া আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
রোববার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ অভিনন্দন জানান।
বগুড়ার নির্বাচন নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য নিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমি হিরো আলমকে অভিনন্দন জানাই। কারণ সে অনেক ভোট পেয়েছে। তাকে এলাকার বিপুলসংখ্যক মানুষ সমর্থন করেছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব তো অনেক কিছুই বলেন। তাই সে কি বলল না বলল তাতে কিছু আসে যায় না। তবে আমি হিরো আলমকে অভিনন্দন জানাই।
এ সময় বিশ্ব গণতন্ত্র সূচকে দেশের ধারাবাহিক অগ্রগতি গণতন্ত্র নিয়ে বিএনপি ও তাদের দোসরদের সমালোচনাকে অসত্য ও অসার প্রমাণ করেছে বলে মন্তব্য করেন হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেব এবং বিএনপি ও তাদের জোটের বিভিন্ন দলের নেতারা বক্তৃতা করে বেড়ান- এ দেশে গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্র হুমকির সম্মুখীন। তারা যখন প্রতিদিন এ কথাগুলো বলে বেড়াচ্ছেন, টেলিভিশনের পর্দা গরম করছেন, জনসভায় মানুষকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করছেন, দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন, তখনই গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) যে গণতন্ত্র সূচক প্রকাশ করেছে সেখানে বাংলাদেশ দুই ধাপ এগিয়ে ৭৩তম স্থানে উন্নীত হয়েছে।’
২০১৮ সাল থেকে প্রতি বছর গণতন্ত্রের সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি হয়েছে উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৮ সালে বাংলাদেশ ৮৮তম, ২০১৯ সালে ৮০তম, ২০২০ সালে ৭৬তম, ২০২১ সালে ৭৫তম এবং ২০২২ সালে ৭৩তম স্থানে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ বিএনপি নেতারা যে বক্তব্যগুলো রাখেন সেগুলো যে মিথ্যা অসার, সেটিই এই রিপোর্টের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র আরও সংহত হতো, বাংলাদেশ গণতন্ত্রের সূচকে আরও কয়েক ধাপ উন্নীত হতো যদি বিএনপির সংসদ বর্জন, সংসদ থেকে পদত্যাগ এই অপরাজনীতি যদি না থাকত। কারণ গণতন্ত্রকে দৃঢ় ও সংহত করার দায়িত্ব যেমন সরকারি দলের, তেমনই বিরোধী দলেরও দায়িত্ব, সে বিরোধী দল সংসদে থাকুক কিংবা না থাকুক। গণতন্ত্রকে সংহত করা, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি চর্চা করা, সেটি সমস্ত রাজনৈতিক দলের সম্মিলিত দায়িত্ব। আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের গণতন্ত্র যে সুসংহত হয়েছে এবং গণতান্ত্রিক রীতিনীতির চর্চা বিস্তৃত হয়েছে সেটির বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের এই রিপোর্ট।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে একদলীয় শাসন কায়েম করেছে। ক্ষমতায় থাকাকালীন কোনো রাজনৈতিক দলকে সুযোগ দেয়নি।
নগরীর গ্রান্ডহোটেল মোড় এলাকায় রংপুর বিভাগীয় বিএনপির আয়োজনে ১০ দফা দাবি আদায়ে বিভাগীয় সমাবেশে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র বা মানুষের মতের সমাবেশ মেনে নেয় না, তারা এক দলীয় শাসন বিশ্বাস করে। দেশের মানুষের ঘুম যারা হারাম করেছে, কেড়ে নিয়েছে সুখ সমৃদ্ধি তাদের শান্তি সমাবেশ মানায় না। মানুষকে বিভ্রান্ত করতে কূটচাল করছে দলটি।
এক সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান বলেছেন, বিএনপি একটি উদার মনোভাবের রাজনৈতিক দল। মানুষের অধিকার আদায়ে সরকারের সব নির্যাতন, নিপীড়ন সহ্য করছে। গণতান্ত্রিক ধারায় আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ না করলে আন্দোলনের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের শাহাদৎবরণ করে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।
রংপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক সামসুজ্জামান সামুর সভাপতিত্বে বিভাগীয় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেস্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম ও আব্দুল খালেক, জেলা বিএনপির আহবায়ক সাইফুল ইসলাম, মহানগর কমিটির সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন প্রমুখ।
এছাড়াও রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পরাজয়ের পর নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন বগুড়া-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আলোচিত ইউটিউবার হিরো আলম। তিনি বগুড়া-৪ আসনে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে গণভোট চেয়েছেন। ওই গণভোটে তিনি জিতবেন বলে চ্যালেঞ্জ করেছেন।
শুক্রবার দুপুরে নির্বাচনী এলাকার কাহালুতে ভোটারদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এ চ্যালেঞ্জ জানান।
