মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান: গৃহিণী বা Housewife নন, ঘরের রাণীঃ
আলহামদুলিল্লাহ, কত সুন্দর এই ইসলাম।
আরবিতে গৃহিণীকে বলা হয় ‘রব্বাতুল বাইত’ অর্থ : ঘরের পরিচালিকা, প্রতিপালিকা, অভিভাবিকা।
একজনে লিখেছেন, প্রেম করার জন্য মেয়ের অভাব না হলেও সংসার করার জন্য মেয়ের অভাব রয়েছে। প্রেম করা যায় এমন সকল মেয়েই সংসারী হতে পারেনা, কিন্তু সংসারী প্রত্যেকটা মেয়েই প্রেমময়। সংসারী বলতে কী বুঝায়?
যে পুরুষ প্রেমময় দ্বীনদার স্ত্রী পেলেন না সে পুরুষ দুনিয়াতেই জাহান্নাম ভোগ করলেন, তা সে স্বীকার করুন আর নাই করুন।
ইসলাম একজন মুসলিমাহকে ঘরের রানী হিসেবে সাব্যস্ত করেছে এবং তার জন্য জান্নাতকে সহজ করে দিয়েছে।প্রেমময় নারী ই স্বামীর জন্য জান্নাতী উপঢৌকনের নমুনা। কিন্তু বর্তমান সময়ের অধিকাংশ নারী জান্নাত নিজের জন্য কঠিন বানিয়ে ফেলেছে। শান্তির খোঁজে অর্থের মোহে তারা অন্ধকার সময়ের মতো নিজেদের প্রদর্শন করে বেড়াচ্ছে, যার দরুন স্বাধীন-সার্বভৌম এ দেশটিতেই আজ নারীরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক জরিপ অনুযায়ী গত বছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এক হাজার ৭০৩ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়, এর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হয় ২৩৭ জন । ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় ৭৭ জনকে, ধর্ষণের ঘটনায় আত্মহত্যা করে ১৯ জন, প্রকাশিত খবরের বাইরে আরো অপ্রকাশিত অনেক খবর রয়েছে যার সাক্ষী আমরা নিজেরাই। দুঃখজনক হলেও সত্য, অধিকাংশ নারী নিজেরাই নিজেদের সম্মান নষ্ট করছে, পথ উন্মুখ করে দিচ্ছে ধর্ষণ ও নির্যাতনের এক ভয়াল চিত্রের। পশ্চিমা নারীদের খোলামেলা জীবনযাপন দেখে মনে হয় তারা স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের জীবন কাটাচ্ছে অথচ পশ্চিমা নারীরাই সবচেয়ে বেশি পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ । আর এ বিষয়টি না বোঝার কারণে নানা প্রকার অপসংস্কৃতির প্রসার ঘটে চলছে প্রতিনিয়ত এবং আমার বোনেরা আঁধারে হারিয়ে যাচ্ছেন ।
স্বামীরা যখন বিশ্বাস করে বাইরে যেতে দেন তখন সময়মত ঘরে ফিরে আসেন না স্ত্রী রা।স্কুল কলেজের বন্ধুদের আড্ডায় মেতে উঠছে বিবাহিত নারীরা। নাউজুবিল্লাহ।
একজন প্রকৃত মুসলিমাহ ও তার দায়িত্ব : নারী পরম শ্রদ্ধেয় মা, আদরের বোন এবং প্রেমময় স্ত্রী কিংবা কলিজার টুকরা স্নেহভাজন কন্যা হিসেবে পুরুষের চিত্তজগতকে আলোকিত করে, বলা হয়ে থাকে, একজন নারী সমাজের অর্ধেক। নারীর সক্রিয় উপস্থিতি ছাড়া একটি সুন্দর ও নৈতিক পরিবার গঠন করা অসম্ভব, নৈতিক পরিবার ব্যতিরেকে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ আশা করা যায় না। একজন নারী যদি তার হিজাবের খেলাপ করে চাকরির দুনিয়ায় পাশ্চাত্যের মতো বিচরণ করে এবং নিজের গৃহের দায়িত্ব পরিবারের দায়িত্ব থেকে মাহরুম থাকে তবে এর বিপরীতে সমাজের শতাধিক শিক্ষিত ছেলে বেকারত্বের করাল গ্রাসে নিপতিত হয়। একজন পুরুষ যিনি হন পরিবারের কর্তা, যার ওপর পরিবারের দায়িত্ব ওয়াজিব করে দেয়া হয়েছে সে যদি বেকার বসে থাকে তবে এ চিত্র সমাজে বিপর্যয় সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট, ইসলাম নারীদেরকে পুরুষের সমান অধিকার দেয় তবে দায়িত্ব কর্তব্যের ভিন্নতা রয়েছে। কুরআনে উল্লেখ আছে, ‘নারী-পুরুষের যে কেউ ঈমান অবস্থায় নেক আমল করবে আমি অবশ্যই তাকে শান্তিময় জীবন দান করব এবং আখিরাতে তার কৃতকর্মের উত্তম প্রতিদান দেবো।’ (সূরা নাহল-৯৭)।
আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা দুনিয়ার উত্তম জীবন এবং পরকালের উত্তম প্রতিদান দেয়ার ব্যাপারে যেমন পুরুষদের সাথে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তদ্রুপ মহিলাদের সাথেও অঙ্গীকারবদ্ধ, এ ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের কোনো পার্থক্য করেননি। তবে শর্ত হলো, প্রত্যেককে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে যত্নবান হতে হবে, সুতরাং মহিলারাও যদি ঈমানকে পরিশুদ্ধ করে নেককাজ তথা ইবাদত-বন্দেগি, স্বামীর খেদমত ও তার আমানতের হেফাজত এবং সন্তান লালন-পালন করে তা হলে এক দিকে যেমন তারা দুনিয়াতে উত্তম জীবনপ্রাপ্ত হবে, সুখময় দাম্পত্য জীবনের অধিকারী হবে এবং আত্মার প্রশান্তি লাভ করবে, অন্য দিকে আখিরাতেও তারা উত্তম প্রতিদান পাবে, চির সুখশান্তিসমৃদ্ধ জান্নাত লাভ করবে এবং অভাবনীয়, অকল্পনীয় ও অপূর্ব নিয়ামত ভোগ করবে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা: বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, নারী হলো আবরণীয়। যখন সে বের হয় তখন শয়তান তার অনুসরণ করে। যখন সে ঘরে আবদ্ধ থাকে তখন আল্লাহর রহমত লাভের অতি কাছাকাছি থাকে।’ (মুসনাদে বাজজার) কিন্তু বর্তমানে চাকরির প্রতি আকর্ষণ নারীদের নিজেদের স্বকীয়তা থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে (পরিপূর্ণ ইসলামী ব্যবস্থানুযায়ী নারীদের চাকরির ক্ষেত্র না থাকায়) । নারী স্বাধীনতার নামে মাতৃজাতির সরলতা তাদের হায়া-শরম ছিনিয়ে নিচ্ছে। ফলে প্রতিটি ঘর আজ ফেতনার আখড়ায় পরিণত হচ্ছে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে দ্বন্দ্ব, ভাইবোনে মনোমালিন্য। কোথাও ছেলেমেয়ে, পিতামাতার অবাধ্য, কোথাও পিতামাতা সন্তানের হক আদায় থেকে উদাসীন, সামান্য কারণে তালাকের ঘটনা ঘটে সুখের সংসার দোজখে পরিণত হচ্ছে। গভীরভাবে লক্ষ করলে বোঝা যাবে, এর কারণ হলো মহিলাদের দ্বীনি জ্ঞানের অভাব এবং নিজ দায়িত্ববহির্ভূত অঙ্গনে অবাধ বিচরণ ।
আল্লাহর জান্নাতে সবাই যেতে চায় কিন্তু আল্লাহর আইন মানতে চায় না।আল্লাহ পাক বানিয়েছেন নারী হতে চায় পুরুষ। আল্লাহ পাক বৈধ পুরুষের সাথে কামনা বাসনা মেটাতে বলেছেন তারা কুকুরের সঙ্গে ও ঢলাঢলি করে।
মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান: যখন জাতির নিকৃষ্ট ব্যক্তি তাদের নেতা হবে, ক্ষতির ভয়ে মানুষকে সম্মান করা হবে, সে সময় তোমরা অপেক্ষা করো লাল রঙের ঝড়ের, ভূকম্পনের, ভূমিধ্বসের, বিরূপ বিকৃতির, পাথরবৃষ্টির এবং সুতো ছেঁড়া দানার মতো একের পর এক নিদর্শনের জন্য।’ (তিরমিজি)।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘হে মানুষ, তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় করো। কিয়ামতের ভূমিকম্প এক ভয়ংকর ব্যাপার। যেদিন তোমরা তা দেখবে, সেদিন স্তন্যদায়ী মা তার দুগ্ধপোষ্য সন্তানের কথা ভুলে যাবে আর সব গর্ভবতীর গর্ভপাত হয়ে যাবে। দৃশ্যত মানুষকে মাতালের মতো দেখাবে, আসলে তারা নেশাগ্রস্ত হবে না। মূলত আল্লাহর শাস্তি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ।’ (সুরা হজ, আয়াত: ১-২)।
ভূমিকম্প এক আল্লাহ পাক এর এক ভয়ংকর নিদর্শন। আল্লাহ বলেন, ‘বলো, আল্লাহ তোমাদের ওপর থেকে অথবা তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষম।’ (সুরা আনআম: ৬৫) আয়াতটি নাজিল হলে মহানবী (সা.) বলেন, ‘হে আল্লাহ, আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’ (বুখারি) শায়খ ইস্পাহানি (রহ.) আয়াতের তাফসিরে বলেছেন, এখানে ভূমিকম্প ও ভূমিধসের কথা বলা হয়েছে।
ভূমিকম্প মহান আল্লাহর অসীম শক্তিমত্তার বহিঃপ্রকাশ। অবাধ্যতার কারণে অতীতে অনেক জাতিকে ভূমিকম্প দিয়ে সমূলে ধ্বংস করে দিয়েছেন তিনি। যেদিন মহাবিশ্বের আয়ু ফুরিয়ে যাবে, সেদিন ভয়ংকর ভূমিকম্পের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা পুরো সৃষ্টিজগৎ ধ্বংস করে দেবেন। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত ভূমিকম্পগুলো এরই ছোট নমুনামাত্র।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি ভয় দেখানোর জন্যই নিদর্শনগুলো পাঠাই।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ৫৯)।