গত ১ ফেব্রুয়ারি বুধবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসনে নির্বাচনে পরাজয়ের পর হিরো আলম ফল পাল্টানোর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইসি বৃহস্পতিবার মন্তব্য করেন, এর কোনো ভিত্তি নেই। উপনির্বাচনের ফলাফল শতভাগ সঠিক। অনেক কেন্দ্রে প্রার্থীর কোনো এজেন্ট ছিল না।
ইসির এসব মন্তব্যের প্রেক্ষিতে হিরো আলম বলেন, তার ও জাসদ প্রার্থী একেএম রেজাউল করিম তানসেনের মধ্যে গণভোট দিন। জনগণ ভোট দিয়েছেন কি দেননি; ফলাফল চুরি করেছেন কি করেননি সেটা আমি দেখাব।
হিরো আলম আরও বলেন, গণভোটে প্রতিটা কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা দিবেন এবং সব নির্বাচন কমিশনার সেই ভোট দেখবেন। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, আমার অভিযোগ সঠিক হবে। না হলে ও গণভোটে হেরে গেলে আর কোনোদিন নির্বাচনের নাম মুখে আনবো না।
তিনি বলেন, ওই গণভোট হবে ব্যালটে। কারণ ইভিএমে কারচুপি হয়। আর কারচুপি করে আমাকে হারানো হয়েছে। ভোটাররা আমার হেরে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না। তারা বলছেন আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।
হিরো আলম বলেন, নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন। বিশ্রাম নিয়ে আগামী দুই তিন দিনের মধ্যে আদালতে রিট করবেন। তিনি আশা করেন সেখানে তার পক্ষে ফলাফল আসবে।
এর আগে গত বুধবার রাতে তার নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে হিরো আলম নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে বলেন, আমি অশিক্ষিত, আমি এমপি নির্বাচিত হলে আমাকে স্যার ডাকতে হবে। দেশের সম্মান যেত; তাই ওইসব সাহেবরা আমার ফলাফল পাল্টে দিয়েছেন। নন্দীগ্রামের ৪৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৯টির ফলাফল ঘোষণা করা হয়। পরে বাকি ১০ কেন্দ্রের ফলাফল আলাদা ঘোষণা না করে মোট ফলাফল ঘোষণা করেছে। ওই ১০ কেন্দ্রের ফলাফল কারচুপি করা হয়েছে। সব বুথে এজেন্ট থাকলেও প্রিসাইডিং অফিসার তাদের ফলাফলের কপি দেয়নি। অথচ ইসি বললেন, আমার এজেন্ট ছিল না।
গত বুধবার দিনভর ইভিএমে ভোটগ্রহণ শেষে রাত সাড়ে ৮টার দিকে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম নিজ কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন।
বগুড়া-৪ আসনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী জেলা জাসদের সহ-সভাপতি একেএম রেজাউল করিম তানসেন বিজয়ী হয়েছেন। ১১২ কেন্দ্রে তিনি পেয়েছেন, ২০ হাজার ৪০৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আশরাফুল ইসলাম আলম ওরফে হিরো আলম পেয়েছেন, ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট। নির্বাচনে মোট নয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিন লাখ ২৮ হাজার ৪৬৯ জন ভোটারের মধ্যে ৭৮ হাজার ৫৭০ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ভোট সংগ্রহের হার ২৩ দশমিক ৯২ শতাংশ।
চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য করতে বলেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদককে নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের।
এ দিন সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করতে আসেন মাহিয়া মাহি।
দলীয় সূত্র জানায়, ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করে এলাকায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে সক্রিয় রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন মাহিয়া মাহি। তখন দলের ওবায়দুল কাদের উপস্থিত দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াকে নির্দেশ দিয়ে বলেন, সামনে উপ-কমিটি হবে, তাকে যে কোনো উপ-কমিটিতে রেখে দিও।
এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত নেতাকর্মীরা মাহিয়া মাহিকে সংস্কৃতি বিষয়ক উপ-কমিটিতে রাখার কথা বললে তাতে সায় দেন ওবায়দুল কাদের।
জানতে চাইলে চিত্র নায়িকা মাহিয়া মাহি বলেন, আমাকে সংগঠনের জন্যে কাজ করতে বলা হয়েছে।
মাহিয়া মাহির স্বামী রাকিব সরকার বলেন, সংস্কৃতি বিষয়ক উপ-কমিটি বা কোথায় কাজ করা যায় সেটা নিয়ে কথা বলেছেন সাধারণ সম্পাদক। একইসঙ্গে মাহিকে দলের জন্য কাজ করতে বলেছেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেছেন, উনাদের (আওয়ামী লীগ) সময় শেষ হয়ে আসছে। তাই প্রলাপ বকেছেন। তারা মিথ্যের ওপর টিকে আছে।
সোমবার সন্ধ্যায় গুলশান কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সঙ্গে বিএনপির লিয়াজো কমিটির বৈঠক হয়। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপির সুর নরম হয়ে গেছে’ ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের জবাবে ফখরুল বলেন, ওসব কথা বলে কোনো লাভ নেই। এগুলো মাঠে প্রমাণিত হবে। উনি (ওবায়দুল কাদের) তো পালাবার পথ খুঁজছেন। আমার বাসাতে ওঠার কথা বলেছেন। এসব কথার উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন মনে করি না।
বিএনপি মহাসচিব ছাড়াও বৈঠকে দলটির লিয়াজো কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, মোহাম্মদ শাহজাহান এবং আব্দুল আউয়াল মিন্টু উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের প্রধান সমন্বয়ক এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নেতৃত্ব আরো উপস্থিত ছিলেন- জাগপার খন্দকার লুত্ফর রহমান, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারি, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির সুকৃতি কুমার মন্ডল, গণদলের এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের ডা. সৈয়দ নুরুল ইসলাম, ন্যাপ ভাসানীর অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের ব্যারিস্টার নাসিম খান ও বাংলাদেশ ন্যাপের এম এন শাওন সাদেকী।
বিএনপির ছেড়ে দেওয়া বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপ-নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন আলোচিত অভিনেতা মো. আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। আদালতের আদেশে প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে ‘একতারা’ প্রতীক নিয়ে ভোটে লড়ছেন। প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তিনি। মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে চাইছেন ভোট।
হিরো আলমের ভোটে প্রচারণায় গভীর রাতে অংশ নেন আলোচিত চলচ্চিত্র অভিনেত্রী মুনমুন। বগুড়া শহরের সাতমাথা এলাকায় হিরো আলমকে সঙ্গে নিয়ে মুনমুন একতারা প্রতীকের ভোট চেয়েছেন। এদিকে হিরো আলম জানিয়েছেন, শুধু মুনমুন নয়, চলচ্চিত্র জগতের অনেক তারকা অংশ নিবেন একতারা নির্বাচনী প্রচারণায়।
নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়ে চিত্রনায়িকা মুনমুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘উত্তরবঙ্গ এসেছিলাম। হিরো আলম স্নেহের ছোট ভাই। হিরো আলম বললেন, ‘আপু, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি, একটু এসে দোয়া দিয়ে যান।’ ওর কথা ফেলতে পারিনি। ব্যস্ততার মধ্যেও ওর জন্য ভোট চাইতে এসেছি।’ তিনি শহরের সাতমাথায় রাত ২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত প্রচারণা চালান।
ভোটারদের উদ্দেশে মুনমুন বলেন, ‘হিরো আলম প্রান্তিক পরিবার থেকে উঠে আসা মানুষ। কিং অব রুট লেভেল। প্রান্তিক মানুষের দুঃখ ও কষ্ট সে অনুভব করতে পারবে। সে মানুষের জন্য কাজ করতে চায়। সে নির্বাচিত হলে প্রান্তিক মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করবে। হিরো আলমের সাহসের প্রতি সম্মান জানিয়ে একবারের জন্য হলেও তাকে এমপি নির্বাচিত করার আহ্বান জানান মুনমুন।’
অন্যদিকে হিরো আলম জানিয়েছে, ভোটারদের চমক দেখাতে আজ রাতে একতারা মার্কার পক্ষে ভোট চাইতে আসবেন চিত্রনায়িকা জেসমিন। পরে চিত্রনায়িকা নাসরিন, কাবিলাসহ অনেক চলচ্চিত্রশিল্পী অংশ নিবেন তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায়।
প্রচারণায় চমক ইঙ্গিত দিয়ে হিরো বলেন, ‘প্রচারণার শেষ সময়ে একতারা প্রতীকের পক্ষে চলচ্চিত্র তারকারা হেলিকপ্টারে যোগে প্রচারণায় অংশ নিবেন।
সোশাল মিডিয়ায় নিজের মৃত্যুর গুজব শোনার কথা জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তিনি এসব বিষয়কে পাত্তা দিতে চাইছেন না।
রোববার ঢাকার তেজগাঁওয়ে সড়ক ভবনে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদের সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
অপপ্রচারকারীরা মৃত্যুর মতো বিষয়কে নিয়েও গুজব ছড়াচ্ছে উল্লেখ করে হাসতে হাসতে তিনি বলেন, মৃত্যু সংবাদ নিয়েও যে…বসুরহাটে কলেজ ময়দানে জানাজাও হয়েছে, আমি শুনলাম। জানাজা হয়েছে, তার পরে আমার গ্রামের বাড়িতে কবর দিছে।
তিনি বলেন, শোনেন এসব প্রশ্ন করে লাভ নাই। এসব বিষয়গুলা খুবই নোংরামি। এই নোংরা রাজনীতি যারা করে…কুকুরের কাজ ককুর করেছে, কামড় দিয়েছে পায়; তাই বলে কুকুরকে কামড়ানো কি মানুষের শোভা পায়?
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন কি না, এ প্রশ্নের উত্তরে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেন, দেখুন এসব বিষয়গুলা আমি পাত্তা দেই না। আমি এগুলা কোনো গুরুত্ব দেই না। এই নোংরামিগুলো সবাইকে নিয়ে করা হচ্ছে।
কাদের বলেন, প্রাইম মিনিস্টারকে নিয়ে যা করছে, সেই তুলনায় এটা কিছুই না। মন্ত্রীদের নিয়ে যা হচ্ছে, এটা তো অবিরাম চলছে; আর যারা ভালো কাজ করে তাদেরটা আরও বেশি করছে।