অতীতে আল্লাহ তাআলা অবাধ্যতার সাজা হিসেবে ভূমিকম্প দিয়ে কয়েকটি জাতিকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছেন। সালিহ (আ.)-এর জাতি সামুদ, শোয়াইব (আ.)-এর জাতি মায়ইয়ানবাসী ও লুত (আ.)-এর জাতি কওমে লুতকে ভূমিকম্পের মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের কাউকে আমি মাটির নিচে গেড়ে দিয়েছি।’ (সুরা আনকাবুত: ৪০)
মানুষের গুনাহ, অনাচার, পাপাচার, প্রকৃতির প্রতি অবিচার মানুষের প্রতি মানুষের জুলুম ইত্যাদির কারণে আল্লাহ তাআলা মানুষকে বিভিন্ন দুর্যোগের মুখোমুখি করেন। এ কারণেই এসবকে মানুষের হাতের কামাই আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যে বিপদ-আপদই তোমাদের ওপর আসুক না কেন, তা তোমাদের নিজেদের হাতের কামাই। আর আল্লাহ তোমাদের অনেক (গুনাহ) ক্ষমা করে দেন।’ (সুরা শুরা: ৩০)।
মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর বিশেষ দোয়ার কারণে তাঁর উম্মতকে পুরোপুরি ধ্বংস না করার অঙ্গীকার করেছেন আল্লাহ তাআলা। অবশ্য মাঝেমধ্যে তাদের সতর্ক করার জন্য ভূমিকম্পের মতো ধ্বংসাত্মক দুর্যোগ পাঠিয়ে থাকেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘জনপদের মানুষগুলো কি নির্ভয় হয়ে ধরে নিয়েছে যে আমার আজাব তাদের ওপর মধ্য দিনে এসে পড়বে না? তখন তারা খেল-তামাশায় মত্ত থাকবে। কিংবা তারা কি আল্লাহর কলাকৌশল থেকে নির্ভয় হয়ে গেছে? অথচ আল্লাহর কলাকৌশল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত জাতি ছাড়া অন্য কেউই নিশ্চিত হতে পারে না।’ (সুরা আরাফ: ৯৮-৯৯)
মহানবী (সা.) ভূমিকম্পের ব্যাপারে মানুষকে সতর্ক করেছেন। আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘এ উম্মত ভূমিকম্প, বিকৃতি এবং পাথরবর্ষণের মুখোমুখি হবে।’ (তিরমিজি) অন্য হাদিসে এসেছে।
কিয়ামতের আগে ভূমিকম্প বেড়ে যাবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন মহানবী (সা.)। ইবনু হাওয়ালা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আমার মাথার তালুতে হাত রেখে বলেন, ‘হে ইবনু হাওয়ালা, যখন তুমি দেখবে যে বাইতুল মুকাদ্দাসের ভূমিতে খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তখন মনে করবে বেশি বেশি ভূমিকম্প, বিপদ-আপদ, মহাদুর্ঘটনা ও পেরেশানি খুব কাছে। আমার এই হাত তোমার মাথার যত কাছে আসে, তখন কিয়ামত মানুষের তত কাছে চলে আসবে।’ (আবু দাউদ)।
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘(সেদিন) প্রবল কম্পনে প্রকম্পিত হবে পৃথিবী এবং পর্বতমালা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে তা বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পর্যবসিত হবে।’ (সুরা ওয়াকিয়া: ৪-৬)।
আল্লাহ পাক আমাদের জ্ঞান দান করুন, ক্ষমা করুন, হেদায়েত দান করুন। সেজদা থেকে চির সেজদাহ কবুল করুন।
মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান: প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করলে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দণ্ডবিধি আইন-১৮৬০-এর ৪৯৪-এর বিধানমতে মামলা করতে পারেন। এ সময় স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের কাবিননামা আদালতে দেখাতে হবে। স্বামীর অপরাধ প্রমাণিত হলে শাস্তি হবে।
এখন আপনাকে প্রমাণ করতে হবে যে, আপনার স্বামী অপরাধ করেছেন।বাংলাদেশের কোনো আইনে ই লেখা নাই যে,প্রথম স্ত্রী অযোগ্যা হলেও দ্বিতীয় বিয়ে করবার সময় তার অনুমতি নিতে হবে,কিংবা অত্যাচারী স্বৈরশাসক হলেও দ্বিতীয় বিবাহ করা যাবে না ।
আইনে বলা আছে যদি কেউ দ্বিতীয় বিয়ে করতে চায় তাহলে এলাকার চেয়ারম্যানের কাছে অনুমতি চাইতে হবে। যদি চেয়ারম্যান সাহেব অনুমতি না দেন বা স্বামী দরখাস্ত না করে বা স্ত্রীর লিখিত অনুমতি না নিয়ে বিবাহ করে ই ফেলেন তাহলে এমন কোনো কথা আইনে লেখা নাই যে স্বামীর আদালতে শাস্তি হবেই হবে ।
প্রথম স্ত্রী মামলা করলে তাকে প্রমাণ করতে হবে যে তিনি নিজেই স্ত্রী হিসেবে স্বচ্চরিত্রবান,শারিরীকভাবে যোগ্য এবং স্বামীর শারিরীক মানসিক সকল বিষয়ে সফল, উদাসীন নন। তিনি স্বামীর অর্থ সম্পদের বিষয়ে সৎ এবং হালাল। সন্তানের বিষয়ে সফল। আর স্বামী অসচ্চরিত্রবান।
স্বামী যদি আদালতে বলেন, তার স্ত্রী বন্ধা, শারীরিকভাবে, দুর্বল উদাসীন , দাম্পত্য জীবন সম্পর্কিত শারীরিক অযোগ্য,ঝগড়াঝাটি করেন, অলস, দাম্পত্য অধিকার পুনর্বহালের জন্য আদালত থেকে প্রদত্ত কোনো আদেশ বা ডিক্রি বর্জন করে থাকেন , মানসিকভাবে অসুস্থ,অর্থ সম্পদে অসৎ, সারাদিন রাত মোবাইল টিপাটিপি করেন, দুর্ব্যবহার, পরকিয়া ইত্যাদি তে লিপ্ত তাহলে স্বামীর শাস্তি হবে এমন চিন্তা করা ভুল।
আইন টি নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যথেষ্ট ভুল ধারণা আছে।
তবে দ্বিতীয় বিয়ে করলে সব স্ত্রীরাই কাবিনের টাকা চাইতে পারেন। আবার কাবিনের টাকা পরিশোধ করার পর সব স্ত্রীদের তালাক ও দেয়া যাবে।স্ত্রী রা ও স্বামী কে বারবার তালাক দিয়ে বারবার সাদী মোবারক করতে পারবেন। তবে স্ত্রীরা গোপনে বা প্রকাশ্যে একবারে তালাক না দিয়ে একাধিক স্বামী রাখতে পারবেন না।
শাস্তি হতে পারে যদি স্বামী নিজেকে ধোয়া তুলসীপাতা প্রমান করতে না পারেন অথবা স্ত্রী নিজেকে পুজার ফুল প্রমাণ করতে পারে তাহলে। শাস্তি হবেই হবে তা বলতে পারেন মাননীয় আদালত।
দেখি পবিত্র ইসলাম কি বলে —
দ্বিতীয় বিয়ের জন্য প্রথম স্ত্রীর অনুমতি জরুরী নয়। অনুমতি ছাড়া বিয়ে করলেও তা শুদ্ধ হয়ে যাবে।
তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে, ইসলাম একাধিক বিয়ের অনুমতি তখনি প্রদান করেছে, যখন উভয় স্ত্রীর হক সমানভাবে, কোন প্রকার বৈষম্য ছাড়া আদায় করতে পারবে, তখন।
সাম্যতা বজায় রাখতে না পারলে, কিংবা হক আদায় করতে না পারলে দ্বিতীয় বিবাহ করা জায়েজ নয়।
فَانكِحُوا مَا طَابَ لَكُم مِّنَ النِّسَاءِ مَثْنَىٰ وَثُلَاثَ وَرُبَاعَ ۖ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تَعْدِلُوا فَوَاحِدَةً [٤:٣]
সেসব মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভাল লাগে তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারটি পর্যন্ত। আর যদি এরূপ আশঙ্কা কর যে, তাদের মধ্যে ন্যায় সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে পারবে না, তবে, একটিই [সূরা নিসা-৩]
মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান: কারবালা আরবি ‘কারব’ ও ‘বালা’–এর সরলরূপে পরিণত। ‘কারব’ মানে সংকট, ‘বালা’ মানে মুসিবত। তাই কারবালা সংকট ও মুসিবতের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। কারবালার এ হৃদয়বিদারক ঘটনা মহিমাময় মহরম মাসের ঐতিহাসিক মহান আশুরার দিনে সংঘটিত হওয়ায় এতে ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়েছে। এতে এ শাহাদাতের মাহাত্ম্য যেমন বহুগুণ বেড়েছে, তেমনি আশুরা পেয়েছে ইতিহাসে নতুন পরিচিতি।
প্রিয় নবীর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রিয় দৌহিত্র হজরত আলী (রা.)–এর আদরের দুলাল, জান্নাতি রমণীদের সরদার নবীনন্দিনী হজরত ফাতিমার নন্দন, জান্নাতি যুবকদের সরদার, বিশ্ব মুসলিমের নয়নমণি হজরত হোসাইন (রা.) আশুরা দিবসে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদি বাহিনীর হাতে শাহাদাতবরণ করেন। এ নির্মম ঘটনা বিশ্ব মুসলিমের হৃদয়ে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে।
বাষট্টি হিজরি সনের মহরম মাসের ১০ তারিখ শুক্রবার হজরত হোসাইন (রা.) অত্যন্ত করুণভাবে শাহাদাতবরণ করেছিলেন। জগতের জানা ইতিহাসে এটি একটি বিয়োগান্ত ঘটনা।
ফোরাত’ কুফার একটি সুপ্রাচীন নদী। এ নদীর কূলে অবস্থিত কারবালার প্রান্তর। হোসাইনি কাফেলা যখন কারবালায় অবস্থান করছে, তখন তাদের পানির একমাত্র উৎস এই ফোরাত নদী, যা উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদের বাহিনী ঘিরে রাখে, অবরুদ্ধ করে রাখে নিরস্ত্র অসহায় আহলে বাইতকে। এ নদী থেকে পানি সংগ্রহ করতে গেলে ফুলের মতো নিষ্পাপ দুগ্ধপোষ্য শিশু আলী আসগর এক ফোঁটা পানির জন্য সীমার বাহিনীর তিরের আঘাতে শহীদ হয়। সেদিন ফোরাতকূলে ‘পানি! পানি!’ বলে অবর্ণনীয় মাতম উঠেছিল।
কুফা’ ইরাকের একটি বিখ্যাত শহর। পরবর্তীকালে হজরত আলী (রা.)-এর শাসনামলে খেলাফতের রাজধানী। আখেরি নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সময় মুসলিম শাসনের প্রাণকেন্দ্র ছিল মদিনা মুনাওয়ারা। নবীজি (সা.)-এর ওফাতের পর প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) প্রায় আড়াই বছর খেলাফত পরিচালনা করে ইন্তেকাল করেন। এরপর দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর ফারুক (রা.) ১০ বছর খেলাফতের দায়িত্ব পালন করে শহীদ হন। তৃতীয় খলিফা হজরত উসমান গনি (রা.) ১২ বছর খেলাফত পরিচালনা করে শাহাদাতবরণ করেন। এ সময় পর্যন্ত ইসলামি খেলাফতের রাজধানী ছিল মদিনা। চতুর্থ খলিফা হজরত আলী (রা.) দুই বছরের শাসনামলে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হলে প্রশাসনিক সুবিধা বিবেচনায় তিনি খেলাফতের রাজধানী ইরাকের কুফায় স্থানান্তর করেন। এ সময় কুফা ছিল একটি প্রদেশ এবং কুফার গভর্নর ছিলেন উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ। তঁারই নেতৃত্বে কারবালার নির্মম ঘটনা সংঘটিত হয়। এই কুফাই পরবর্তীকালে ইসলামের ইতিহাসে ‘কুফা’তে পরিণত হয়েছে। কুফাবাসী ইয়াজিদের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য হজরত হোসাইন (রা.)-কে শত শত পত্রের মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানায়। তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিনি সেখানে আগমন করলে তারা তাঁকে একাকী বিপদের মুখে ফেলে রেখে নিজেরা নীরব ও নিষ্ক্রিয় থাকে।
দামেস্ক’ বর্তমানে সিরিয়ার রাজধানী। চতুর্থ খলিফা হজরত আলী (রা.)-এর শাহাদাতের পর হজরত হাসান (রা.) তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন এবং ছয় মাস খেলাফতের দায়িত্ব পালন করে সিরিয়ার গভর্নর হজরত মুয়াবিয়া (রা.)-এর কাছে খেলাফতের ভার অর্পণ করেন। হজরত মুয়াবিয়া (রা.) প্রশাসনিক সুবিধার্থে রাজধানী দামেস্কে স্থানান্তরিত করেন। সে সূত্রে ইয়াজিদ ক্ষমতাসীন হলে তার রাজধানী দামেস্কেই রয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে কালক্রমে ইসলামি খেলাফতের রাজধানী তুরস্ক ও মিসরে স্থানান্তরিত হয়। মিসর থেকেই ১৯২৪ সালে ইসলামি খেলাফতের আনুষ্ঠানিক পরিসমাপ্তি ও যবনিকাপাত ঘটে।
হোসাইন ইবনে আলী (রা.) চতুর্থ হিজরির শাবান মাসের ৫ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। আর আশুরার জুমার দিনে ৬১ হিজরিতে তিনি শহীদ হন।
শাহাদাতের পর হজরত হোসাইন (রা.)-এর দেহ মোবারকে মোট ৩৩টি বর্শা ও ৩৪টি তরবারির আঘাত দেখা যায়। শরীরে ছিল অসংখ্য তীরের জখমের চিহ্ন। তার সঙ্গে মোট ৭২ জনকে হত্যা করে ঘাতকরা।
তাকে সিনান ইবনে আবি আনাস নাখায়ি হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করে খাওলি ইবনে ইয়াজিদ আসবাহি হিময়ারি।
সে হোসাইন ইবনে আলীর মাথা শরীর থেকে দ্বিখণ্ডিত করে এবং ওবায়দুল্লাহর দরবারে নিয়ে যায়।
বলাবাহুল্য যে, কারবালার প্রান্তরে সে অশুভ দিনে পাপিষ্ঠরা যে নির্মমতা ও নির্দয়তার পরিচয় দিয়েছে, তা পাষণ্ড হৃদয়েও ব্যথা ও যাতনা সৃষ্টি করে।
আল্লাহ পাক আমাদের কারবালার ঘটনা থেকে ইসলামের আদত শিক্ষা দান করুন।
মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান: মিথ্যার দুর্গন্ধে ফেরেশতারা মিথ্যাবাদী থেকে এক মাইল দূরে চলে যায়ঃ—–
মিথ্যা ই সকল পাপের উৎস এবং সবচেয়ে দুর্গন্ধযুক্ত বায়বীয় পদার্থ ।
মিথ্যাকে সব পাপের জননী বলা হয়। একটি মিথ্যা থেকে শতশত পাপের সূত্রপাত হয়। ছোটো খাটো মিথ্যা বলতে বলতে মানুষ ধীরে ধীরে মিথ্যা বলায় অভ্যস্ত হয়ে যায় । তখন মিথ্যা কথা বলতে আর দ্বিধাবোধ করে না। যে কোনো বিষয়ে মুখ দিয়ে অকপটে মিথ্যা বের হয়ে আসে।মিথ্যাবাদীকে বন্ধু বানালে তার জন্য আপনি নিজেও সমাজের কাছে মিথ্যাবাদী হয়ে যাবেন।প্রিয় কেউ মিথ্যুক হ’লে তাকে বাঁচাতে আপনাকে মিথ্যা বলতেই হবে।
সম্প্রতি বিবিসি একটি জরিপ করে দেখেছে যে, পুলিশ, আইনজীবি এবং বিচারকেরা কয়েদীদের চেয়ে ও বেশী মিথ্যা বলেন।
একটু খেয়াল করে দেখবেন আপনার কন্যা এবং পুত্র সন্তানের মধ্যে কে বেশী মিথ্যা বলে। আমি পরীক্ষা করে দেখেছি পরিবারের ছোট সন্তান সবচেয়ে বেশী মিথ্যা বলেন। তার কারণ হচ্ছে সে বড় ভাইবোনদের থেকে শাসনের শিকার হয়ে থাকে।
মিথ্যাকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই কেবল ঘৃণা করা হয় না বরং সব বর্ণের-ধর্মের মানুষ মিথ্যাকে ঘৃণা করে।আবার অনেক কিছু মিথ্যার উপরে ই প্রতিষ্ঠিত । যারা কোনো ধর্ম মানে না, তারাও মিথ্যাকে ঘৃণা করে। যারা অনর্গল মিথ্যা বলে, তারাও মিথ্যাকে ঘৃণা করে। মিথ্যাবাদীও চায়, অন্যেরা তার সঙ্গে সত্য কথা বলুক।মিথ্যুকের লজ্জা শরম বলতে কিছুই থাকে না।
আমরা দিনে দিনে মিথ্যার সমুদ্রে ডুবে যাচ্ছি। আমাদের অবস্থা এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, আমরা কখন যে মিথ্যা কথা বলছি, সেটা নিজেরাই বুঝতে পারি না। কথায় কথায় খুব সাধারণ বিষয়ে অবলীলায় মিথ্যা কথা বলে ফেলি,আরেকজনকে মিথ্যুক বানিয়ে ফেলি। অতি সাধারণ বিষয়েও মিথ্যা বলা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।জাতীয় মানুষেরা জাতীয় গণমাধ্যমের আলোচনায় বসে মিথ্যা ব’লে যাচ্ছেন অবলীলায়।
আমরা ছোটদের যতই শিক্ষা দিয়ে থাকি, মিথ্যা বলা মহাপাপ কিন্তু নিজেরাই যদি মিথ্যা বলা থেকে বের না হয়ে আসতে পারি, তাহলে তারাও আমাদের থেকে মিথ্যা কথা বলা শিখে যায়।পিতামাতারাও সন্তানের সামনে বসে নির্দিধায় মিথ্যা বলছেন।সমাজের নামকরা লোকেরা মিথ্যার উপরেই প্রতিষ্ঠিত রয়েছেন। আবার তাঁরাই এক্কেবারে ধর্মীয় লেবাসধারী।
তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে মিথ্যা বলাটা সহজ হয়ে গেছে। ঘরে অশান্তির সীমা নাই কিন্তু শুধুই শান্তির ছবি পোস্ট করেই যাচ্ছেন একদল ফেইসবুকি আদমসন্তান। বিশেষ করে মোবাইল কল বা মেসেজে। ঘরে অবস্থান করে বলে বাইরে। বাইরে কোথাও ঘুরতে গিয়ে বলা হয় অফিসে বা কর্মস্থলে। ধর্ম-কর্মে মিথ্যার মাধ্যমে ধোঁকাবাজি প্রতিনিয়ত চলছেই। মিথ্যা এতটাই ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে যে, এটা কিছু লোকের অবিচ্ছেদ্য স্বভাবে পরিণত হয়েছে। আমরা মিথ্যার এত কাছাকাছি বাস করছি, এটা পাপ বা সর্বজনস্বীকৃত ঘৃণ্য কাজ হওয়া সত্ত্বেও তার প্রতি একটুও বিরক্তি সৃষ্টি হচ্ছে না। মিথ্যা একাল-ওকাল দুটোই ধ্বংস করে। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশী মিথ্যা বলেন রাজনৈতিক নেতারা এবং ব্যাবসায়ীরা। ব্যাবসায়ীদর মধ্যে সবচেয়ে মিথ্যুক হচ্ছেন ভ্যান গাড়ি, ফুটপাতের দোকানদারেরা আর কাচামালের ব্যাবসায়ীরা।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার চকবাজারের ব্যাবসায়ীদের কেউ বিশ্বাস করে না। আজকাল ফেইসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে যারা ব্যাবসা করছেন তারাও তাদের বিশ্বস্ততা হারিয়ে ফেলেছেন বেশীরভাগ ক্ষেত্রে।
অথচ মিথ্যা বলা ছেড়ে দিলে প্রায় সব সমস্যারই সমাধান হয়ে যায়। বাঁচা যায় পরকালের কঠিন শাস্তি থেকে। মিথ্যা বলার চেয়ে নিকৃষ্ট গুনা আর নেই।
মিথ্যা বলার সর্বপ্রথম চর্চা শুরু হয় প্রেম করা থেকে। আসলে প্রেম ই হচ্ছে একটা ধোঁকাবাজি। সারাদিন বয়গার্ল বন্ধুর দুরভিসন্ধি থেকে মিথ্যা শুরু হয়ে সংসার জীবন পর্যন্ত গড়ায়।
মিথ্যার খেসারত দেয় না এমন কেউ নাই। মিথ্যাবাদীকে আল্লাহ প্রচণ্ড ঘৃণা করেন। আল কোরআন ও হাদিসে মিথ্যুক এবং মিথ্যাবাদীর ভয়ানক পরিণতির কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই তার অনুসরণ কর না।’ (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত : ৩৬)। রাসূল (সা.) বলেন, ‘মানুষ যখন মিথ্যা কথা বলে, তখন মিথ্যার দুর্গন্ধে ফেরেশতারা মিথ্যাবাদী থেকে এক মাইল দূরে চলে যায়।’ (তিরমিজি : ১৯৭২)
হিংসাপরায়ণ হয়ে মিথ্যা বলা, মন্দ ধারণা থেকে মিথ্যা বলা, বিদ্বেষী মনোভাব থেকে মিথ্যা বলা, বিরুদ্ধাচরণ করতে গিয়ে মিথ্যা বলছি অহরহ। আল্লাহতায়ালা মিথ্যাবাদীকে ঘৃণা করেন এবং এদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন। আল্লাহ আল কোরআনে হুশিয়ার করে বলেন, ‘সুতরাং পরিণামে তিনি তাদের অন্তরে নিফাক (দ্বিমুখিতা) রেখে দিলেন সেদিন পর্যন্ত, যেদিন তারা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, তারা আল্লাহকে যে ওয়াদা দিয়েছে তা ভঙ্গ করার কারণে এবং তারা যে মিথ্যা বলেছিল তার কারণে। (সূরা তওবা, আয়াত : ৭৭)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসূল (সা.) বলেন, ‘সত্যবাদিতা হচ্ছে শুভ কাজ। আর শুভ কাজ জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়। আর বান্দা যখন সত্য বলতে থাকে, এক সময় আল্লাহর কাছে সে সত্যবাদী হিসেবে পরিচিত হয়। আর মিথ্যা হচ্ছে পাপাচার, পাপাচার জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়, বান্দা যখন মিথ্যা বলতে থাকে, আল্লাহর কাছে এক সময় সে মিথ্যুক হিসেবে গণ্য হয়’। (বুখারি : ৫৭৪৩, মুসলিম : ২৬০৭)।
আমাদের সমাজে একটি প্রবাদ বাক্য আছে। ‘চিলে কান নিল’ বলে অযথা চিলের পেছনে দৌড়ানো। অথচ হাত দিয়ে একবারও কানটা ধরে দেখনি আসলেই কান নিয়েছে কিনা। এটাকে বলে ‘কানকথা’ বা ‘শোনা কথা’। কোনো কথা শুনেই এখানে-সেখানে বলে বেড়ানো হাদিসের ভাষায় এটাকেও মিথ্যা বলা হয়েছে। রাসূল (সা.) বলেন, ‘কারও কাছে কোনো কথা শোনামাত্রই তা বলে বেড়ানো মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য যথেষ্ট।’ (মুসলিম : ৯৯৬)।
মিথ্যাবাদী হওয়া মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ মিথ্যাবাদীর শাস্তির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘তাদের হৃদয়ে আছে একটি রোগ, আল্লাহ সে রোগ আরও বেশি বাড়িয়ে দিয়েছেন, আর যে মিথ্যা তারা বলে তার বিনিময়ে তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি’। ওদের যখন বলা হয়, তোমরা পৃথিবীতে অনাচার কর না, তারা বলে, আমরা তো শান্তি স্থাপনকারী। জেনে রাখ, ওরাই অনাচার বিস্তারকারী, কিন্তু ওদের চেতনা নেই’। (সূরা বাকারা, আয়াত : ১০-১২)।
যারা মিথ্যাবাদী, তারা এতে সাময়িক সুবিধা পেলেও ইহকালে এরা নিন্দিত হবে এবং পরকালে পাবে কঠিন শাস্তি। যারা সত্যবাদী, তাদের জীবনের পথচলা একটু কঠিন হলেও তারা ইহকালে হবে সম্মানিত এবং পরকালে পাবে উপযুক্ত পুরস্কার।
গতকাল সারাদিন মিথ্যা বলেও আজ মিথ্যা পরিত্যাগ ক’রে তওবা করলেও আল্লাহ পাক ক্ষমা করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।
মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান:
1. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন:
“যে ব্যাক্তি আমার চল্লিশটি হাদীস আমার উম্মতের কাছে পৌছাবে, তার জন্য আমি কিয়ামতের দিন বিশেষ ভাবে সুপারিশ করব।”
2. “মানুষের মধ্যে যারা মৃত্যুকে বেশি স্মরণ করে এবং উহার জন্য প্রস্তুতি নেয় তারাই সবচেয়ে বুদ্ধিমান। “
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
3. “প্রত্যেক জিনিসের যাকাত আছে, আর দেহের যাকাত হচ্ছে রোজা।”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
4. “যে তার সময় আল্লাহর জন্য ব্যয় করে না, তার জন্য জীবন অপেক্ষা মৃত্যু শ্রেয়।”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
5. “যারা সবসময় ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করে তাদের সাথে উঠা বসা করুন, কেননা তাদের হৃদয় সবচেয়ে কোমল হয়।”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
6. “তুমি যত সিজদা দিবে, আল্লাহ তত গুনাহ মাফ করে দিবেন।”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
7. “সুরা ফাতিহা প্রায় ১০০০ রোগের ঔষধ”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
8. “হাতের তালুতে জ্বলন্ত আগুনের কয়লা রাখলে যেমন কষ্ট হবে, তার চেয়ে বেশি কষ্ট হবে শেষ জামানায় ইমান রাখতে।”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
9. “রোজাদারদের জন্য প্রতিদিন জান্নাত সুসজ্জিত করা হয়।”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
10. রাসুল (সাঃ) বলেছেন:
“কিয়ামতের দিন সব নবীর চেয়ে আমার উম্মতের সংখ্যা বেশি হবে, এবং আমিই সর্বপ্রথম জান্নাতের দরজা খুলবো।”
(সহীহ মুসলিম :১৯৬)
11. “যে ব্যাক্তি রোজা রাখা অবস্থায় মারা যাবে আল্লাহ তাকে, কেয়ামত পর্যন্ত সকল রোজার সাওয়াব দান করবেন।”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
12. “যে ব্যাক্তি ফযরের নামাজ আদায় করল, সে আল্লাহর হিফাজাতে চলে গেলো। “
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
13. রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন:
“রোজা ও কোরআন কিয়ামতের দিন মানুষের জন্য সুপারিশ করবে।”
(মুসনাদে আহমাদ : হাদিস ৬৬২৬)
14. নবীজি বলেছেন:
“রোজাদারদের জন্য সবচেয়ে বড় খুশির সংবাদ হলো, হাশরের মাঠে আল্লাহ সবার আগে রোজাদারদের সাথে সাক্ষাত করবেন।”
15. “যখন রমজান আসে, তখন জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয়।”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
16. রাসূল (সাঃ) বলেন:
“যখন কোনো বান্দা আল্লাহর দিকে দুটি হাত উঠায়, তখন তিনি তা ব্যার্থ বা শূন্য ভাবে ফিরিয়ে দেন না।”
(তিরমীজি-৫/৫০২)
17. হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন:
“একটি খেজুরের অর্ধেক হলেও দান করে, জাহান্নামের শাস্তি হতে নিজেকে হেফাজত করো।”
(বুখারীঃ৬০২৩)
18. “যদি ভালো হতে চাও তবে সর্ব প্রথম মিথ্যা বলা ছেড়ে দাও।”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
19. “তুমি যখন রাস্তা দিয়ে যাও তখন আল্লাহর নামে জিকির কর, কারণ হাশরেরদিন ঐ রাস্তা তোমার নামে সাক্ষি দিবে।”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
20. “তোমরা সবসময় ওযু করো কারণ কিয়ামতের দিন, যারা ওযু কারী তাদের হাত-পা উজ্জ্বল থাকবে।”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
21. “যার দুঃখ বেশি তার প্রতি আল্লাহর রহমতও বেশি।”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
22. “যখনি নামাজে দাঁড়াবেন, জীবনের শেষ নামাজ মনে করবেন।”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
23. “যে মহিলা গর্ভাবস্থায় এক খতম কোরআন পাঠ করবে তার গর্ভের ঐ সন্তান এক জন নেককার বান্দা হিসেবে দুনিয়াতে আগমন করবে।”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
24. “চুপ থাকার কারণে মানুষের যেই মর্যাদা হাসিল হয়, তা ষাট বছর নফল ইবাদত হতে উত্তম”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
25. রাসূল (সাঃ) বলেছেন:
“জান্নাতের সবচেয়ে নিকটবর্তী আমল
হলো সময়মতো সালাত আদায় করা।”
(সহীহ মুসলিম — ২৬০)
26. “যে ধোকা দেয় সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
27. “তুমি জানো তুমি সঠিক, তবুও তর্ক করো না।”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
28. হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন:
“তোমরা বিপদে পরে মৃত্যু কামনা করবে না। বরং বলবে, হে আল্লাহ, যে পর্যন্ত জীবিত থাকা আমার জন্য কল্যাণকর, আমাকে ততক্ষণ জীবিত রাখুন এবং যখন মৃত্যু আমার জন্য কল্যাণকর তখন আমাকে মৃত্যু দিন”
29. “সূরা ইয়াসিন কে কোরআনের হৃদয় বলা হয়।”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
30. “মায়ের একটি কষ্টের নিঃশ্বাস, সাতটি দোযখের চেয়েও ভয়ংকর। আর একটি সুখের হাসি আটটি বেহেস্তের সমান।”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
31. “যে অন্যের্য বাবা মা কে গালি দিলো সে যেনো নিজের বাবা মাকেই গালি দিলো।”
__হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
32. রাসূল (সাঃ) বলেছেন:
“আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে পারতে, তবে নিশ্চয়ই খুব কম হাসতে এবং খুব বেশি কাঁদতে।”
33. “মানুষ যদি মৃত ব্যাক্তির আর্তনাদ দেখতে এবং শুনতে পেতো তাহলে মানুষ মৃত ব্যাক্তির জন্য কান্না না করে নিজের জন্য কাঁদত।”
_হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)
34. মহানবী (সাঃ) বলেছেন: “সূরা ফাতিহা তোমরা ধীরে ধীরে পাঠ করো, কারণ মহান আল্লাহ নিজে তার জবাব দেন।”
(মুসলিম-৯১০)
35. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন:
“কিয়ামতের দিন যে জিনিসটি মুমিনদের পাল্লায় ভারী হবে সেটি হচ্ছে সুন্দর চরিত্র।”
(আবু দাউদঃ-৪১০১)
36. “কবরের ভিতরের প্রথম চাপ পৃথিবীর সকল কষ্টকে হার মানিয়ে দিবে।”
–হযরত মোহাম্মদ (সঃ)
37. হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন:
“যে ব্যাক্তির অন্তরে এক সরিষা দানা পরিমাণ অহংকার থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেন না।”
– সহীহ মুসলিম, হাদিসঃ৯১
38. “কিয়ামতের দিন ঐ ব্যাক্তির জন্য সুপারিশ করা হবে যে প্রচুর শীত উপেক্ষা করেও ফজরের নামাজ আদায় করলো।”
39. “নিশ্চয় মহান আল্লাহ নম্র, তিনি নম্রতা পছন্দ করেন। তিনি নম্র স্বভাবের লোককে যা দান করেন তা কঠিন স্বভাবের লোককে দান করেন না।”
_হযরর মুহাম্মদ (সাঃ)
(আবু দাউদ-৪৮০৭, সহীহ)
40. “কবর মানুষকে দিনে ৭০ বার করে স্বরন করে।”
মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান: জেনে রাখুন কেন তাকবীরে তাশরীক ধ্বনি উচ্চারণ না করলে পাপ হবে ————–
বলুন,আজ ২৮ জুন২০২৩ বুধবার ,৯ জিলহজ্জ ১৪৪৪ ফজর নামাজ থেকে — ” আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবর ওয়ালিল্লাহিল হামদ ” ।
২ জুলাই ২০২৩, ১৩ জিলহজ্জ রবিবার আসর নামাজ পর্যন্ত বলা ওয়াজিব।
পুরুষরা উচ্চস্বরে এবং নারীরা নিম্নস্বরে পড়ুন পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ সালাতের পর।
তাকবীরে তাশরীকের গোড়ার কথা : সহীহ আল-বুখারীর ব্যাখ্যাকার আল্লামা বদরুদ্দিন আইনী রহ. মবসুত ও কাজীখান কিতাবদ্বয় থেকে ‘হেদায়া ’ কিতাবের ব্যাখ্যা গ্রন্থে নকল করেছেন যে, হযরত ইবরাহীম আ. আপন পুত্র ইসমাঈল আ. কে যখন কুরবানী করতে শুরু করলেন, তখন হযরত জিবরাইল আ. আল্লাহর নির্দেশে বেহেশত থেকে একটি দুম্বা নিয়ে রওয়ানা হলেন।
তাঁর সংশয় হচ্ছিল পৃথিবীতে পদার্পন করার পূর্বেই হযরত ইবরাহীম আ. যবেহ কার্য সম্পন্ন করে ফেলবেন।
তাই হযরত জিবরাইল আ. আকাশ থেকেই উচ্চস্বরে ধ্বনী দিতে থাকেন – الله اكبر- الله اكبر(আল্লাহু আকবর,আল্লাহু আকবর ) । হযরত ইবরাহীম আ. তাঁর আওয়াজ শুনে আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলেন , উপস্থিত কুরবানীর বস্তু ইসমাঈল আ.-এর পরিবর্তে তিনি একটি দুম্বা নিয়ে আসছেন।
তাই তিনি স্বতঃস্ফুর্তভাবে বলে উঠলেন -لا اله الاالله والله اكبر(লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার) পিতার মুখে তাওহীদের এ অমূল্যবাণী শুনতে পেয়ে হযরত ইসমাঈল আ. আল্লাহর মহাত্ম, মর্যাদা ও শান শওকতের উপর হামদ পেশ করে বললেন : الله اكبر ولله الحمد (আল্লাহু আকবর ওয়ালিল্লাহিল হামদ)।
একজন মহান আল্লাহর ফেরেশতা, একজন নবী ও একজন ভাবী নবী এই তিন মহান ব্যক্তিত্বের খুশীর আবেগে উচ্চারিত এ আমলটুকু ও পবিত্র কালামগুলো আল্লাহর দরবারে এত বেশী কবুল হল যে, কিয়ামত পর্যন্ত ঈদুল আয্হায় বিশ্ব মুসলিমের কন্ঠে কন্ঠে উচ্চারিত হতে থাকবে।
তাকবীর সম্পর্কে আরো কতিপয় মাসআলা
১. ইমাম তাকবীর বলতে ভুলে গেলে ও মুক্তাদীর তাকবীর বলা ওয়াজিব।(ফাতওয়ায়ে শামী ১ম খন্ড ৭৭৭ পৃষ্ঠা)
২. পুরুষেরা তাকবীর উচ্চ-মধ্যম স্বরে আর মহিলাগণ অনুচ্চস্বরে বলবে। পুরুষ উচ্চ স্বরে না পড়ে আস্তে আস্তে পড়লে ওয়াজিব আদায় হবে না।
৩. মাসবুক তার নামাজ আদায় করে তাকবীর বলবে। (ফাতাওয়ায়ে শামী ১ম খন্ড-৭৮৬পৃষ্ঠা )
৪. যদি মুসল্লী ফরজ নামাজের পর তাকবীর বলতে ভুলে যায়। এবং কিছু কাজ করে ফেলে যার দ্বারা নামাজ নষ্ট হয়ে যায় (যেমন মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া, অথবা ভূলে বা ইচ্ছায় কথা বলা অথবা ইচ্ছা করে অজু ভঙ্গ করা) তবে তার উপর থেকে তাকবীর বলা রহিত হয়ে যাবে।(ফাতাওয়া শামী ১ম খন্ড, ৭৮৬ পৃষ্ঠা)
তাবেয়ী ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, সাহাবায়ে কেরাম আরাফার দিন নামাজের পর উক্ত তাকবীর বলতেন।(মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৫৬৯৬)।
কতবার পড়বে : আর পূর্ণ তাকবীরে তাশরীক তিনবার পড়ার বর্ণনা খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফিকহবিদগণও তিনবার বলার প্রতি গুরুত্ব দেন না। অবশ্য কেউ যদি সুন্নত মনে না করে এমনিতেই তিনবার বলে তবে সেটাকে বিদআত বলাও উচিত নয়।(আলআওসাত, হাদীস : ২১৯৮; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৫৬৯৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫২; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৭৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১৬৫)।
মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান: হত্যা করবে তো উত্তম পদ্ধতিতে হত্যা করঃ–
শুদ্ধ কোরআন শিখুন অর্থ সহ। কোরবানি ও সহীহ হবে ইনশাআল্লাহ।
অনেকে ভাড়াটে লোক দিয়ে জবেহ করেন কিন্তু তারা যত্ন করে জবেহ করতে পারে না। নিজের পশু নিজের হাতেই জবেহ করুন।
যখন যবেহ করবে তো উত্তম পদ্ধতিতে যবেহ কর। প্রত্যেকে তার ছুরিতে শান দিবে এবং তার পশুকে শান্তি দিবে।-সহীহ মুসলিম ২/১৫২; সুনানে আবু দাউদ ২/৩৮৯; সুনানে নাসায়ী ২/১৮২; সুনানে তিরমিযী ১/২৬০; সুনানে ইবনে মাজাহ ২/২২৯
রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ “তোমরা কোরবানির গোশত নিজেরা খাও, জমা রাখ এবং ছদকা বা দান কর।”
সহীহ মুসলিম শরীফ , ২৮০৪ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ) ; ২৮১২ , ২৮১৩ (আলবানী একাডেমী , পৃষ্ঠা নং- ১৪৯ ) / সুনানে নাসাঈ শরীফ , ৪র্থ খন্ড , হাদীস নং- ৪৪৩২ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ , পৃষ্ঠা নং- ২৭৫)।
মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাদের এ দিনে আমরা সর্ব প্রথম যে কাজটি করবো তা হল সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবো। এরপর ফিরে এসে আমরা কুরবানী করবো। যে ব্যাক্তি এভাবে তা আদায় করল সে আমাদের নীতি অনুসরণ করল। আর যে ব্যাক্তি আগেই যবাহ করল, তা এমন গোশতরুপে গন্য যা সে তার পরিবার পরিজনের জন্য আগাম ব্যবস্থা করল। এটা কিছুতেই কুরবানী বলে গন্য নয়। তখন আবূ বুরদা ইবনু নিয়ার (রাঃ) দাঁড়ালেন, আর তিনি (সালাতের) আগেই যবাহ করেছিলেন। তিনি বললেনঃ আমার নিকট একটি বকরীর বাচ্চা আছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাই যবাহ কর। তবে তোমার পরে আর কারোর পক্ষে তা যথেষ্ঠ হবে না।৫১৪৭।
ঈদুল আযহা সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমাকে কুরবানীর দিবসে ঈদ (উদযাপনের) আদেশ করা হয়েছে। আল্লাহ তা এ উম্মতের জন্য নির্ধারণ করেছেন।’ এক ব্যক্তি আরজ করলেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি আমার কাছে শুধু একটি ‘মানীহা’ থাকে (অর্থাৎ যা আমাকে শুধু দুধ পানের জন্য দেওয়া হয়েছে) আমি কি তা কুরবানী করতে পারি? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘না। তবে তুমি চুল, নখ ও মোঁচ কাটবে এবং নাভীর নিচের পশম পরিষ্কার করবে। এটাই আল্লাহর দরবারে তোমার পূর্ণ কুরবানী বলে গণ্য হবে।-সুনানে আবু দাউদ ২/৩৮৫; সুনানে নাসায়ী ২/১৭৯ ‘মানীহা’ হচ্ছে, যে পশু কাউকে দুধ পান করার জন্য বা অন্য কোনো কাজে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়।
আনাস ইবনে মালিক রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’টি সাদা-কালো বর্ণের (বড় শিং বিশিষ্ট) নর দুম্বা কুরবানী করেছেন। আমি দেখেছি, তিনি দুম্বা দু’টির গর্দানে পা রেখে বিসমিল্লাহি ওয়াল্লাহু আকবার বললেন। অতঃপর নিজ হাতে যবেহ করলেন।-সহীহ বুখারী ২/৮৩৪; সহীহ মুসলিম ২/১৫৫-১৫৬
হযরত জাবির রা. থেকে বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদীসে আছে, ‘অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর স্থানে এলেন এবং নিজ হাতে তেষট্টিটি উট নাহর করলেন।-সহীহ মুসলিম ১/৩৯৪; সুনানে আবু দাউদ ১/২৬২।
উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের পক্ষ হতে গরু দ্বারা কুরবানী করেছেন।-সহীহ বুখারী ২/৮৩৪; ১/২৩১ গরু দ্বারা কুরবানীর বিষয়টি হযরত জাবির রা.-এর সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। দেখুন : সহীহ মুসলিম ১/৪২৪ গরু ও উটে সাত শরীক হতে পারে জাবির রা. বলেন, আমরা হজ্বের ইহরাম বেঁধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে বের হলাম। তিনি আমাদেরকে আদেশ করলেন যেন আমরা প্রতিটি উট ও গরুতে সাতজন করে শরীক হয়ে কুরবানী করি।-সহীহ মুসলিম ১/৪২৪।
অন্য বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, (একটি) গরু সাত জনের পক্ষ হতে এবং (একটি) উট সাত জনের পক্ষ হতে (কুরবানী করা যায়)।-সুনানে আবু দাউদ ২/৩৮৮ কুরবানীর পশুর বয়স জাবির রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা (কুরবানীতে) ‘মুছিন্না’ ছাড়া যবেহ করবে না। তবে সংকটের অবস্থায় ছ’মাস বয়সী ভেড়া-দুম্বা যবেহ করতে পারবে।’-সহীহ মুসলিম ২/১৫৫ কুরবানীর উট অন্তত পাঁচ বছর বয়সী হতে হবে। গরু, মহিষ দুই বছর এবং ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা এক বছর হতে হবে। ভেড়া ও দুম্বার ক্ষেত্রে উপরোক্ত হাদীস থেকে জানা গেল যে, তা ছয় মাসের হলেও চলবে। যে ধরনের পশু দ্বারা কুরবানী হয় না হযরত বারা ইবনে আযিব রা. কুরবানীর পশু সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাত দিয়ে ইশারা করেছেন-আমার হাত তো তাঁর হাত থেকে ছোট-এবং বলেছেন, ‘চার ধরনের পশু দ্বারা কুরবানী করা যায় না : যে পশুর এক চোখের দৃষ্টিহীনতা স্পষ্ট, যে পশু অতি রুগ্ন, যে পশু সম্পূর্ণ খোড়া এবং যে পশু এত শীর্ণ যে, তার হাড়ে মগজ নেই।’ লোকেরা বলল, আমরা তো দাঁত, কান ও লেজে ত্রুটিযুক্ত প্রাণী (দ্বারা কুরবানী করা)ও অপছন্দ করি? তিনি বললেন, যা ইচ্ছা অপছন্দ করতে পার। তবে তা অন্যের জন্য হারাম করো না।’-সহীহ ইবনে হিব্বান ৫৯১৯ আরো দেখুন : সুনানে আবু দাউদ ২/৩৮৭; সুনানে নাসায়ী ২/২০২; জামে তিরমিযী ১/২৭৫।
আলী ইবনে আবী তালিব রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের আদেশ করেছেন, আমরা যেন (কুরবানীর পশুর) চোখ ও কান ভালোভাবে লক্ষ করি এবং ওই পশু দ্বারা কুরবানী না করি, যার কানের অগ্রভাগ বা পশ্চাদভাগ কর্তিত। তদ্রূপ যে পশুর কান ফাড়া বা কানে গোলাকার ছিদ্রযুক্ত।-সুনানে আবু দাউদ ২/৩৮৮; সুনানে নাসায়ী ২/১৮০; সুনানে তিরমিযী ১/২৭৫; সুনানে ইবনে মাজাহ পৃ. ২২৭।
আলী ইবনে আবী তালিব রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের শিং-ভাঙ্গা বা কান-কাটা পশু দ্বারা কুরবানী করতে নিষেধ করেছেন।-সুনানে ইবনে মাজাহ পৃ. ২২৭
কুরবানীর সময় বারা ইবনে আযীব রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের উদ্দেশে খুতবা দিলেন। তাতে বললেন, আমাদের এই দিবসে প্রথম কাজ নামাজ আদায় করা, এরপর কুরবানী করা। সুতরাং যে এভাবে করবে তার কাজ আমাদের তরীকা মতো হবে। আর যে আগেই যবেহ করেছে (তার কাজ তরীকা মতো হয়নি) অতএব তা পরিবারের জন্য প্রস্তুতকৃত গোশত, (আল্লাহর জন্য উৎসর্গিত) কুরবানী নয়।-সহীহ বুখারী ২/৮৩২; সহীহ মুসলিম ২/১৫৪; সহীহ ইবনে হিব্বান ৫৯০৭ হাদীসে আছে যে, কোনো কোনো সাহাবী ভুলক্রমে ঈদের নামাযের আগে কুরবানী করেছিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে পুনরায় কুরবানী করার আদেশ করেন। দেখুন : সহীহ বুখারী ২/৮২৭; সহীহ মুসলিম ২/১৫৩; সহীহ ইবনে হিব্বান হাদীস : ৫৯১২, ৫৯১৩; সুনানে ইবনে মাজাহ পৃ. ২২৭; সুনানে নাসায়ী ২/১৭৯।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে কুরবানী করেছেন জাবির রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন দু’টি সাদা-কালো, বড় শিং বিশিষ্ট, খাসি দুম্বা যবেহ করেছেন। যখন তিনি তাদের শায়িত করলেন তখন বললেন, এরপর যবেহ করলেন।-মুসনাদে আহমদ ৩/৩৭৫; সুনানে আবু দাউদ ৩৮৬; সুনানে ইবনে মাজাহ পৃ. ২২৫
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদগাহে যবেহ করতেন এবং নহর করতেন।-সহীহ বুখারী ২/৮৩৩ নিয়ম হল গরু, ছাগল, দুম্বা যবেহ করা হবে এবং উট নহর করা হবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনই করেছেন। হযরত শাদ্দাদ ইবনে আওছ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলা সকল কিছুর উপর অনুগ্রহকে অপরিহার্য করেছেন।
জাবির রা. থেকে বর্ণিত,
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন রাত পর কুরবানীর গোশত খেতে নিষেধ করেছিলেন। এরপর (অবকাশ দিয়ে) বলেন, ‘খাও, পাথেয় হিসাবে সঙ্গে নাও এবং সংরক্ষণ করে রাখ’।-সহীহ মুসলিম ২/১৫৮
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা.-এর এক বর্ণনায় আছে যে, ‘খাও, সংরক্ষণ কর এবং ছদকা কর।’-সহীহ মুসলিম ২/১৫৮ কুরবানীর পশুর গোশত-চামড়া বিক্রি করা যায় না আলী ইবনে আবী তালিব রা. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তাঁর (কুরবানীর উটের) আনুষঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করতে বলেছিলেন। তিনি কুরবানীর পশুর গোশত, চামড়া ও আচ্ছাদনের কাপড় ছদকা করতে আদেশ করেন এবং এর কোনো অংশ কসাইকে দিতে নিষেধ করেন। তিনি বলেছেন, আমরা তাকে (তার পারিশ্রমিক) নিজের পক্ষ থেকে দিব।-সহীহ বুখারী ১/২৩২; সহীহ মুসলিম ১/৪২৩-৪২ ৪
মুতাররাফ বারা (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি সালাতের পর যবাহ করল তার কুরবানি পূর্ন হলো এবং সে মুসলিমদের নীতি পালন করলো।
মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান: দুনিয়া সৃষ্টির পর থেকে সকল নবীর উম্মতকেই কুরবানী করতে হয়েছে। আল্লাহতায়ালার এ বিধান মানব জাতির সৃষ্টি লগ্ন থেকেই কার্যকর হয়ে আসছে। মানব সভ্যতার সুদীর্ঘ ইতিহাস এটাই সাক্ষ্য দেয় যে, পৃথিবীর সব জাতি ও সম্প্রদায় কোননাকোনভাবে আল্লাহর দরবারে নিজেদের প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করে আসছে । এটাই মানুষের চিরন্তন স্বভাব বা ফিতরাত। এ ফিতরাতের স্বীকৃতি প্রদান করে মহান আল্লাহ তা’য়ালা সুস্পষ্ট ভাবে ঘোষণা করেছেন —
وَلِـكُلِّ اُمَّةٍ جَعَـلْـنَا مَنْسَكًا لِّـيَـذْكُرُوْا اسْمَ اللهِ عَلى مَـا رَزَقَـهُمْ مِنْ بَـهِيـْمَةِ الْاَنْـعَـامِ
“আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে কুরবানীর এক বিশেষ রীতি পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছি, যেন তারা ওসব পশুর উপর আল্লাহর নাম নিতে পারে যে সব আল্লাহ তাদেরকে দান করেছেন”। (সূরা আল হজ্জ-৩৪)
মানব ইতিহাসের সর্বপ্রথম কুরবানী হযরত আদম আ. এর দুই পুত্র হাবিল ও কাবিলের কুরবানী। এ ঘটনাটি বিশুদ্ধ ও শক্তিশালী সনদ সহ বর্ণিত হয়েছে। ইবনে কাসীর একে ওলামায়ে মোতাকাদ্দেমীন ও ওলামায়ে মোতায়াখ্খেরীনের সর্ব সম্মত উক্তি বলে আখ্যা দিয়েছেন। ঘটনাটি এই : যখন আদম ও হাওয়া আ. পৃথিবীতে আগমন করেন এবং সন্তান প্রজনন ও বংশ বিস্তার আরম্ভ হয়, তখন প্রতি গর্ভ থেকে একটি পুত্র ও একটি কন্যা এরূপ যমজ সন্তান জন্ম গ্রহণ করত। তখন এক শ্রেণীর ভাই বোন ছাড়া হযরত আদমের আর কোন সন্তান ছিলনা। অথচ ভাই বোন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে না। তাই মহান আল্লাহ উপস্থিত প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে আদম আ. এর শরীয়তে বিশেষ ভাবে এ নির্দেশ জারি করেন যে, একই গর্ভ থেকে যে যমজ পুত্র ও কন্যা জন্ম গ্রহণ করবে, তারা পরস্পর সহোদর ভাই-বোন গণ্য হবে। সুতরাং তাদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক হারাম হবে। কিন্তু পরবর্তী গর্ভ থেকে জন্ম গ্রহণকারী পুত্রের জন্য প্রথম গর্ভ থেকে কন্যা সহোদরা বোন গণ্য হবে না। তাই তাদের পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া বৈধ হবে। কিন্তু ঘটনাক্রমে কাবিলের সহজাত সহোদরা বোনটি ছিল খুবই সুশ্রী-সুন্দরী তার নাম ছিল ‘আকলিমা’ আর হাবিলের সহজাত বোনটি ছিল তুলনামূলক কম সুন্দরী তার নাম ছিল ‘গাজা’। বিবাহের সময়ে হলে নিয়মানুযায়ী হাবিলের সহজাত অসুন্দরী কন্যা কাবিলের ভাগে পড়ল। এতে কাবিল অসন্তুষ্ট হয়ে হাবিলের শত্রু হয়ে গেল। সে জেদ ধরল যে, আমার সহজাত বোনকেই আমার সঙ্গে বিবাহ দিতে হবে। হযরত আদম আ. তাঁর শরীয়তের আইনের পরিপ্রেক্ষিতে কাবিলের আবদার প্রত্যাখ্যান করলেন। অতঃপর তিনি হাবিল ও কাবিলের মতভেদ দূর করার উদ্দেশ্যে বললেন, তোমরা উভয়েই আল্লাহর জন্য নিজ নিজ কুরবানী পেশ কর। যার কুরবানী গৃহিত হবে, সে-ই উক্ত কন্যার পানি গ্রহণ করবে। হযরত আদম আ. এর নিশ্চিত বিশ্বাস ছিল যে, যে সত্য পথে আছে, তার কুরবানীই গৃহিত হবে। তৎকালে কুরবানী গৃহিত হওয়ার একটি সুস্পষ্ট নিদর্শন ছিল এই যে, আকাশ থেকে একটি অগ্নি শিখা এসে কুরবানীকে ভস্মীভূত করে আবার অন্তর্হিত হয়ে যেত। যেমন মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন ঃ بِـقُـرْبَـانٍ تَـأكُـلُـهُ الـنَّـارُ “ঐ কুরবানী যাকে আগুন গ্রাস করে নিবে”। (সূরা আলে ইমরান-১৮৩) আর যে কুরবানীকে অগ্নি ভস্মীভূত করত না, সেটাকে প্রত্যাখ্যাত গণ্য করা হত। কুরবানীর এ তরীকা খাতামুল আম্বিয়া হযরত মুহাম্মদ সা. এর যুগ পর্যন্ত সকল পূর্বেকার নবীর যুগে বলবৎ ছিল। হাবিল ভেড়া, দুম্মা ইত্যাদি পশু পালন করত। সে একটি উৎকৃষ্ট দুম্বা কুরবানী করল। কাবিল কৃষি কাজ করত। সে কিছু শস্য, গম ইত্যাদি কুরবানীর জন্যে পেশ করল। (তাফসীরে ইবনে কাসীর, সূত্র হযরত ইবনে আব্বাস রা. কর্তৃক বর্ণিত) অতঃপর নিয়মানুযায়ী আকাশ থেকে অগ্নি শিখা অবতরণ করে হাবিলের কুরবানীটি ভস্মীভূত করে দিল এবং কাবিলের কুরবানী যেমন ছিল তেমনি পড়ে রইল। এ অকৃতকার্যতায় কাবিলের দুঃখ ও ক্ষোভ বেড়ে গেল। সে আত্মসংবরণ করতে পারল না। তাই সে হাবিলকে হত্যা করার সংকল্প করল এবং এক পর্যায়ে তাকে হত্যা করে ফেলল।
মাআ’রেফুল কুরআন বাংলা সংস্করণ-৩২৪ পৃষ্ঠা) হাবিল ও কাবিলের কুরবানীর ঘটনা পবিত্র কুরআনে এ ভাবে বর্ণিত হয়েছে:
وَاتْلُ عَلَيْـهِمْ نَبَاَ ابْـنَـىْ ادَمَ بِـالْـحَـقِّ- اِذْ قَـرَّبَـا قُـرْبَانًا فَـتُـقُـبِّـلَ مِنْ اَحَدِهِمَا وَلَمْ يُـتَـقَبَّلْ مِنَ الْاخَرِ- قَالَ لَاَقْتُلَـنَّكَ- قَالَ اِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللهُ مِنَ الْمُتَّقِيْنَ- لَئِنْ بَسَطْتَّ اِلَىَّ يَدَكَ لِتَقْتُلَنِىْ مَا اَنَا بِبَاسِطٍ يَّدِىَ اِلَيْكَ لِاَ قْتُلَكَ- اِنِّىْ اَخَافُ اللهَ رَبَّ الْعلَمِيْنَ- اِنِّىْ اُرِيْدُ اَنْ تَبُـوْاَ بِـاِثْمِىْ وَاِثْمِكَ فَتَكُـوْنَ مِن اَصْحبِ النَـارِ- وَذلِكَ جَزؤُ الظّلِمِيْنَ- فَطَوَّعَتْ لَـهُ نَـفْسُه قَـتْلَ اَخِـيْـهِ فَقَـتَـلَهُ فَاَصْبَحَ مِنَ الْـخسِرِيْنَ- فَبَـعَـثَ اللهُ غُـرَابًا يَبْحَثُ فِى الْاَرْضِ لِيُرِيَهُ كَـيْـفَ يُـوَارِىْ سَـوْءَةَ اَخِيْهِ- قَالَ يـوَ يْلَتـى اَعَجَزْتُ اَنْ اَكُوْنَ مِـثْلَ هـذَا الْغُرَابِ فَاُوَارِىَ سَـوْءَةً– فَاَصْبَحَ مِنَ النّدِمِيْنَ
“আপনি তাদেরকে আদমের দু’পুত্রের ঘটনাটি ঠিকভাবে শুনিয়ে দিন। (তা হচ্ছে এই যে,) যখন তারা উভয়ে কুরবানী পেশ করলো, তখন তাদের একজনের কুরবানী গৃহিত হল আর অপর জনের কুরবানী গৃহিত হলোনা। তখন সে ভাইকে বলল- অবশ্যই আমি তোমাকে হত্যা করব। সে উত্তরে বলল আল্লাহ তো মুত্তাকীদের কুরবানীই কবুল করেন। যদি তুমি আমাকে হত্যা করতে আমার দিকে হস্ত প্রসারিত কর, তবে আমি তোমাকে হত্যা করতে তোমার দিকে হস্ত প্রসারিত করব না। নিশ্চয়ই আমি বিশ্ব জগতের পালন কর্তা আল্লাহকে ভয় করি। আমি চাই যে, আমার পাপ ও তোমার পাপ তুমি নিজের মাথায় চাপিয়ে নাও। অত:পর তুমি জাহান্নামীদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাও। এটাই অত্যাচারীদের শাস্তি। অতঃপর তার অন্তর তাকে ভ্রাতৃ হত্যায় উদ্বুদ্ধ করল। অনন্তর সে তাকে হত্যা করল। ফলে সে ক্ষতি গ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেল। আল্লাহ এক কাক প্রেরণ করলেন। সে মাটি খনন করছিল যাতে তাকে শিক্ষা দেয় যে, আপন ভ্রাতার মৃতদেহ সে কিভাবে সমাহিত করবে। সে বললো, আফসোস! আমি কি এ কাকের সমতুল্যও হতে পারলাম না যে, আপন ভ্রাতার মৃতদেহ সমাহিত করি! অত:পর সে অনুতাপ করতে লাগল”।(সূরা আল মায়িদাহ, ২৭-৩১ আয়াত)। উল্লেখ্য যে, হযরত আদম আ. এর পর সকল উম্মতের মধ্যেই অবিচ্ছন্ন ভাবে কুরবানীর ধারাবাহিকতা চলতে থাকে।
অত;পর আপনি কিছু লোকের অন্তর তাদের প্রতি আকৃষ্ট করুন এবং তাদের ফল ফলাদি দ্বারা রুজি দান করুন। আশা করি তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে”। (সূরা আল ইবরাহীম -৩৭)
উপরোল্লিখিত পরক্ষিাগুলির কঠিন মঞ্জিল অতিক্রম করার পর হযরত ইবরাহীম আ. কে স্বপ্নের মাধ্যমে সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন করা হয়। যা বিগত পরীক্ষাগুলির চেয়ে ও অধিক কঠিন, হৃদয় বিদারক ও আল্লাহ প্রেমের কঠিন পরীক্ষা। কোন কোন বর্ণনা মতে জানা যায় যে, এই স্বপ্ন তিনি পরপর তিন রাত্রি দেখেন। স্বপ্নে তিনি একমাত্র প্রিয় পুত্র ইসমাঈল কে কুরবানী করতে আদিষ্ট হন। প্রাণ প্রিয় পুত্রকে কুরবানী করার নির্দেশ তাঁকে এমন সময় দেয়া হয়েছিল, যখন অনেক দোয়া কামনা করে পাওয়া সন্তানকে লালন পালন করার পর পুত্র পিতার সাথে চলাফেরা করতে পারে এবং তাঁকে সাহায্য করার যোগ্য হয়েছে। তাফসীরবিদগণ লিখেছেন: এ সময় হযরত ইসমাঈলের বয়স ছিল তের বছর। কেউ কেউ বলেছেন তিনি তখন বয়প্রাপ্ত হয়ে গিয়েছিলেন (তাফরীরে মাযহারী)। তবে তাফসীরে রুহুল বয়ানে আছে ৯ বছরের কথা। এ কথা অকাট্যভাবে প্রমাণিত সত্য যে, নবী রাসূলগণের স্বপ্নও ওহীর অর্ন্তভূক্ত। তাই এ স্বপ্নের অর্থ ছিল এই যে, আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে হযরত ইবরাহীম আ. এর প্রতি একমাত্র পুত্রকে যবেহ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে এ হুকুমটি স্বপ্নের মাধ্যমে দেয়ার কারণ হলো হযরত ইবরাহীম আ. এর আনুগত্যের বিষয়টি পূর্ণমাত্রায় প্রমাণিত করা। হযরত ইবরাহীম আ. মহান প্রতি পালকের নির্দেশ পালনের নিমিত্তে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করলেন। কিন্তু এ পরীক্ষাটি যেহেতু ইবরাহীম আ. এর ব্যক্তিত্বের সাথে সাথে তার পুত্রও সংশ্লিষ্ট ছিলেন তাই তিনি তার পুত্র ইসমাঈলকে লক্ষ্য করে বললেন : قَالَ يبُنَىَّ اِنِّىْ اَرى فِى الْمَنَـامِ اَنِّى اَذْ بَـحُـكَ فَـانْـظُـرْ مَـاذَا تَـرى “হে প্রাণ প্রিয় পুত্র আমার! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে যবেহ করছি। সুতরাং তুমি চিন্তা ভাবনা করে দেখ এবং এ স্বপ্নের ব্যাপারে তোমার অভিমত কি তা বল”( সূরা আস-সাফফাত-১০২)। যেমন বাপ, তেমন বেটা। পুত্রও ছিলেন যেন হযরত ইবরাহীম আ. এর ছাঁচে গড়া, কেননা তিনি ও ভাবী নবী। তাই তৎক্ষণাৎ আত্মসর্ম্পনে মস্তক অবনত করে পুত্র জবাবে বললেন : قَالَ يـاَبَتِ افْـعَـلْ مَا تُـؤْمَرُ- سَـتَـجِـدُ نِىْ اِنْ شَـاءَ اللهُ مِنَ الـصّـبِـرِيْـنَ “হে আমার পিতাজী! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে আপনি তাই করুন। ইনশা আল্লাহ আপনি আমাকে ধৈর্যশীলদের মধ্যে পাবেন” (সূরা আস সাফ্ফাত-১০২)।
আমরা বাংলাদেশের বেশীরভাগ মুসলমান পশু জবেহ করি ঠিকই কিন্তু মনের পশুত্ব কোরবানি করতে পারি না।
যে মানুষ প্রতিদিন হত্যা করে অন্য মানুষের আশা ভরসা স্বপ্ন ভবিষ্যৎ সেই মানুষ আবার পশু কোরবানি দেয়। কি অদ্ভুত এবাদত বাংলাদেশের মানুষের।
একটা পশুর গড়ে দাম ১ লক্ষ টাকা। সেই টাকা খরচ ক’রে কোরবানি দেয় চুরির টাকা দিয়ে। দখলবাজির সম্পদ দিয়ে।
লোক দেখানো কোরবানি।অথচ কত মানুষ আধাপেট খেয়ে অবহেলায় বেঁচে থাকে।কোরবানিদাতারা ব্যাংকে টাকা জমিয়ে রাখে। মানুষের মনে কষ্ট দিয়ে এবাদতের নামে নাটক রচনা করে।
মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান: পবিত্র কোরআন মাজীদের ১১৪ টি সুরার কোরআনে অবস্থান-বাংলা উচ্চারণ- নাম (আরবি) -বাংলায় নামের অর্থ- আয়াত সংখ্যা অবতীর্ণের স্থান – অবতীর্ণের অনুক্রমঃ——
১ . আল ফাতিহা الفاتحة সূচনা ৭ মক্কা ০০৫
২. আল বাকারা البقرة বকনা-বাছুর ২৮৬ মদীনা ০৮৭
৩ .আল ইমরান آل عمران ইমরানের পরিবার ২০০ মদীনা ০৮৯
৪ .আন নিসা النّساء মহিলা ১৭৬ মদীনা ০৯২
৫. আল মায়িদাহ المآئدة খাদ্য পরিবেশিত টেবিল ১২০ মদীনা ১১২
৬. আল আনআম الانعام গৃৃহপালিত পশু ১৬৫ মক্কা ০৫৫
৭ .আল আরাফ الأعراف উচু স্থানসমূহ ২০৬ মক্কা ০৩৯
৮ .আল আনফাল الأنفال যুদ্ধে-লব্ধ ধনসম্পদ ৭৫ মদীনা ০৮৮
৯ .আত-তাওবাহ্ التوبة অনুশোচনা ১২৯ মদীনা ১১৩
১০. ইউনুস يونس নবী ইউনুস ১০৯ মক্কা ০৫১
১১. হুদ هود নবী হুদ ১২৩ মক্কা ০৫২
১২. ইউসুফ يوسف নবী ইউসুফ ১১১ মক্কা ০৫৩
১৩. আর-রাদ الرّعد বজ্রনাদ ৪৩ মদীনা ০৯৬
১৪. ইব্রাহীম إبراهيم নবী ইব্রাহিম ৫২ মদীনা ০৭২
১৫. সূরা আল হিজর الحجر পাথুরে পাহাড় ৯৯ মক্কা ০৫৪
১৬ আন নাহল النّحل মৌমাছি ১২৮ মক্কা ০৭০
১৭ বনী-ইসরাঈল الإسرا ইসরায়েলের সন্তানগণ ১১১ মক্কা ০৫০
১৮ আল কাহফ الكهف গুহা ১১০ মক্কা ০৬৯
১৯ মারইয়াম مريم মারিয়াম (নবী ঈসার মা) ৯৮ মক্কা ০৪৪
২০ ত্বোয়া-হা طه ত্বোয়া-হা ১৩৫ মক্কা ০৪৫
২১ আল আম্বিয়া الأنبياء নবীগণ ১১২ মদীনা ০৭৩
২২ আল হাজ্জ্ব الحجّ হাজ্জ ৭৮ মদীনা ১০৩
২৩ আল মু’মিনূন المؤمنون বিশ্বাসীগণ ১১৮ মদীনা ০৭৪
২৪ আন নূর النّور আলো,জ্যোতি ৬৪ মদীনা ১০২
২৫. আল ফুরকান الفرقان সত্য মিথ্যার পার্থক্য নির্ধারণকারী গ্রন্থ ৭৭ মক্কা ০৪২
২৬. আশ শুআরা الشّعراء কবিগণ ২২৭ মক্কা ০৪৭
২৭. আন নম্ল النّمل পিপীলিকা ৯৩ মক্কা ০৪৮
২৮. আল কাসাস القصص ঘটনা,কাহিনী ৮৮ মক্কা ০৪৯
২৯. আল আনকাবূত العنكبوت মাকড়সা ৬৯ মদীনা ০৮৫
৩০. আর রুম الرّوم রোমান জাতি ৬০ মদীনা ০৮৪
৩১. লোক্মান لقمان একজন জ্ঞানী ব্যক্তি ৩৪ মক্কা ০৫৭
৩২. আস সেজদাহ্ السّجدة সিজদাহ ৩০ মদীনা ০৭৫
৩৩. আল আহ্যাব الْأحزاب জোট ৭৩ মদীনা ০৯০
৩৪. সাবা سبا রানী সাবা ৫৪ মক্কা ০৫৮
৩৫. ফাতির فاطر আদি স্রষ্টা ৪৫ মক্কা ০৪৩
৩৬. ইয়াসীন يس ইয়াসীন ৮৩ মক্কা ০৪১
৩৭. আস ছাফ্ফাত الصّافات সারিবদ্ধভাবে দাড়ানো ১৮২ মক্কা ০৫৬
৩৮. ছোয়াদ ص আরবি বর্ণ ৮৮ মক্কা ০৩৮
৩৯. আয্-যুমার الزّمر দল-বদ্ধ জনতা ৭৫ মক্কা ০৫৯
৪০. আল মু’মিন غافر বিশ্বাসী ৮৫ মক্কা ০৬০
৪১. হা-মীম সেজদাহ্ فصّلت সুস্পষ্ট বিবরণ ৫৪ মক্কা ০৬১
৪২. আশ্-শূরা الشّورى পরামর্শ ৫৩ মক্কা ০৬২
৪৩. আয্-যুখরুফ الزّخرف সোনাদানা ৮৯ মক্কা ০৬৩
৪৪. আদ-দোখান الدّخان ধোঁয়া ৫৯ মক্কা ০৬৪
৪৫. আল জাসিয়াহ الجاثية নতজানু ৩৭ মক্কা ০৬৫
৪৬. আল আহ্ক্বাফ الأحقاف বালুর পাহাড় ৩৫ মক্কা ০৬৬
৪৭. মুহাম্মদ محمّد নবী মুহাম্মদ ৩৮ মদীনা ০৯৫
৪৮. আল ফাত্হ الفتح বিজয় (মক্কা বিজয়) ২৯ মদীনা ১১১
৪৯. আল হুজুরাত الحجرات বাসগৃহসমূূহ ১৮ মদীনা ১০৬
৫০. ক্বাফ ق আরবি বর্ণ ক্বাফ ৪৫ মক্কা ০৩৪
৫১. আয-যারিয়াত الذّاريات বিক্ষেপকারী বাতাস ৬০ মক্কা ০৬৭
৫২. আত্ব তূর الطّور পাহাড় ৪৯ মদীনা ০৭৬
৫৩. আন-নাজম النّجْم তারা ৬২ মক্কা ০২৩
৫৪. আল ক্বামার القمر চন্দ্র ৫৫ মক্কা ০৩৭
৫৫. আর রাহমান الرّحْمن অনন্ত করুণাময় ৭৮ মদীনা ০৯৭
৫৬. আল-ওয়াকিয়াহ الواقعة নিশ্চিত ঘটনা ৯৬ মক্কা ০৪৬
৫৭. আল-হাদীদ الحديد লোহা ২৯ মদীনা ০৯৪
৫৮ আল-মুজাদালাহ المجادلة অনুযোগকারিণী ২২ মদীনা ১০৫
৫৯ আল-হাশর الحشْر সমাবেশ ২৪ মদীনা ১০১
৬০ আল-মুমতাহিনাহ الممتحنة নারী, যাকে পরীক্ষা করা হবে ১৩ মদীনা ০৯১
৬১ আস-সাফ الصّفّ সারবন্দী সৈন্যদল ১৪ মদীনা ১০৯
৬২ আল-জুমুআ الجمعة সম্মেলন/শুক্রবার ১১ মদীনা ১১০
৬৩ আল-মুনাফিকুন المنافقون কপট বিশ্বাসীগণ ১১ মদীনা ১০৪
৬৪ আত-তাগাবুন التّغابن মোহ অপসারণ ১৮ মদীনা ১০৮
৬৫ আত-তালাক الطّلاق তালাক,বন্ধনমুক্তি ১২ মদীনা ০৯৯
৬৬ আত-তাহরীম التّحريم নিষিদ্ধকরণ ১২ মদীনা ১০৭
৬৭ আল-মুলক الملك সার্বভৌম কর্তৃত্ব ৩০ মক্কা ০৭৭
৬৮ আল-কলম القلم কলম ৫২ মক্কা ০০২
৬৯ আল-হাক্কাহ الحآقّة নিশ্চিত সত্য ৫২ মক্কা ০৭৮
৭০ আল-মাআরিজ المعارج উন্নয়নের সোপান ৪৪ মক্কা ০৭৯
৭১ নূহ نوح নবী নূহ ২৮ মক্কা ০৭১
৭২ আল জ্বিন الجنّ জ্বিন সম্প্রদায় ২৮ মক্কা ০৪০
৭৩ আল মুজাম্মিল المزّمّل বস্ত্র আচ্ছাদনকারী ২০ মক্কা ০০৩
৭৪ আল মুদ্দাস্সির المدّشّر পোশাক পরিহিত ৫৬ মক্কা ০০৪
৭৫ আল-ক্বিয়ামাহ القيامة পুনরুথান ৪০ মক্কা ০৩১
৭৬ আদ-দাহর الدَّهْرِ মানুষ ৩১ মদীনা ০৯৮
৭৭ আল-মুরসালাত المرسلت প্রেরিত পুরুষবৃন্দ ৫০ মক্কা ০৩৩
৭৮ আন নাবা النّبا মহাসংবাদ ৪০ মক্কা ০৮০
৭৯ আন নাযিয়াত النّزعت প্রচেষ্টাকারী ৪৬ মক্কা ০৮১
৮০ আবাসা عبس তিনি ভ্রুকুটি করলেন ৪২ মক্কা ০২৪
৮১ আত-তাকভীর التّكوير অন্ধকারাচ্ছন্ন ২৯ মক্কা ০০৭
৮২ আল-ইনফিতার الانفطار বিদীর্ণ করা ১৯ মক্কা ০৮২
৮৩ আত মুত্বাফ্ফিফীন المطفّفين প্রতারকগণ ৩৬ মক্কা ০৮৬
৮৪ আল ইনশিকাক الانشقاق খন্ড-বিখন্ড করণ ২৫ মক্কা ০৮৩
৮৫ আল-বুরুজ البروج নক্ষত্রপুঞ্জ ২২ মক্কা ০২৭
৮৬ আত-তারিক্ব الطّارق রাতের আগন্তুক ১৭ মক্কা ০৩৬
৮৭ আল আ’লা الأعلى সর্বোর্ধ্ব ১৯ মক্কা ০০৮
৮৮ আল গাশিয়াহ্ الغاشية বিহ্বলকর ঘটনা ২৬ মক্কা ০৬৮
৮৯ আল ফাজ্র الفجر ভোরবেলা ৩০ মক্কা ০১০
৯০ আল বালাদ البلد নগর ২০ মক্কা ০৩৫
৯১ আশ-শাম্স الشّمس সূর্য্য ১৫ মক্কা ০২৬
৯২ আল লাইল الليل রাত্রি ২১ মক্কা ০০৯
৯৩ আদ-দুহা الضحى পূর্বাহ্নের সূর্যকিরণ ১১ মক্কা ০১১
৯৪ আল ইনশিরাহ الشرح বক্ষ প্রশস্তকরণ ৮ মক্কা ০১২
৯৫ ত্বীন التين ডুমুর ৮ মক্কা ০২৮
৯৬ আলাক্ব العلق রক্তপিন্ড ১৯ মক্কা ০০১
৯৭ ক্বদর القدر পরিমাণ ৫ মক্কা ০২৫
৯৮ বাইয়্যিনাহ البينة সুস্পষ্ট প্রমাণ ৮ মদীনা ১০০
৯৯ যিলযাল الزلزلة ভূমিকম্প ৮ মদীনা ০৯৩
১০০ আল-আদিয়াত العاديات অভিযানকারী ১১ মক্কা ০১৪
১০১. ক্বারিয়াহ القارعة মহাসংকট ১১ মক্কা ০৩০
১০২. তাকাসুর التكاثر প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা ৮ মক্কা ০১৬
১০৩. আছর العصر অপরাহ্ন ৩ মক্কা ০১৩
১০৪. হুমাযাহ الهمزة পরনিন্দাকারী ৯ মক্কা ০৩২
১০৫. ফীল الفيل হাতি ৫ মক্কা ০১৯
১০৬. কুরাইশ قريش কুরাইশ গোত্র ৪ মক্কা ০২৯
১০৭. মাউন الماعون সাহায্য-সহায়তা ৭ মক্কা ০১৭
১০৮. কাওসার الكوثر প্রাচুর্য ৩ মক্কা ০১৫
১০৯. কাফিরুন الكافرون অস্বীকারকারীগণ ৬ মক্কা ০১৮
১১০. নাসর النصر বিজয়,সাহায্য ৩ মদীনা ১১৪
১১১. লাহাব المسد জ্বলন্ত অঙ্গার ৫ মক্কা ০০৬
১১২. আল-ইখলাস الإخلاص একনিষ্ঠতা ৪ মক্কা ০২২
১১৩. আল-ফালাক الفلق নিশিভোর ৫ মদীনা ০২০
১১৪. আন-নাস الناس মানবজাতি ৬ মক্কা